মাত্র তিন দিনেই ৪০ কোটি ছুঁয়েছে গাঙ্গুবাই। শিবরাত্রির ছুটি মিলিয়ে এই ছবি যে আরও অনেক দূর এগবে এ কথা আগাম জানাচ্ছেন ট্রেন্ড অ্যানালিস্টরা। বানাতে খরচা হয়েছিল ১৮০ কোটির কাছাকাছি। ডিজিটাল স্বত্ব, গানের রাইট সব মিলিয়ে ইতিমধ্যেই বেশ কয়েক কোটি উঠে এসেছিল ছবি মুক্তির আগেই। পরিচালক সঞ্জয় লীলা বনশালী মানেই বিরাট মাপের সেট ডিজাইন, মারকাটারি ক্যামেরার কাজ। সে দেবদাস হোক অথবা রামলীলা বা বাজিরাও… বনশালীর লার্জার দ্যান লাইফ কনসেপ্ট বহু পুরনো। তবে জানেন কি গাঙ্গুবাইয়ের এই যাত্রা এতটা মসৃণই হত না যদি না থাকতেন সুদীপ-অমিত-সুব্রত। এই তিন ত্রয়ীই বাঙালিই। সম্পূর্ণ নাম সুদীপ চট্টোপাধ্যায়, অমিতা রায় ও সুব্রত চক্রবর্তী। কী অবদান তাঁদের? কী করেছেন তাঁরা? চলুন দেখে নেওয়া যাক…
সুদীপ চট্টোপাধ্যায়- পেশায় সিনেমাটোগ্রাফার। কলকাতার ছেলে। পেশাগত কারণে দীর্ঘদিন মুম্বইয়ে নিবাস। কিছু দিন আগে সৃজিত মুখোপাধ্যায় ও মিথিলা গিয়েছিলেন মুম্বইয়ে। তাঁদের বেশ কিছু মনোক্রোম ছবি কি ভাইরাল হয়ে এসেছিল আপনার টাইমলাইনে? বলে রাখা যাক, ওই ছবিগুলোই কিন্তু বন্ধুর জন্য শখ করে তুলে দিয়েছিলেন সুদীপ। তবে তাঁর পরিচয়, তাঁর বৃত্ত আরও কিছুটা বিস্তৃত। ২০০৫ সালে ইকবাল থেকে শুরু করে চক দে ইন্ডিয়া, ধুম ৩, বাজিরাও মস্তানি, কাবিল– সব জায়গাতেই শাণিত চোখ আর বুদ্ধিমতার জোরে দাপিয়ে কাজ করেছেন তিনি। পড়াশোনা পুনের ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইন্সটিউট। চাক দে ইন্ডিয়ার জন্য ফিল্মফেয়ারের বেস্ট সিনেমাটোগ্রাফারের তকমাও কিন্তু ছিনিয়ে নিয়েছিলেন তিনিই। আর গাঙ্গুবাইতেও কিস্তিমাত। সঞ্জয়ের স্ক্রিপ্ট আর সুদীপের ক্যামেরার কাজ– ব্যস কেমিস্ট্রি ক্লিক করতে এতটুকু সময় নেয়নি।
সুব্রত চক্রবর্তী- সঞ্জয় লীলা বনশালী মানেই তো বড় বড় সেট, সেটে বাহারি সব কারুকার্য। এই ছবিতেও যেন ইতিহাসের পাতা থেকে উঠে এসেছিল এক টুকরো কাথিয়াওয়াড়িই। এই সবের নেপথ্যে কিন্তু আরও এক মানুষ দিনরাত এক করে কাজ করেছেন তিনি সুব্রত চক্রবর্তী। কখনও এক থি ডায়েন, আবার কখনও বা উড়তা পঞ্জাব, রঙ্গুন বা মেরি প্যায়ারি বিন্দু– এই সব ছবির প্রোডাকশান ডিজাইনারের দায়িত্ব সামলেছেন বহু আগেই। আবার ধরুন ছপক কিংবা ২০২১-এ মুক্তিপ্রাপ্ত মিমি, শেরশাহ– সে সবের প্রোডাকশান ডিজাইন তো তাঁরই করা। পদ্মাবতেও সুব্রত কাজ করেছেন বনশালীর সঙ্গে। আবার বনশালী-চক্রবর্তীর জুটি মিশে গেল গাঙ্গুবাই কাথিয়াওয়াড়িতে।
অমিত রায়- সুব্রতর মতো তিনিও এই ছবির প্রোডাকশান ডিজাইনার। মাত্রু কে বিজলি কা মন্ডোলা থেকে শুরু করে হায়দার, কাট্টি বাট্টি–এ ছবির প্রোডাকশান ডিজাইন করেছেন তিনিই। জানিয়ে রাখা যাক, সুশান্ত সিং রাজপুতের শেষ ছবি দিল বেচারাতেও কিন্তু ছিল তাঁর কাজ। এ ছাড়া শেরশাহ, উড়তা পঞ্জাব, মেরি প্যায়ারি বিন্দু, রাজি… নাম বলে শেষ করা যাবে না। আগেও কাজ করেছিলেন ভন্সালীর সঙ্গে। ব্যস আবারও করে ফেললেন গাঙ্গুবাইতে। হিট হয়ে গেল ছবি। কথায় বলে ঢেঁকি স্বর্গে গিয়েও ধান ভাঙে। আর বাঙালি– স্বপ্ন নগরী, মুম্বইতেও।