ঘাটাল: ভোটের আবহে শাসক-বিরোধী তরজা তুঙ্গে, কখনও কখনও একই দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বও প্রকাশ্যে আসছে। কিন্তু সেই দ্বন্দ্ব যদি প্রবেশ করে বাড়ির রান্নাঘরে! একই পরিবারের দুই পুত্রবধূ, যাঁরা সকালে উঠে একসঙ্গে সবজি কাটেন, রান্না করেন, ভোট ময়দানে তাঁরাই প্রতিদ্বন্দ্বী। পঞ্চায়েত নির্বাচনে দুই দলের প্রতীকে লড়বেন দুই জা। একজন তৃণমূল, অপরজন বিজেপি। এমনই ছবি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনায়। এক নম্বর ব্লকের মানিককুণ্ডু গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৯৪ বুথের কাশকুলি গ্রামে সেই দুই প্রতিপক্ষের নাম মিতালি ও মামনি।
আসন্ন নির্বাচনে মিতালি লড়বেন বিজেপির তরফে আর মামনি পেয়েছেন তৃণমূলের টিকিট। দুজনেই প্রচারে কোনও খামতি রাখছেন না। জিততেও মরিয়া তাঁরা। তবে যে পক্ষই জিতুক পরিবারে তার কোনও প্রভাব পড়বে না বলেই মত দুজনের। তাঁদের দাবি, ভোটের ফল মানুষের ওপর নির্ভর করে, তাই তার জন্য পরিবারে দ্বন্দ্বের কোনও জায়গা নেই।
কিন্তু কেন এমন সিদ্ধান্ত? কেন দুই দল বেছে নিল একই পরিবারকে? আসলে মামনি মূলার স্বামী আশিস মূলা তৃণমূলে দীর্ঘদিনের সক্রিয় কর্মী। এলাকায় তাঁর বেশ প্রভাবও রয়েছে। অন্যদিকে, মিতালি মূলার স্বামী সুভাষ মূলা বিজেপির সক্রিয় কর্মী। একসময় তৃণমূল করতেন তিনি। বছর দশেক আগে সেই সম্পর্কে চুকেছে। তাঁর স্ত্রীকেই প্রার্থী করেছে বিজেপি। আশিস ও সুভাষের দাদা দেবাশিস মূলা জানিয়েছেন, দুই ভাই দুই দলের কর্মী হলেও পরিবারে কোনও অশান্তি নেই।
জানা গিয়েছে, ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজেপি দখল করে ওই কাশকুলি বুথ। বিজেপির ঘাঁটিতে কাকে প্রার্থী করা হবে, তা নিয়ে কিছুটা চিন্তিতই ছিল তৃণমূল। অন্যদিকে, প্রার্থী খুঁজতে সমস্যায় পড়েছিল গেরুয়া শিবিরও। শেষ পর্যন্ত দুই ভাইয়ের কথাতেই ভোটে লড়ছেন তাঁদের স্ত্রীরা। নিজেদের স্ত্রীদের জেতাতে জোরদার প্রচার করছেন দুই ভাই।