AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

আর্থার কোনান ডয়েলের জীবনকে ভিত্তি করে সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের নতুন ছবি

পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায় নতুন কাজে হাত দিচ্ছেন। এবার তিনি পরিধি বাড়ানোর দিকে নজর দিচ্ছেন, তা বুঝতে অসুবিধা হয় না। লন্ডন সিটির দ্য গিল্ডহলে নতুন ব্রিটিশ–ভারতীয় পূর্ণদৈর্ঘ্য ছবির ঘোষণা করা হলো। আর্থার কোনান ডয়েলের জীবনকে ভিত্তি করে তৈরি হচ্ছে এই ছবি। ডয়েল খ্যাতনামা লেখক, চিকিৎসক ও মানবতাবাদী। তাঁর চিরন্তন সৃষ্ট চরিত্র শার্লক হোমস আজও, প্রথম আবির্ভাবের শতাধিক বছর পরেও, প্রভাব বিস্তারে শীর্ষে রয়েছে।

আর্থার কোনান ডয়েলের জীবনকে ভিত্তি করে সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের নতুন ছবি
| Edited By: | Updated on: Oct 28, 2025 | 6:06 AM
Share

পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায় নতুন কাজে হাত দিচ্ছেন। এবার তিনি পরিধি বাড়ানোর দিকে নজর দিচ্ছেন, তা বুঝতে অসুবিধা হয় না। লন্ডন সিটির দ্য গিল্ডহলে নতুন ব্রিটিশ–ভারতীয় পূর্ণদৈর্ঘ্য ছবির ঘোষণা করা হলো। আর্থার কোনান ডয়েলের জীবনকে ভিত্তি করে তৈরি হচ্ছে এই ছবি। ডয়েল খ্যাতনামা লেখক, চিকিৎসক ও মানবতাবাদী। তাঁর চিরন্তন সৃষ্ট চরিত্র শার্লক হোমস আজও, প্রথম আবির্ভাবের শতাধিক বছর পরেও, প্রভাব বিস্তারে শীর্ষে রয়েছে।

এই ঘোষণার সময়ে উপস্থিত ছিলেন বিএফআই বোর্ড অব গভর্নর্স-এর সদস্য মণিকা চাড্ডা, বিএফআই-এর আন্তর্জাতিক প্রধান অ্যাগনিয়েস্কা মুডি, বিএফআই আর্কাইভ প্রধান আরিকে ওকে, ব্রিটিশ কাউন্সিলের চলচ্চিত্র বিভাগের প্রধান ব্রিওনি হ্যানসেন, এবং বিএফআই কালচারাল রিলেশনস বিভাগের মিরান্ডা গাওয়ার-কিয়ান। কোনান ডয়েল এস্টেটের পক্ষ থেকে উপস্থিতি যেমন ছিল, তেমনই ডয়েল পরিবারের সদস্য রিচার্ড পুলি ও রিচার্ড ডয়েল উপস্থিত ছিলেন। তাই এই সন্ধ্যাটি দুই দেশের গল্প বলার ঐতিহ্য ও সাংস্কৃতিক বন্ধনের একটা জোরালো ছবি হয়ে থাকল।

অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে অতিথিরা উপভোগ করেন আর্থার কোনান ডয়েল এস্টেটের একটি বিশেষ প্রদর্শনী, যেখানে ঐতিহাসিক গুরুত্বসম্পন্ন বিরল নিদর্শন প্রদর্শিত হয়। সন্ধ্যাটি পরিচালনা করেন লন্ডন সিটির কাউন্সিলম্যান মনসুর আলি এবং বক্তাদের মধ্যে ছিলেন প্রযোজক শাহনাব আলম, ছবির লেখক ও পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায় এবং ডয়েল পরিবারের সদস্য রিচার্ড পুলি ও রিচার্ড ডয়েল। পরিচালক সৃজিত জানালেন, ”ডয়েলের গল্পগুলো কেবল বিশ্লেষণ নয় বরং কৌতূহলের অ্যানাটমি — আরও গভীরভাবে, আরও মনোযোগ দিয়ে দেখার এক অন্তর্নিহিত তাগিদ। সেই তাগিদই থেকেই গিয়েছে। ‘এলিমেন্টারি মাই ডিয়ার হোমস’-এ ডয়েল তাঁর কল্পনার জগতে প্রবেশ করছেন। চলচ্চিত্রটি শুরু হয় মিসেস গিলক্রিস্টের হত্যাকাণ্ড এবং অস্কার স্লেটারের ভুল গ্রেপ্তারের ঘটনা দিয়ে। কিন্তু আমার আগ্রহ অপরাধে নয় — বরং সেই মানুষটিকে ঘিরে, যিনি দেখছেন তাঁর কল্পনা বাস্তবের সঙ্গে মিশে যাচ্ছে। যখন কারও সৃষ্টি তাঁকেই তদন্তের মুখে দাঁড় করিয়ে দেয়, তখন কী ঘটে, তার অনুসন্ধান এই ছবি।”

”যখন সৃজিত তাঁর অসাধারণ চিত্রনাট্যটি প্রথম শোনান, তখন থেকেই এই প্রকল্পে কাজ করা আমার জন্য ছিল এক ব্যক্তিগত আবিষ্কারের যাত্রা — বহুমুখী ডয়েলের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার, যিনি চিকিৎসক হিসেবে প্রশিক্ষিত হয়ে পরবর্তীতে সার্জন, সামরিক চিকিৎসক, ব্যক্তিগত অনুসন্ধানকারী, আইনজীবী, মনোবৈজ্ঞানিক গবেষক, আধ্যাত্মিক চিন্তক, ইতিহাসবিদ, বক্তা, নাট্যকার ও ক্রীড়াবিদ হয়ে ওঠেন — কিংবদন্তি লেখক তো বটেই”, বললেন ইনভিজিবল থ্রেড-এর তরফে প্রযোজক শাহনাব আলম। সৃজিতের প্রযোজনা সংস্থা ‘ম্যাচ কাট’-ও থাকছে, এই ছবি তৈরির কাজে।

চলচ্চিত্রটি আর্থার কোনান ডয়েলের জীবনের বাস্তব ঘটনাগুলিকে তাঁর বিখ্যাত সৃষ্টি শার্লক হোমসের উপাদানের সঙ্গে জুড়ে দেয় এক রুদ্ধশ্বাস কাহিনিতে, যা ন্যায়বিচার, সত্য এবং দৃঢ়তার মতো বিষয়গুলোকে অনুসন্ধান করে। লন্ডনে, ১৯০৬ সালে ব্যক্তিগত অস্থিরতার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন আর্থার কোনান ডয়েল — যার মধ্যে রয়েছে তাঁর মৃত্যুপথযাত্রী স্ত্রীর ইচ্ছা যে তিনি যেন অন্য এক নারীকে বিয়ে করেন। এই মানসিক দ্বন্দ্বের মাঝেও ডয়েল খুঁজে পান সান্ত্বনা ও অনুপ্রেরণা তাঁর সৃষ্ট চরিত্র শার্লক হোমসের মধ্যে। নিজস্ব আবেগজনিত লড়াই সত্ত্বেও ডয়েল সত্য ও ন্যায়বিচারের প্রতি অবিচল থাকেন — অনেকটা তাঁর সাহিত্যিক চরিত্রের মতোই। এদিকে, গ্লাসগো-তে এক রহস্যময় হত্যাকাণ্ড ডয়েলের বিশ্বাস ও অনুসন্ধানী ক্ষমতাকে কঠিন পরীক্ষার মুখে ফেলে। যখন তিনি ভারতীয় বংশোদ্ভূত এক নিরপরাধ ব্যক্তি, জর্জ এডালজি-র ভুল সাজা প্রাপ্তির মামলায় জড়িয়ে পড়েন, তখন ডয়েল দেখতে পান এডালজির প্রতি সাজানো অন্যায়ের সঙ্গে তাঁর কল্পনার গোয়েন্দার সমাধান করা নানা মামলার আশ্চর্য মিল। বিচারপ্রক্রিয়া যত এগোয়, ডয়েলের সত্যের সন্ধানের প্রতি নিষ্ঠা ততই উজ্জ্বল হয়ে ওঠে — প্রতিধ্বনিত হয় সেই নীতিগুলো, যা শার্লক হোমসকে তার অভিযানে চালিত করে। একই সময়ে কাহিনি প্রবেশ করে আরেকজন ভুলভাবে খুনের অভিযোগে অভিযুক্ত ব্যক্তি অস্কার স্লেটারের জীবনে। শেষ পর্যন্ত, ‘এলিমেন্টারি মাই ডিয়ার হোমস’ হয়ে ওঠে আর্থার কোনান ডয়েলের জীবন ও তাঁর কিংবদন্তি সৃষ্টির এক বিশ্লেষণ। এই ছবি কবে দেখা যাবে, তা ঘোষণা হয়নি। তবে কাজ শুরু হয়ে গেল পুরোদমে।