‘দলে থেকে কাজ করতে পারছিলাম না,’ আরও এক নেতার তৃণমূল ত্যাগ
দলের বিরুদ্ধে তোপ দেগে তৃণমূল ছাড়লেন আরও এক নেতা, কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার ইঙ্গিত
মুর্শিদাবাদ: দিন কয়েক আগে অধীর চৌধুরীর (Adhir Choudhury) হাত ধরে ফের কংগ্রেসে (Congress) যোগ দিয়েছেন তৃণমূল বহিষ্কৃত মোশারফ হোসেন (Mosharaf Hossain)। তাঁর পুরনো দলে ফিরে গিয়ে তাঁর হঁশিয়ারি ছিল ফের মুর্শিদেবাদে কংগ্রেসই ক্ষমতা দখল করবে। ঘোষণার ৬ দিন বাদেই আরও এক তৃণমূল নেতা (TMC Leader)’র পদত্যাগ। এবার দল ছাড়লেন মুর্শিদাবাদ সুতি-২ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি মাসাদুল হক (Masadul Hoque) ওরফে পিকু মাস্টার। খুব তাড়াতাড়ি তিনিও কংগ্রেসে যোগ দিচ্ছেন বলে গুঞ্জন।
বুধবার বাড়িতেই সাংবাদিক বৈঠক করে পিকু মাস্টারের ঘোষণা, “২০১৫ সাল থেকে তৃণমূলে যোগ দিই শুভেন্দু অধিকারীর হাত ধরে। কিন্তু লকডাউনের পর দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে আমার দূরত্ব তৈরি হয়েছে।” তাঁর কথায়, “শুভেন্দু অধিকারীকে বললে আমাদের সমস্যার সমাধান হত। কিন্তু এখন সমস্যার কথা জানালেও জেলা নেতৃত্ব কোনও সুষ্ঠু সমাধান করেনা।” পেশায় শিক্ষক পিকু মাস্টারের দাবি, তিনি মানুষের জন্য রাজনীতি করেন। কিন্তু তৃণমূলে থেকে কোনও কাজ করতে পারছেন না। এমনকী দলীয় সভাতেও তাঁদের ডাকা হয়না। তাই এদিনই দল ছাড়ছেন বলে ঘোষণা করেন তিনি।
একসময় দলীয় পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব নিয়ে মুর্শিদাবাদে অধীর-গড়ে একের পর এক কংগ্রেস নেতাকে তৃণমূলে শামিল করেছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। কিন্তু তাঁর বিজেপিতে যোগদানের কয়েক মাস আগে থেকেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ইস্যু প্রবল মাথাব্যথা হয়ে দাঁড়ায় ঘাসফুল শিবিরের। এদিন দলত্যাগ করে সে কথাই উঠে এসেছে পিকু মাস্টারের গলায়। তাঁর দাবি, ‘দাদা’ শুভেন্দু অধিকারীর হাত ধরেই তাঁর তৃণমূলে আসা। কিন্তু তিনি জেলার পর্যবেক্ষক এবং পরে দল ছাড়ার পরে কোনও সমস্যা মেটাতেই উদ্যোগ নেন না তৃণমূল নেতৃত্ব।
আরও পড়ুন: তৃণমূলের ঝাঁটা, বিজেপির ইট-পাটকেল, ধুন্ধুমার লেবুতলায়
তাহলে এবার কি দাদার হাত ধরে বিজেপিতে যাবেন? নাকি ফিরে যাবেন পুরনো দল কংগ্রেসেই? মাসাদুল বলছেন, দাদা শুভেন্দু বিজেপিতে গিয়েছেন বলে আমিও যে সেখানে যাব এমন কোনও কথা নেই। কোথায় যাব সেটা পরে ঠিক করব। যদিও মুর্শিদাবাদের রাজনৈতিক মহল বলছে পিকু মাস্টারের ‘ঘর ওয়াপসি’ স্রেফ সময়ের অপেক্ষা।
এদিকে মাসাদুলের দলত্যাগ নিয়ে মুর্শিদাবাদ তৃণমূল জেলা সভাপতি আবু তাহের খান বলছেন, নির্বাচন আসছে। তাই নিজেদের ওজন বাড়াতে চাইছেন এই নেতারা। এঁরা সবাই ভোটে লড়তে চান। কিন্তু সবাইকে তো টিকিট দেওয়া সম্ভব নয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আশীর্বাদ ছাড়া ওঁদের জেতার ক্ষমতাও নেই। তিনি যোগ করেন, জেলা পরিষদের সভাধিপতি মোশারফও দলবদল করেছেন প্রার্থী হওয়ার আশায়। কিন্তু একুশের নির্বাচনে এঁদের সবার জামানত জব্দ করব।