কলকাতা: পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে একের পর এক মামলায় ভর্ৎসনার মুখে রাজ্য ও রাজ্য নির্বাচন কমিশন। এবার খোদ কমিশনারকেই কড়া বার্তা দিলেন হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম। কেন্দ্রীয় বাহিনীর সংখ্যা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে প্রধান বিচারপতি এদিন কমিশনারের উদ্দেশে বলেন, ‘চাপ রাখতে না পারলে ছেড়ে দিন, রাজ্যপাল নতুন কমিশনার নিয়োগ করবেন’। পঞ্চায়েত নির্বাচনে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ মামলা হয় হাইকোর্টে। বুধবার সেই মামলার শুনানিতেই প্রধান বিচারপতি কড়া ভাষায় বার্তা দেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনারকে।
সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করার নির্দেশ দেওয়ার পর রাজ্য ২২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়েছে। সেই অনুরোধ মেনে বাহিনী পাঠানোর কথা বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। এদিন মামলাকারীর তরফে আইনজীবী সৌম্য মজুমদার আদালতে বলেন, ‘কমিশন কেন এভাবে চোখ বুজে থাকছে? মাত্র ১৭০০ জওয়ান চাওয়া হয়েছে। তারা ৬ জুলাই থেকে কাজ করবে।’ মামলাকারী মনে করিয়ে দিয়েছেন, ২০১৩ সালে পাঁচ দফায় পঞ্চায়েত ভোট হয়েছিল, সেখানে ১৭টি জেলার জন্য ৮২ হাজার জওয়ান মোতায়েন করা হয়েছিল।
এই বক্তব্য শুনে প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম কমিশনকে বলেন, ‘হাইকোর্টের নির্দেশ ছিল গোটা নির্বাচন নিয়ে। শুধুমাত্র নির্বাচনের দিন নিয়ে নয়।’ একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘শুরু থেকে বোঝানোর চেষ্টা করছি আপনারা নিরপেক্ষ। আপনাদের অ্যাসেসমেন্ট করতে হবে। শেষ সিদ্ধান্ত আপনাদের নিতে হবে।’ প্রধান বিচারপতি স্পষ্ট উল্লেখ করেছেন, ২২টি জেলার ভোটের জন্য ১৭০০ জওয়ান পর্যাপ্ত নয়। একদিনে নির্বাচন সামাল দেওয়া কঠিন হয়ে যাবে বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।
অন্য রাজ্য থেকে ভোটের মাত্র দুদিন আগে পুলিশ আসবে কেন? সেই প্রশ্নও তুলেছেন তিনি। প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আমাদের কি কমিশনকে সন্দেহ করতে হবে? চাপ রাখতে না পারলে ছেড়ে দিন, রাজ্যপাল নতুন কমিশনার নিয়োগ করবেন।’
কমিশনের পক্ষ থেকে কেউ আদালতে আসেন না বলে মন্তব্য করে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘খুব দুর্ভাগ্যজনক। তারা কি এত ব্যস্ত! ছেড়ে দিন আমরা নিজেরাই নির্দেশ দিচ্ছি। কোনও রাজ্যের শান্তিপূর্ণ নির্বাচন, কমিশনেরই দায়িত্ব। সব শোনার পর এটা বুঝতে পারলাম আমাদের নির্দেশ কার্যকর হয়নি।’