কলকাতায় ধুঁকছে শচীনদেব বর্মন-রাহুলদেব বর্মনের বাসভবন, সংরক্ষণের দাবিতে এবার পিটিশন
১৯৩৯ সালে এই বাড়িতেই জন্ম নিয়েছিলেন পঞ্চম, আর ১৯৫২ সাল পর্যন্ত এই বাড়িই ছিল তাঁদের স্থায়ী ঠিকানা। শুধু তাঁরাই নন, গুরু দত্ত–সলিল চৌধুরী–হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের মতো দিকপালেরা এই বাড়িতে এসেছেন।

কলকাতার ৩৬/১ সাউথ এন্ড পার্ক একটা সময় ছিল সঙ্গীতের প্রাণকেন্দ্র—সেখানে থাকতেন কিংবদন্তি সঙ্গীত শিল্পী শচীনদেব বর্মন ও তাঁর পুত্র রাহুলদেব বর্মন অর্থাৎ সকলের প্রিয় ‘পঞ্চম’। ১৯৩৯ সালে এই বাড়িতেই জন্ম নিয়েছিলেন পঞ্চম, আর ১৯৫২ সাল পর্যন্ত এই বাড়িই ছিল তাঁদের স্থায়ী ঠিকানা। শুধু তাঁরাই নন, গুরু দত্ত–সলিল চৌধুরী–হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের মতো দিকপালেরা এই বাড়িতে এসেছেন। বসেছে কতই না গান-সুরের আসর। তারপর কেটে গিয়েছে বহু বছর—রাজপথের পাশে বর্তমানে ধুঁকছে এই ভবন। জানালার ব্লাইন্ড ছেঁড়া, দেওয়ালে ধরেছে ফাটল। সেই বাড়ির সংরক্ষণ নিয়ে এবার সরব শিল্পীমহল।
পরিচালক অভিজিৎ দাশগুপ্ত এই মর্মে Change.org–এর অনলাইন এক পিটিশন আনেন। যেখানে দাবি করা হয়—“এই বাংলার মাটির এই বিশাল সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ করা হোক। আমরা চাই এই বাড়িটি ভেঙে না ফেলে, ওই ঠিকানায় একটি সঙ্গীত-ভবন বা মিউজিয়াম তৈরি করা হোক।” ২০২১ সালে হেরিটেজ কমিশনের ঘোষণায় রাস্তার নামকরণ করা হয়েছিল ‘সংগীত সরণি’। অধিকাংশই এই পিটিশনে সই করছেন। সমর্থন জানাচ্ছেন। বৃহস্পতিবার থেকে কেটে গিয়েছে ৪৮ ঘন্টা। এখন বাংলার গায়ক-গায়িকারাও এই পিটিশন নিজেদের সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করছেন। নিজেরাও সমর্থন করছেন। প্রচার করছেন।
পরিচালকের কথায়, “MEA–এর বাংলাদেশে ইচ্ছা আছে পুরনো রায়বাড়ি সংরক্ষণের। আমাদের কেন নেই? হেরিটেজ কমিশন–কে আবেদন জানানো হয়েছে—বাড়ির মালিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে একটি মিউজিয়াম খোলা হোক।” বিজ্ঞানী–পরিচালক বেদাব্রত পাইনও আবেদন করেছেন—“শৈশবে শুনেছি ‘মনে পড়ে রুবি রায়’–র গানটা এই বাড়িতে তৈরি হয়েছিল। গোলপার্ক বাসস্টপের পাশে। আমার বাবা শচীনদেব বর্মনের মস্ত অনুরাগী ছিলেন। সবসময় আমাদের এই বাড়িটা দেখাতেন। এখন আমি ওই বাড়ির খুব কাছেই থাকি। এখন বাড়ির অবস্থা দেখে আমার খারাপ লাগে। তবে আমি আমার ছেলেকে ওই বাড়িটা দেখাতে কখনও ভুলি না।” এই পিটিশনে বিস্তর সাড়া মিলছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় চোখে পড়ছে এই নিয়ে নানা পোস্ট। এখন দেখার বিষয়টা নজরে পড়লে প্রসাশনের তরফ থেকে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
