“খুব বড় ক্ষতি হয়ে গেল। একজন ভাল শিল্পী চলে গেলেন শুধু না, একজন ভাল মানুষ চলে গেলেন, তাও এইভাবে, এটা সবচেয়ে খারাপ”, বললেন অমিত কুমার। কেকে-র এইভাবে অনুষ্ঠান করতে করতে অসুস্থ হয়ে পড়া, তারপর চলে যাওয়া কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না অমিত। তাঁর প্রশ্ন নজরুল মঞ্চের মতো এতবড় একটি জায়গায় এমন অব্যবস্থা কী করে সম্ভব। তিনি খবর শুনে যা দেখেছেন তার পরিপ্রেক্ষিতে এই প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁর মতে, শিল্পীদের অনুষ্ঠানে শুধু নিয়ে গেলেই হবে না, তাঁদের স্বাস্থ্যের প্রতি যত্নবানও হতে হবে উদ্যোক্তাদের। অ্যাম্বুলেন্স, ডাক্তার, সঠিক পরিবেশ অর্থাৎ এসি ঠিক মতো কাজ করছেন কিনা এগুলো দেখাও উদ্যোক্তাদের কাজ। ২৫০০ হাজার একটা জায়গায় কীভাবে ৭০০০ হাজারের বেশি দর্শক ঢুকে পড়েন, এটা বুঝতেই পারছেন না।
“ময়নাতদন্তে জানা যাবে সত্যিটা কী, কিন্তু যদি এই সব কারণে এমন অসময়ে চলে গিয়ে থাকেন কেক, তাহলে খুব মর্মান্তিক”, মন্তব্য অমিতের। ডাক্তার কুণাল ঘোষ ঠিক একই কথা বলেছেন। তাঁর কথাকে মান্যতা দিয়েই অমিতও একই প্রশ্ন করেছেন। একসঙ্গে গান করেননি কোনও ছবিতে, তবে অনেক শো করেছেন তাঁরা। এক মাস আগেই একসঙ্গে দুবাইতে শো করতে গিয়েছিলেন। কেকে তাঁদের বাড়িতে আসবেন বলেছিলেন। ফোন নম্বরও আদান-প্রদান করেন তাঁরা। “কী হল নম্বর নিয়ে, আর ওঁর আসা হবে না আমার বাড়িতে,” স্বগোক্তির মতো বললেন অমিত। তাঁর বাবার অনুরাগী ছিলেন কেকে। আর তিনি কেকে-কে ভালবাসতেন। কারণ শুধু গান নয়, তাঁর ব্যবহার।
“এত ভাল শিল্পী, কিন্তু কোনও অহংকার ছিল না। বাবার অনুরাগী ছিল। আমিও ওঁকে খুব ভালবাসতাম। কাউকে নকল না করে নিজস্ব একটা স্টাইল তৈরি করে নিজের জায়গা তৈরি করে কেকে। গান না শিখেও এত ভাল গান গাওয়া যায়, অধ্যাবসায় থাকলেই”, এক নিঃশ্বাসে কথাগুলো বলে থামলেন অমিত। প্রথমে যখন স্ত্রী রিমা খবরটা জানান, বিশ্বাসী করতে পারেননি তিনি। “আমি সঙ্গে সঙ্গে কেকে-এর ছেলে বনিকে ফোন করি। ও খবরটা ঠিক বলে জানায়। বেশ কিছুক্ষণ বিশ্বাসই করতে পারছিলাম না। মানছি চলে যাওয়ার বয়স হয় না, কিন্তু এত কম বয়সে!” এখন অমিত ঘোরে রয়েছেন। তাঁর খালি চ্যাপলিনের সেই উক্তিই বারবার মনে হচ্ছে, ‘এই নীতিহীন জগতে কোনো কিছুই স্থায়ী নয়, এমনকি আমাদের কষ্টগুলোও নয়।’