নয়া দিল্লি: গত ১০ মার্চ নন্দীগ্রামে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) আহত হওয়ার ঘটনায় হামলার অভিযোগ এনেছে তৃণমূল (TMC)। গত কাল, বৃহস্পতিবারই রাজ্যের নির্বাচন কমিশনে (Election Commission) গিয়ে নালিশ জানায় তৃণমূলের (TMC) একটি প্রতিনিধি দল। কিন্তু তারপর তৃণমূলকে কড়া চিঠি দেয় কমিশন। এবার সেই অভিযোগ জানাতেই দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হচ্ছেন তৃণমূলের একাধিক সাংসদ (TMC MP)।
শুক্রবার তৃণমূলের পার্লামেন্টারি কমিটি দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনে যাবে। ৬ সাংসদের এক প্রতিনিধি দল এ দিন যাচ্ছে দিল্লিতে। মমতার আহত হওয়ার ঘটনা আসলে ষড়যন্ত্র, তা প্রমাণ করতেই নির্বাচন কমিশনে যাচ্ছেন তাঁরা। ঠিক দুপুর সাড়ে ১২ টায় সেখানে পৌঁছবেন তাঁরা। দিল্লির মুখ্য নির্বাচন আধিকারিকের দফতরে যাবেন সৌগত রায়, বারাসাতের সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার, জয়নগরের প্রতিমা মণ্ডল, বীরভূমের অভিনেত্রী সাংসদ শতাব্দী রায়, রাজ্যসভার সাংসদ শান্তনু সেন।
বৃহস্পতিবার কমিশনের দ্বারস্থ হয় তৃণমূল। প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে ছিলেন দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বুধবারের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে অভিযোগ জানায় এই প্রতিনিধি দল। কমিশন থেকে বেরিয়ে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে পার্থ বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর উপর যে আঘাত হানা হবে, তার পূর্বাভাস ছিল।” তাঁর দাবি, বিজেপি সাংসদদের পোস্টে ও বক্তব্য থেকেই বোঝা যাচ্ছিল যে এরকম কিছু ঘটবে। মুখ্যমন্ত্রীর যথেষ্ট নিরাপত্তা ছিল না বলেও অভিযোগ জানিয়েছেন তিনি। সোশ্যাল মিডিয়ায় কোন পোস্টকে ঘিরে এই দাবি করছে তৃণমূল, সেই প্রমাণও এবার কমিশনের হাতে তুলে দিতে পারে তৃণমূলের পার্লামেন্টারি কমিটি।
বৃহস্পতিবার সংবিধানের ৩২৪ নম্বর ধারার কথা উল্লেখ করে শাসক দলকে রীতিমতো তুলোধনা করে কমিশন। তৃণমূলের তরফে যে চিঠি কমিশনকে দেওয়া হয়েছিল সেখানে যে ভাষার ব্যবহার করা হয়েছে তা নিয়েও তীব্র আপত্তি জানানো হয়। নন্দীগ্রামের ঘটনার ২৪ ঘণ্টা আগেই রাজ্যের ডিজি বীরেন্দ্রকে অপসারণ করা নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেছিল শাসকদল। তার জবাবে লেখা হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের ডিজিকে সরিয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনও আলাদা বুদ্ধি কাজ করেনি। পশ্চিমবঙ্গের ডিজি সরানোর সিদ্ধান্ত পুরোপুরি রাজ্যে আসা বিশেষ পর্যবেক্ষক অজয় নায়েক এবং বিবেক দুবের রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে নেওয়া হয়েছে।
এ দিকে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে নন্দীগ্রামে ঠিক কী ঘটেছিল, তার তদন্তের দাবি জানিয়ে কমিশনে গিয়েছিল বিজেপিও। মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের অভিযোগ জানান বিজেপি প্রতিনিধি দল।
নন্দীগ্রামে বিরুলিয়ার মন্দিরে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বিকেলে সেখান থেকে বেরনোর সময়েই পায়ে আঘাত লাগে তাঁর। অসুস্থ মমতাকে কোলপাঁজা করে নিয়ে যাওয়া হয় গাড়ির পিছনের সিটে। সেখান থেকে গ্রিন করিডর করে সোজা কলকাতায় আসে মুখ্যমন্ত্রীর কনভয়। আপাতত এসএসকেএমে চিকিৎসাধীন তিনি।