Panchayat Election 2023: বাংলার ‘স্মার্ট’ পুলিশকে যেন কেউ ‘স্মার্টনেস’ শেখাতে না আসে, ভোটের মুখে দরাজ সার্টিফিকেট পুলিশমন্ত্রীর
Mamata Banerjee: বৃহস্পতিবার পটনায় যাওয়ার আগে কলকাতা বিমানবন্দরে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে রাজ্য পুলিশকে দরাজ সার্টিফিকেট দিলেন মমতা। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, রাজ্যের পুলিশ যথেষ্ট 'স্মার্ট'। কেউ যেন বাংলাকে 'স্মার্টনেস দেখাতে না আসে', সেই হুঁশিয়ারি দিয়ে রাখেন মমতা।
কলকাতা: পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়নের দিনগুলিতেই রক্তারক্তি। হানাহানি, খুনোখুনির অভিযোগ। বোমা ফেটেছে। গুলি চলেছে। মায়ের কোল খালি হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে বাংলার আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে। পুলিশের ভূমিকা নিয়ে। ভোট পরিচালনায় কেন্দ্রীয় বাহিনী নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এমন এক আবহে এবার রাজ্য পুলিশের হয়ে ব্যাট ধরলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তথা পুলিশমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) স্বয়ং। বৃহস্পতিবার পটনায় যাওয়ার আগে কলকাতা বিমানবন্দরে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে রাজ্য পুলিশকে (Bengal Police Force) দরাজ সার্টিফিকেট দিলেন মমতা। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, রাজ্যের পুলিশ যথেষ্ট ‘স্মার্ট’। কেউ যেন বাংলাকে ‘স্মার্টনেস দেখাতে না আসে’, সেই হুঁশিয়ারি দিয়ে রাখেন মমতা।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, রাজ্যের পুলিশ অফিসাররা অন্য যে কোনও পুলিশের মতোই সমান গুরুত্বপূর্ণ। বাংলার পুলিশের কর্মদক্ষতা মনে করিয়ে দিয়ে বললেন, ‘একসময় কলকাতা পুলিশকে স্কটল্যান্ড পুলিশের সঙ্গে তুলনা করা হত।’ এরপরই বাংলার পঞ্চায়েত ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে বিরোধীদের আক্রমণের জবাব দিলেন মমতা। মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমোর দাবি, কেন্দ্রীয় বাহিনী যত খুশি পাঠাক। তাতে শাসক শিবিরের কোনও সমস্যা নেই। বললেন, ‘যত পারে, তত দিক।’ তাঁর মতে, যাঁরা ভোট দেওয়ার, তাঁরা ঠিকই ভোট দেবেন।
বাংলায় পঞ্চায়েত ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা হতেই অশান্তির অভিযোগ উঠে এসেছে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে। বিরোধীদের যাবতীয় আক্রমণের মুখে, মমতা আগেও একবার দাবি করেছিলেন, মনোনয়ন মোটের উপর শান্তিপূর্ণই হয়েছে। প্রশ্ন করেছিলেন, এমন শান্তিপূর্ণ মনোনয়ন দেশে কোথাও কেউ দেখেছে কি না। আর আজ আবারও মমতার মুখে সেই একই কথা। বললেন, ‘এত শান্তির মধ্যে মনোনয়ন জীবনে কখনও হয়নি।’ এই প্রসঙ্গে ত্রিপুরার নির্বাচনী পরিস্থিতির কথাও তুলে ধরেন মমতা। তাঁর দাবি, ত্রিপুরায় ৯৬ শতাংশ আসনে ভোটই হয় না, সেসব জায়গায় প্রতিদ্বন্দ্বিতাই করতে দেওয়া হয় না। ত্রিপুরার অবস্থার সঙ্গে বাংলার তুলনা টেনে বললেন, এ রাজ্যে ২ লাখ ৩৬ হাজার মনোনয়ন জমা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় বাহিনী বনাম রাজ্য পুলিশ – এই তর্ক-বিতর্ক আপাতত বাংলার ভোট ময়দানে হটকেকের মতো বিকোচ্ছে। আর এসবের মধ্যেই মমতার দাবি, ৭১ হাজার বুথের মধ্যে মাত্র চারটি বুথে গন্ডগোল হয়েছে। তার মধ্যে আবার একটি বুথে শাসক দলেরই দু’জন ‘খুন’ হয়েছে। বললেন, ‘এই নিয়েই কেন্দ্রের A-Z সব এজেন্সি এক হয়ে গিয়েছে।’
মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, বিরোধীরা রাজনৈতিকভাবে লড়াইয়ে এঁটে উঠতে না পেরে বিভিন্ন এজেন্সিকে ব্যবহারের চেষ্টা করছে। তবে এসবে যে বিরোধীদের বিশেষ লাভ হবে না, তাও ঠারেঠোরে বুঝিয়ে দেন মমতা। বললেন, ‘মানুষ এর জবাব দিতে তৈরি। আমরা লড়ে নেব, জিতে নেব।’
উল্লেখ্য, কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে গত কয়েকদিন ধরেই জোর চর্চা বাংলার রাজনীতিতে। হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট করানোর। প্রথমে স্পর্শকাতর জেলাগুলিতে, তারপর গোটা রাজ্যে, প্রতিটি জেলায়। তারপরও সমস্যা। ৬১ হাজারেরও বেশি ভোটকেন্দ্রের জন্য মাত্র ২২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী চায় কমিশন। পরে আদালত জানিয়ে দেয়, ২০১৩ সালের ভোটে যত কোম্পানি বাহিনী নেওয়া হয়েছিল, তার থেকে কম কেন্দ্রীয় বাহিনী নেওয়া চলবে না। আর এসবের মধ্যেই বার বার প্রশ্ন উঠছিল রাজ্য পুলিশের ভূমিকা নিয়ে। আর এবার বাংলার পুলিশ বাহিনীকে ফুল মার্কস দিয়ে পটনা গেলেন মমতা।