একটা সময় বলিউডে ডাক পেতেন না ববি দেওল। রোম্যান্টিক চকোলেট বয় হিসেবে সুনাম ছিল তাঁর। ‘গুপ্ত’, ‘সোলজার’, ‘বিচ্ছু’র মতো ছবিতে অভিনয় করেছিলেন ৯০-এর দশকের শেষের দিকে। কিন্তু কয়েকটা ছবির পরই হারিয়ে গিয়েছিলেন ববি। এতটাই হারালেন যে, বারংবার পরিচালক-প্রযোজকদের ফোন করেও ফল মেলেনি কোনও। বলিউড তাঁকে বাইরে বেরিয়ে যাওয়ার দরজা দেখিয়ে দিল সটান। নিরুপায় হয়ে হোটেলে-হোটেলে ডিজে হিসেবে কাজ করেছিলেন ববি। সুনামও কুড়িয়েছেন সেই কাজে। সেই ববিকেই ফের আবিষ্কার করে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম। এবং ‘আশ্রম’ ওয়েব সিরিজ়ে অভিনয় করে নিজের জাত চিনিয়ে দিলেন ধর্মেন্দ্রর কনিষ্ঠ পুত্র।
তবুও মাসের পর-মাস কেটে গেল। পরবর্তী কাজের আশায় বুক বাঁধলেন ববি। এদিন এল ‘অ্যানিম্যাল’ ছবিতে নির্বাক খলনায়ক আব্রার হকের চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ। ৩ ঘণ্টা ২০ মিনিটের ছবিতে মাত্র ১৫ মিনিটের দৃশ্য ববির। তাতেই ফাটিয়ে দিয়েছেন অভিনেতা। হিরো রণবীরকে ছাপিয়ে গেলেন অনেকটাই। নেটমহলের একাংশ তাঁর প্রত্যাবর্তন দেখে বললেন, “কামব্যাক করতে হলে ববি দেওলের মতো কামব্যাক করা উচিত।”
তবে ববির কামব্যাকের গল্প ততটাই মেলোড্রামাটিক। হাতে কাজ নেই। বসে আছেন বাড়িতেই। হতাশা গ্রাস করেছে ববিকে। সেই হতাশা ভুলতে হাতে মদের গেলাস তুলে নিয়েছিলেন ববি। দিনরাত সুরাপান। যত খাচ্ছেন, ততই হতাশা বাড়ছে। নিজের প্রতি অশ্রদ্ধা তীব্রতার সঙ্গে ধেয়ে আসছে। সেই সময় পিছনে ধাক্কা দিল পুত্রের দুটি বাক্য। যে কারণে, কামব্যাকের জন্য পুত্রকেই কৃতিত্ব দেন ববি। একদিন পিতা ববির উদ্দেশে তাচ্ছিল্যের সঙ্গে পুত্র বললেন, “বাবা তো বাড়িতেই বসে থাকে। মা বাইরে বেরিয়ে কাজ করে প্রতিদিন। আমার বাবা মায়ের পয়সায় বসে-বসে খায়…” এই বাক্যগুলো নিজের রক্তের সন্তানের থেকে আসছে থেকে আর সইতে পারলেন না ববি। গর্জে উঠল তাঁর ভিতরের ‘অ্যানিম্যাল’। মনে-মনে বলে উঠলেন, “আর না, অনেক হয়েছে। এবার একটা হেস্তনেস্ত করতেই হবে। ফিরতেই হবে আমাকে ফেলে আসা জায়গায়। তানিয়া (ববি দেওলের স্ত্রী) এবং পুত্রদের প্রতি আর অবিচার নয়। নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে।”
এই ঘটনার পর নিজেকে আমল পাল্টে ফেলেছিলেন ববি দেওল। কাজের প্রতি আগ্রহী হতে শুরু করেছিলেন তিনি। বলিউডের প্রত্যেক পরিচালক-প্রযোজকের দরজায়-দরজায় ঘুরেছেন। সবাইকে বলেছেন, “কাজ করতে চাই”। করণ জোহরকে কথাগুলো বলেছিলেন ববি। এবং এটাও বলেছিলেন, “তোমার সঙ্গেও কাজ করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তুমি আমাকে পাত্তা দাওনি।”