কলকাতা: হাওড়াকে বাদ দিয়েই সোমবার পুরনিগমের ভোট ঘোষণা করল রাজ্য নির্বাচন কমিশন। ২২ জানুয়ারি ভোট হবে শিলিগুড়ি, বিধাননগর, আসানসোল, চন্দননগরে। এই হাওড়ার ভোট নিয়েই আপাতত সরগরম রাজ্য রাজনীতি। এদিন দুপুরে পুরনির্বাচন নিয়ে যে সর্বদল বৈঠক হয়েছে, সেখানেও হাওড়া-আঁচ! বাম, কংগ্রেস, বিজেপি প্রত্যেকে সে বৈঠক বয়কট করে।
এতদিন হাওড়া পুরসভার অধীনেই ছিল বালি পুরসভা। বালি পুরসভার ১৬টি ওয়ার্ড নিয়ে হাওড়ার মোট ওয়ার্ড ছিল ৬৬টি। গত ১২ নভেম্বর বালিকে আলাদা করার সিদ্ধান্ত হয়। সেই মতো সদ্য অনুষ্ঠিত বিধানসভা অধিবেশনে বিল আনা হয়। ‘মাইক্রো লেভেলে নাগরিক পরিষেবা’ পৌঁছে দিতেই এই সিদ্ধান্ত বলে রাজ্য সরকারের তরফে বলা হয়েছে। কিন্তু বিল পাস করানো হলেও রাজ্যপালের সই ছাড়া তা আইন হবে না। এদিকে রাজ্যপাল একাধিক প্রশ্ন তুলে সেই সই-পর্ব বাকি রেখেছেন।
সর্বদল বৈঠকে বিজেপির প্রতিনিধি হিসাবে গিয়েছিলেন অর্জুন সিং ও শিশির বাজোরিয়া। বৈঠক বয়কট করে বাইরে বেরিয়ে শিশির বাজোরিয়া বলেন, “রাজ্য নির্বাচন কমিশনার বললেন হাওড়ায় ভোট বাদ। জানতে চাইলাম কবে হবে। উনি বললেন আগামিকালও হতে পারে। হতে পারেটা আবার কী?” অন্যদিকে অর্জুন সিংয়ের বক্তব্য, “ওরা বলছে রাজ্যপাল আটকে রেখেছেন। কেন শেষ মুহূর্তে ১৬টি ওয়ার্ড বাদ দিয়ে ভোট করাতে চাইছে?”
এদিন পুরভোট নিয়ে সর্বদল বয়কট করে বামেরাও। শরিক দল হিসাবে বাইরে বেরিয়ে এসেছে সিপিএম নেতা রবীন দেব বলেন, “এর আগে ২২ নভেম্বর মিটিং ডেকেছিল। তখন হাওড়া কলকাতা দু’টো নিয়ে বৈঠক হয়। সেখান থেকে হাওড়াকে বাদ দিয়েছে। আজও একই জিনিস। এখানকার কমিশনার তো একটা দলের প্রতিনিধিত্ব করছেন। তিনি কোনও কথা শুনতেই চান না।”
১ নভেম্বর ২০২১ সালের (১.১১.২১) ভোটার তালিকা অনুযায়ী নির্বাচন হবে। এদিনই জানিয়েছেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার সৌরভ দাস। বিরোধীদের দাবি, ৫ জানুয়ারি পূর্ণাঙ্গ ভোটার তালিকা প্রকাশিত হচ্ছে। কেন কিছুদিন অপেক্ষা না করেই ভোট করাচ্ছে কমিশন। এতে প্রচুর ভোটার বঞ্চিত হবেন বলেও দাবি তোলে তারা। এ প্রসঙ্গে রবীন দেব বলেন, “আমরা বললাম ১ জানুয়ারি যাদের ১৮ বছর হচ্ছে, তাদের ভোটার ৫ জানুয়ারি ভোটার তালিকা প্রকাশিত হবে। এদিন যাঁরা ভোটাধিকার পেল, তাঁদের কেন কর্পোরেশন ভোট থেকে দূরে রাখা হবে? এটা মানা যায় না। এর প্রতিবাদ আমরা সকলে করেছি।”
বামেদের অভিযোগ, এমনভাবে ভোটের দিন নির্ধারণ করা হয়েছে যার মধ্যে দু’দিন ছুটি। রবীন দেবের কথায়, “২২ জানুয়ারি ভোট হবে। ২৩ জানুয়ারি, ২৬ জানুয়ারি দু’টো গুরুত্বপূর্ণ দিন। ২৫ জানুয়ারি গণনা হলে স্ক্রুটিনি কবে হবে? কলকাতার ভোটের স্ক্রুটিনি মধ্যরাতে হয়েছে। কোনও রিপোলের সিদ্ধান্ত নেয়নি। এবারও তাই চাইছে। ২২ তারিখের পর ২৩ তারিখ। কে যাবে স্ক্রুটিনিতে। উৎসবের মরসুমে এসব কেন।” একই সঙ্গে তাঁদের বক্তব্য, কোর্ট আগামী ৩ তারিখ পর্যন্ত বন্ধ। এফিডেবিট ইত্যাদি করতে সমস্যা।