Makar Sankranti 2022: ঘরের মেয়ে ‘টুসু’কে আদর যত্নে ভরিয়ে দিতে আয়োজনে কোনও খামতি রাখেন না রাঢ় বঙ্গের মানুষেরা

TV9 Bangla Digital | Edited By: রেশমী প্রামাণিক

Jan 13, 2022 | 3:46 PM

টুসু পুজোকে কেন্দ করেই মেতে ওঠে রাঢ় বাংলা। আজ সারারাত ধরে চলে টুসুর জাগরণ পালা। এদিনও বেস কিছু বাড়িতে পিঠে হয়। তবে কাল ভোর ভোর স্নান সেরে তবেই মেয়েরা টুসুর জন্য পিঠে বানায়

Makar Sankranti 2022: ঘরের মেয়ে টুসুকে আদর যত্নে ভরিয়ে দিতে আয়োজনে কোনও খামতি রাখেন না রাঢ় বঙ্গের মানুষেরা
টুসু যেন ঠিক ঘরের মেয়ে

Follow Us

দুর্গাপুজো নয়, রাঢ়বঙ্গের পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামের মানুষদের কাছে প্রধান উৎসব হল মকর পরব। এই পরবে সবাই বাড়ি ফেরে, নতুন জামা পরে, পিঠে-মাংস ভাতে মেতে ওঠেন উৎসবে। দিনের শেষে টুসু ভাসিয়ে ভারাক্রান্ত মন দিয়ে বাড়ি ফেরেন। বছরের এই একদিনই মেয়ে টুসু ফেরে বাড়িতে। সংক্রান্তির আগের দিন অর্থাৎ আউনি-বাউনির দিনে শুরু হয় টুসুর পুজো। রাত জেগে মেয়ে টুসুকে সাজিয়ে চলবো পালাগান। শীতের রাতেও সবাই মিলে জড়ো হন উঠোনে। সেখানেই পিঠে, পুলি, পায়েসের সঙ্গে চলে উদযাপন।

টুসুকে এখানকার মানুষরা পুজো করেন লক্ষ্মী রূপে। নিজের মেয়ের মতই টুসুকে সাজান নিজের হাতে। রঙিন কাগজে বাঁশ দিয়ে তৈরি হয় নানারকমের রংবাহারি চৌডল। সেই চৌডলই জলে ভাসানো হয়। যা জলে ভাসানো হয়। তার জন্য সংক্রান্তির দিন পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রামের বিভিন্ন নদী এবং জলাশয় যেন রঙিন হয়ে ওঠে। এই উৎসবকে কেন্দ্র করে পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলি কার্যত বনধের চেহারা নয়। দোকানপাট সব বন্ধ। সবাই আজ শহর থেকে গ্রামমুখী। আলাদা ছন্দ, আলাদা সুরে টুসু গান গাওয়া হয় এই পৌষসংক্রান্তিতে। টুসু গান আসলে মানুষের হৃদয়ের কথা। লোকজীবনের সুখদুঃখ, হাসি-কান্না টুসুর সুরে উঠে আসে।

তবে টুসু কিন্তু কোনও দেব-দেবী নয়। গ্রাম বাংলায় প্রতীক টুসু। চাষ আবাদির সঙ্গে জড়িয়ে এই পুজো। ফলন যাতে ভাল হয়, কৃষিকাজের উন্নতি এসবের জন্যই কামনা জানানো হয় টুসুর কাছে। গোটা উৎসবের মতো টুসুর ভাসানও বেশ বর্ণময়। টুসুর গানের পরতে পরতে ধরা পড়ছে জীবনের প্রাপ্তি, অপ্রাপ্তি। গানের কথা বুঝিয়ে দেয় যেন তাকে যেতে দেওয়া হবে না। শীত চলে গেলে ভাসান দেওয়া হবে। উৎসবের আগের রাতে হয় জাগরণ পালা।

” টুসু ধনকে জলে দিও না/ আমার মনে বড় বেদনা /টুসু ধনকে জলে দিও না”- এই গানের মাধ্যমেই হয় টুসুর বিসর্জন। টুসুর জন্য সকালে উঠে স্নান সেরে তবেই রান্নাঘরে যান মেয়েরা। মাটির উনুনে সরা চাপিয়ে নানা পিঠে বানানো হয়। ফুল, আমপাতায় পুজো সেরে মাটির সরায় খই-বাতাসা-মুড়কি-পিঠে সাজিয়ে টুসুকে বিদায় জানানো হয়। তবে মেয়ে টুসুর জন্য আয়োজনে কোনও খামতি রাখেন না তাঁরা।

আরও পড়ুন: Jatra of Bengal: কোভিড বিধি মেনে যাত্রা করার অনুমতি দেওয়ার বিষয়ে পদক্ষেপ নেবে সরকার: সংগ্রামী যাত্রা প্রহরির যুগ্ম সম্পাদক অনুভব দত্ত

Next Article