কলকাতা: বর্ষা ঢুকে গিয়েছে বাংলায়। কমেছে গরমের দাপট। কিন্তু ভোট ময়দানে এখন ক্রমেই চড়ছে পারদ। যত দিন যাচ্ছে, তত তপ্ত হয়ে উঠছে বাংলার ভোট রাজনীতি। আর এরই মধ্য়ে ভোটের প্রচার শুরু করে দিচ্ছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ও (Mamata Banerjee)। এবারের পঞ্চায়েত ভোটে (Panchayat Election 2023) রাজ্যের বেশ কিছু এলাকায় নির্বাচনী প্রচার করার কথা রয়েছে তৃণমূল নেত্রীর। আর তা শুরু হয়ে যাচ্ছে আগামী সপ্তাহেই। কোচবিহার থেকে। পঞ্চায়েত ভোটের প্রচার পর্বে আগামী সোমবার (২৬ জুন) কোচবিহারে প্রথম জনসভা করার কথা রয়েছে মমতার।
ভোটের আগে আর খুব বেশি সময় নেই। দু’সপ্তাহেরও কম সময় থাকছে হাতে। কারণ, ৮ তারিখ ভোট। তার আগে আবার ‘কুলিং অফ পিরিয়ড’ থাকছে। তাই আর একেবারেই সময় নষ্ট করতে চাইছে না তৃণমূল নেতৃত্ব। এখনও পর্যন্ত যা খবর, রবিবারই কোচবিহারে পৌঁছে যাবেন মমতা। তারপর সোমবার সভা। উল্লেখ্য, এর আগে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়ও তাঁর তৃণমূলে নবজোয়ার কর্মসূচি শুরু করেছিলেন কোচবিহার জেলা থেকেই। আর এবার দলের সুপ্রিমোও পঞ্চায়েতের প্রচারে নামছেন সেই কোচবিহার থেকেই।
রাজ্য রাজনীতির কারবারিদের একাংশের মতে, কোচবিহার সহ গোটা উত্তরবঙ্গকেই এবার বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছে তৃণমূল শিবির। তার অন্যতম কারণ, উনিশের লোকসভা নির্বাচনে কোচবিহারে হোঁচট খেয়েছিল তৃণমূল। কোচবিহার থেকে সাংসদ হয়েছেন বিজেপি নেতা নিশীথ প্রামাণিক। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীও হয়েছেন। তারপর একুশের বিধানসভা ভোটেও আশানুরূপ ফল হয়নি শাসক শিবিরের। বেশিরভাগ বিধানসভা কেন্দ্রগুলিতেই গেরুয়া আবির উড়েছে একুশের ভোটে। সেখান থেকে সাধারণ মানুষের মন ঘাসফুলের দিকে ফেরাতে তৎপর তৃণমূল নেতৃত্ব।
এর পাশাপাশি গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের সমস্যাও একটি অন্যতম বড় কারণ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। এমনকী অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনসংযোগ যাত্রা চলাকালীন এই কোচবিহারেই প্রার্থী বাছাইয়ের জন্য ভোটাভুটি ঘিরে তুমুল বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। সেই নিয়ে কড়া বার্তা দিতে দেখা গিয়েছিল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কেও। এদিকে কোচবিহার জেলায় রাজবংশী সম্প্রদায়েরও একটি বড় অংশের ভোটার রয়েছেন। কিছুদিন আগে সীমান্তবর্তী এলাকায় এক রাজবংশী যুবকের গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুর ইস্যুতেও সরব হয়েছিলেন মমতা। এবারের কোচবিহারের সভা থেকে সেই রাজবংশীদের আরও কাছে টানার প্রয়াস দেখা যেতে পারে বলেই মনে করছেন রাজনীতির কারবারিরা।