কলকাতা: রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গের (Model Code of Conduct) অভিযোগ বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari)। আজ বিকেলে কমিশনের অফিসে গিয়ে এক জোড়া অভিযোগ জানিয়ে আসেন শুভেন্দু। তার মধ্যে একটিতে অভিযোগ পাওয়া মাত্রই কমিশন পদক্ষেপ করেছে বলে দাবি বিরোধী দলনেতার। কী সেই অভিযোগ? শুভেন্দুর দাবি, গতকালই রাজ্য সরকারের তরফে থানায় থানায় মেইল পাঠানো হয়েছে। সিভিক ভলান্টিয়ার, ভিলেজ পুলিশ ও হোমগার্ড হিসেবে যাঁরা কর্মরত, তাঁদের বাড়ির ছেলেমেয়েদের স্কলারশিপ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে ওই মেইলে। সেই ফর্মের কপিও এদিন নির্বাচন কমিশনের অফিস থেকে বেরিয়ে দেখালেন শুভেন্দু। বিরোধী দলনেতার দাবি, এই পদক্ষেপ নির্বাচনী বিধিভঙ্গের সামিল।
এদিন প্রায় আধ ঘণ্টা কমিশনের অফিসে বৈঠক করে বেরিয়ে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন শুভেন্দু। শাসক শিবিরকে একহাত নিয়ে বললেন, ‘বেতন বাড়াতে পারেনি, ডিএ দিতে পারেনি। সিভিক ভলান্টিয়ারদের বেতন ৯ হাজার টাকা, ভিলেজ পুলিশদের বেতন ১০ হাজার টাকা, হোমগার্ডরা পায় ১২ হাজার টাকা। সরকার বেতন বাড়াতে পারেনি।’ শাসক পক্ষকে একহাত নিয়ে বিরোধী দলনেতার দাবি, ভোটের আগে সিভিক, ভিলেজ পুলিশ, হোমগার্ডদের বাড়ির সন্তানদের ‘স্কলারশিপের লোভ’ দেখানো হচ্ছে।
শুভেন্দু জানালেন, আজ বৈঠকে এই অভিযোগ পাওয়ার পরই রাজ্য নির্বাচন কমিশনার সচিবকে সরাসরি বলেছেন, এই পদক্ষেপ বাতিলের নির্দেশ দেওয়ার জন্য। বললেন, তাঁকে আশ্বস্ত করে জানানো হয়েছে, ‘সরকারকে এক্ষুনি লেখা হচ্ছে, এটা বাতিল করার জন্য।’
শুধু তাই নয়, আরও অভিযোগ রয়েছে শুভেন্দুর। ২১ তারিখের এক সরকারি নির্দেশিকার কথা উল্লেখ করেন তিনি। তাঁর দাবি, ৯ হাজার পুলিশ কনস্টেবলের দ্রুত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে বুথগুলিতে ব্যবহারের চেষ্টা করা হচ্ছে। বললেন, ‘নির্বাচনী আচরণবিধি চলাকালীন এই পুলিশ অফিসারদের পোস্টিং হয়েছে।’ এরপরই কোথায় আপত্তি সেই কথাও জানালেন তিনি। শুভেন্দুর দাবি, নিয়ম অনুযায়ী পুলিশের নিয়োগের ক্ষেত্রে এক বছর প্রশিক্ষণের কথা বলা হয়েছে। ন্যূনতম ৬ মাস প্রশিক্ষণ হওয়ার কথা। কিন্তু, এই ৯ হাজার সদ্য নিযুক্তদের মাত্র সাত দিনের ট্রেনিং দেওয়া হচ্ছে বলে দাবি শুভেন্দুর।
বিরোধী দলনেতার কথায়, যেখানে পুলিশের গুলি চালানোর প্রশিক্ষণ অন্তত ১ মাসের হওয়ার কথা, সেখানে এদের তিন দিন গুলি চালানোর প্রশিক্ষণ দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। সরকারের এই সিদ্ধান্ত, ‘ভীষণ বিপজ্জনক’ বলেই মনে করছেন শুভেন্দু। যদিও বিরোধী দলনেতা বলছেন, এই বিষয়টি নিয়ে কমিশনের তরফে শুভেন্দুদের স্পষ্টভাবে কোনও আশ্বাস দেওয়া হয়নি। তবে কমিশন তাঁদের জানিয়েছে, বিষয়টি নিয়ে সরকারের সঙ্গে কথা বলা হবে।