‘ওরা হয়তো ভাবছে লোকসঙ্গীত শিখতে হয় না’, ট্রোলের জবাবে মুখ খুললেন অর্কদীপ, পাশে পেলেন ইমন-লোপামুদ্রাকে

সঠিক বিচার হয়নি, বিচারকরা পক্ষপাতদুষ্ট ইত্যাদি নানা কমেন্টে ভরেছে ফেসবুক। ব্যক্তিগত আক্রমণ ধেয়ে এসেছে প্রথম স্থানাধিকারী অর্কদীপ মিশ্রর দিকেও। ছাড় পাননি শো'র বিচারকরা। আনন্দ উদযাপন নয়, বরং সারাদিন নানা ধরনের ফোনেই কেটেছে অর্কদীপের জিতে আসার পরের দিন। গোটা ঘটনায় টিভিনাইন বাংলার কাছে মুখ খুললেন নৈহাটির ছেলে।

'ওরা হয়তো ভাবছে লোকসঙ্গীত শিখতে হয় না', ট্রোলের জবাবে মুখ খুললেন অর্কদীপ, পাশে পেলেন ইমন-লোপামুদ্রাকে
ট্রোলড হলেন অর্কদীপ।
Follow Us:
| Updated on: Apr 19, 2021 | 10:02 PM

একেই বলে বোধহয় খ্যাতির বিড়ম্বনা! রিয়ালিটি শো’য়ে প্রথম হয়েও রক্ষে নেই। রবিবার এক গানের অনুষ্ঠানের ফলাফল বের হতেই উত্তাল সোশ্যাল মিডিয়া। সঠিক বিচার হয়নি, বিচারকরা পক্ষপাতদুষ্ট ইত্যাদি নানা কমেন্টে ভরেছে ফেসবুক। ব্যক্তিগত আক্রমণ ধেয়ে এসেছে প্রথম স্থানাধিকারী অর্কদীপ মিশ্রর দিকেও। ছাড় পাননি শো’র বিচারকরা। আনন্দ উদযাপন নয়, বরং সারাদিন নানা ধরনের ফোনেই কেটেছে অর্কদীপের জিতে আসার পরের দিন। গোটা ঘটনায় টিভিনাইন বাংলার কাছে মুখ খুললেন নৈহাটির ছেলে।

গোটা সিজনে অর্কদীপ মূলত বেছে নিয়েছিলেন লোকসঙ্গীত। বাংলার মাটির টান আর সোঁদা গন্ধে মাতিয়ে রেখেছিলেন সিজন। তাঁর জয়ে রাতারাতি ‘বিদ্রোহ’ জানানোর ঘটনায় কোথাও গিয়ে কি লোকসঙ্গীতের জনপ্রিয়তা হ্রাসের ঘটনাকেই চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল? তাঁর উত্তর, “একদমই তাই। তাঁরা হয়তো ভাবেন লোকসঙ্গীত শিখতে হয় না। লোকসঙ্গীত খুব ছোট একটা বিষয়। কোথাও গিয়ে তাঁদের মনে হয় ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীত অনেক বেশি সমৃদ্ধ। তাঁদের উদ্দেশ্যে বলছি। দু’টোই কিন্তু রুট মিউজিক। তাই কোথাও গিয়ে ইণ্ডিয়ান ক্লাসিক্যাল এবং লোকসঙ্গীত একসঙ্গে মিশে যায়।”

অর্কদীপের পাশে দাঁড়িয়েছেন শো’র অন্যতম ‘গুরু’ ইমন চক্রবর্তীও। পাশে দাঁড়িয়েছেন ইমনের স্বামী নীলাঞ্জন ঘোষও। ফেসবুকে এক লাইভের মাধ্যমে ইমন বলেন, “সব বিষয়ে এত বক্তব্য কেন? একটু আশীর্বাদ করুন না ওঁদের। একটা ছেলে প্রথম হয়েছে বলে তাঁকে নিয়ে এত খারাপ কথা কেন লিখছেন? আপনাদের বিবেকে বাঁধছে না?” পাশাপাশি বিচারকদের পক্ষপাত সম্পর্কে যে অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে ইমনের বক্তব্য, “যারা যারা ওখানে বসে আছেন তাঁরা সবাই তো ওই বিষয়ে পারদর্শী। শঙ্কর মহাদেবন থেকে শুরু করে মিকা সিং, শ্রীকান্ত আচার্য…এঁদের নিয়ে কী কমেন্ট করছেন আপনারা? কেন নিজেদের এত নিচে নামাচ্ছেন?”

আরও পড়ুন- টলিউডে করোনার থাবা, আক্রান্ত ঋতব্রত, উপসর্গ গায়িকা পরমারও

ইমনের টিমে ছিলেন অর্কদীপ। সোশ্যাল মিডিয়ায় নেটিজেনের কুৎসিত আক্রমণ, “ইমন টাকা দিয়ে প্রথম স্থান কিনেছেন”। ইমনের পাল্টা জবাব, “সব জায়গায় এত টাকা দেখেন কেন আপনারা? নিজের জন্যই কোনওদিন টাকা দিলামা না অর্কদীপের জন্য কেন দিতে যাব? বাংলা রিয়ালিটি শো’য়ে যদি বাংলা গান না গেয়ে কেউ বিজয়ী হতেন তখন এই আপনারাই তো পাল্টা প্রশ্ন তুলতেন।” অর্কদীপের পাশে দাঁড়িয়েছেন ইমনের স্বামী নীলাঞ্জনও। কিন্তু কুৎসিত আক্রমণ ধেয়ে এসেছে তাঁর দিকেও। এসেছে টাকা দিয়ে সিট কেনার প্রসঙ্গ।

লোপামুদ্রা মিত্রর পোস্টের স্ক্রিনশট 

শুধু অনুষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত বিচারকই নন, তাঁদের পরিবারকে উদ্দেশ্য করেও চলছে নানা মন্তব্য। এই যেমন শো’র অন্যতম বিচারক জয় সরকারকে আক্রমণের পাশপাশি বিক্ষুব্ধ নেটিজেনের একাংশ আঙুল তুলেছেন জয়ের স্ত্রী লোপামুদ্রা মিত্রর দিকেই। সেই সব মানুষদের উদ্দেশ্যে তাঁর বক্তব্য, “…আমার বর বিচারক ছিলেন বলে আমাকেও ছেড়ে কথা বললেন না। “আপনার বরেরা টাকা খেয়ে বিচার করেছে,” – এ কথা আমার পোস্টের তলায় লিখলেন।… যারা বিচারক ছিলেন, তারা বজ্জাত, খারাপ, চোর, সব মেনে নিলাম। যারা প্রথম হয়নি, বা বাদ পড়েছে , তাদের জন্য আপনাদের ভালবাসা ও প্রতিবাদ, মেনে নিলাম।কিন্তু যে ছেলেটি প্রথম হয়েছে ?? বিচারকরা ওকে প্রথম করেছেন।সেই ছেলেটির কি দোষ?? তার ওপর কতটা মানসিক চাপ পড়ছে , তার যন্ত্রণা একবারও ভেবে দেখছেন?? প্রথম হয়ে সে ফাঁসির আসামী ?? ”

অর্কদীপের জয় নিয়ে তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য, “যদি বিচারকরা মনে করে থাকেন , বাংলা অনুষ্ঠান , বাংলা গান যে গায় , তাকে প্রথম করবো। কারোর বলার কিছু আছে ?” কিন্তু ট্রোলিং যেন থামছেই না। অর্কদীপের কথায়, “যারা এ সব করছেন তাঁরা তো আমাকে অজান্তেই আরও বিখ্যাত করে দিলেন। একটা কথাই বলব ওঁদের, ব্যক্তিগত আক্রমণ এভাবে করবেন না। এর বিরুদ্ধে কিন্তু আইন আছে।”

অর্কদীপের পরিবর্তে ওই সব বিক্ষুব্ধ অনুরাগীদের পছন্দর তালিকায় ছিলেন নীহারিকা নাথ। এ বিষয়ে তাঁর সঙ্গে কি কথা হয়েছে অর্কর? তিনি জানালেন, “নীহারিকার সঙ্গে কথা হয়নি, তবে অনুষ্কার সঙ্গে হয়েছে। আমরা সবাই এত ভাল বন্ধু। এই বিষয়টি নিয়ে হাসাহাসি করছিলাম আমরা।” প্রসঙ্গত অনুষ্কাও ওই শো’র টপ সিক্সে জায়গা করে নিয়েছিলেন।

সারা বাংলার সেরা হয়েছে ছেলে, কিন্তু সঙ্গী হয়েছে ট্রোলও। বাবা-মা কী বলছেন? অর্কদীপের সপ্রতিভ জবাব, “একটা জিনিস ভাল, মায়ের কাছে স্মার্টফোন নেই। মা এ সবের কিছুই জানে না। বাবা দেখেছে। বাবা তো বেশ মজাই পেয়েছে গোটা ব্যাপারটায়।” তবু, বিতর্ক যেন থামতেই চাইছে না…