কুমিল্লায় দুর্গামণ্ডপে তাণ্ডবের ঘটনায় কড়া পদক্ষেপ করেছে শেখ হাসিনার সরকার। বাংলাদেশের ২২ টি জেলায় আধা সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। ঘটনাটি নিয়ে আগেই ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী, পরিচালক ফারুকী সহ বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবী মহলের একাংশ। প্রথমবার মুখ খুললেন অভিনেত্রী জয়া আহসান।
বাংলাদেশের রংপুরের একটি আগুনে জ্বলা ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেছেন জয়া। ক্যাপশনে তুলে ধরেছেন নবারুণ ভট্টাচার্যর কবিতার অংশ। লিখেছেন, “এই মৃত্যু উপত্যকা আমার দেশ না/এই জল্লাদের উল্লাসমঞ্চ আমার দেশ না/এই বিস্তীর্ণ শ্মশান আমার দেশ না/এই রক্তস্নাত কসাইখানা আমার দেশ না”।
বাংলাদেশে তাঁর অভিনয়ের ছাপ রাখার পর কাঁটা তারের বেড়া ভেদ করে এপারেও কাজের সুযোগ পান অভিনেত্রী জয়া আহসান। বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে দুই বাংলাতেই সমান জনপ্রিয় এই অভিনেত্রী। কাকতালীয়ভাবে, ভারতে জয়ার অভিনীত প্রথম ছবির নাম ‘বিসর্জন’। মা দুর্গার বিসর্জনের দৃশ্য দিয়েই শুরু হয়েছিল ছবি। দারুণ সফল হয়। তারপর ধীরে ধীরে টলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে পাকাপাকি জায়গা করে নিয়েছেন জয়া। বছরের অনেকটা সময় এপার বাংলাকেই থাকেন তিনি। ফলে তাঁর প্রতিক্রিয়া আলাদা তাৎপর্য রাখে নিঃসন্দেহে।
অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী আগেই লিখেছেন, “বিজয়া কতটা শুভ ছিল….বলার কোন অপেক্ষা নেই!!এভাবেই বিসর্জন হচ্ছে মানবতার….মানুষরূপী অমানুষগুলো ধর্ম এবং শান্তি দুটোই ধ্বংস করতে বদ্ধ পরিকর….মানুষ বাঁচলে ধর্ম বাঁচবে,পৃথিবী বাঁচবে…”।
অন্যদিকে পরিচালক মহম্মদ সারওয়ার ফারুকীও ফেসবুকে একটি বড় পোস্ট করেছেন। তিনি লিখছেন, “এখন আমরা কি করতে পারি? ঘটনা যা যা ঘটেছে সেটা ঠিকঠাক তদন্ত করে সবার সামনে তুলে ধরা। দ্রুততার সাথে এই হামলার ঘটনাগুলার সাথে যারা যারা জড়িত তাদের শাস্তির ব্যবস্থা করা। আগামীতে যেনো এইরকম কিছু না ঘটে তার জন্য যা যা ব্যবস্থা নেয়ার সেটা নেয়া।” তিনি আরও যোগ করেন, “তবে সবচেয়ে বেশী দরকার যেটা সেটা হচ্ছে, প্রত্যেকেই যার যার জায়গা থেকে এই ঘটনার নিন্দা করা। হিন্দু বন্ধু এবং প্রতিবেশীকে জানানো, তুমি একা নও! এখন তাকে একা বোধ না করতে দেয়াই হচ্ছে সবচেয়ে বড় কাজ! এই সময় এক জগতবিধ্বংসী ক্ষোভ-অভিমান চেপে বসে। তার হাতটা চেপে ধরে বলি চলেন, ইউ আর নট অ্যালোন।”
এখানেই থামেননি তিনি ঘটনার প্রতিবাদ করে তিনি আরও লেখেন, “অন্য দেশে সংখ্যালঘু মুসলমানকে অত্যাচার করলে আমাদের হৃদয় যেমন ব্যথিত হয়, নিজের দেশে সংখ্যালঘু হিন্দু বা অন্য কেউ অত্যাচারিত হলেও আমাদের হৃদয় যেনো সেটা একই ভাবে উপলব্ধি করতে পারে, আল্লাহ যেনো আমাদের এই তৌফিক দান করেন।” প্রতিবাদে সরব হয়েছেন চিত্রশিল্পী জ্যোতিকা জ্যোতিও। দুর্গামণ্ডপে হামলার ঘটনাকে কড়া ভাষায় নিন্দা করে করেছেন একের পর এক পোস্ট। বুদ্ধিজীবী মহলের একাংশের এই বিষয়ে নীরবতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।
অন্যদিকে গতকালই এই ঘটনার নিন্দা করে এক বিবৃতি দিয়েছিলেন ও দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, “বাংলাদেশ এক অসাম্প্রদায়িক চেতনার দেশ। বাংলাদেশে সকল ধর্ম, বর্ণ, সম্প্রদায়ের মানুষ একসঙ্গে বসবাস করবে। যার যার ধর্ম সে সে পালন করবে।” তিনি প্রত্যেক বাংলাদেশবাসীকে স্মরণ করিয়ে দেন, “ধর্ম যার যার, কিন্তু উৎসব সবার। ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার।