অষ্টমীর রাত আমার মায়ের কাছে যাওয়ার সময়। মালদায় আমার বাড়ি। আমি মায়ের কাছে থাকি পুজোর শেষটা। মা, দাদা, বৌদি আর আমাদের বাড়ির তিনটে পোষ্য কালু, ভোদু এবং বাণী। ওদের সঙ্গে সময় কাটাই। আমার বন্ধুরা ষষ্ঠীর দিন ঢুকে যায়। শহরের বাইরে থাকে যারা সকলে চলে এসেছে আগেই। ষষ্ঠী থেকেই ফোন আসছে। নবমীতে তাই আমার উপর প্রবল চাপ।
বিয়ের আগের বছর পর্যন্ত মালদায় কেটেছে পুজো। মাঝে দু-এক বছর চাকরি করতাম বলে পুজোর সব কটা দিন মালদায় থাকা হয়নি। তবুও সারা বছরের ছুটি জমিয়ে পুজোর সময় নেওয়ার চেষ্টা করতাম। আমার বাড়ির সামনেই পাড়ার পুজো হয়। ভোগ আমাদের বাড়িতেই রান্না হত এতদিন। কারণ আমাদের বড় বাড়ি, অবিভক্ত ছিল। এখন আমাদের বাড়ির সামনে একটা কর্মাশিয়াল কমপ্লেক্স হয়েছে, তার একতলায় খাওয়ানো হয়।
এই পুজোয় আমার বাবা খুব ইনভলভ ছিলেন। দাদা ইনভলভ। আমাদের বাড়ির প্রত্যেকেই অংশ নেয়। আগে বিজয়া দশমীতে অনুষ্ঠান হত। তার প্রচুর রিহার্সালও আমাদের বাড়িতে হত। সেখান থেকে প্রচুর প্রেমও হয়েছে আমার। বিয়ের পর আমার বরের সঙ্গে এত ভাল অ্যাডজাস্ট হয়ে গিয়েছে, আর নতুন করে প্রেম করার ইচ্ছে যে নেই তা নয়, তবে আবার নতুন কারও সঙ্গে অ্যাডজাস্ট করতে পারব না। কিন্তু পুরনো বয়ফ্রেন্ডদের সঙ্গে যখন দেখা হয়, যারা আমাকে পাত্তা দেয়নি, এখন যখন দেখি তারা বুড়িয়ে গিয়েছে, চারটে বাচ্চা নিয়ে বিব্রত, তাদের সামনে দিয়ে যখন আঁচল উড়িয়ে চলে যাই, তারা তাকিয়ে থাকে, আমার কিন্তু মজাই লাগে।
দর্জিপাড়ার মিত্র বাড়ির পুজো পুরনো কলকাতার দেখার মতো পুজো। এটাই আমার শ্বশুরবাড়ি। মা সারদা আমাদের বাড়িতে ভোগ রান্না করেছিলেন। ঘরোয়া ভাবেই পুজো হয়। কিন্তু সেটাও দেখার মতো। অনেকে আসেন আমাদের বাড়িতে। নবমী পর্যন্ত আমরা নিরামিষ খাই। আমার শাশুড়ি চলে গিয়েছেন। ওঁর একটা শাড়ি লাল পাড় ঘিয়ে রঙা শাড়ি ননদ আমাকে দিয়েছে। ওটাই মা বরণের দিন পরব ভেবেছি।
আরও পড়ুন, Durga Puja 2021: আমার কাছে অষ্টমী মানে শাড়ি, আর সন্ধের আকর্ষণ ধুনুচি নাচ: শ্বেতা ভট্টাচার্য