দেশ জুড়ে চর্চার কেন্দ্রে বিতর্কিত ছবি ‘দ্য কেরালা স্টোরি’। ইতিমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গে এই ছবি সরকারি ভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সোমবার রাতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ফিল্মটি দেখানো হলে রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে। তাই, এই ফিল্মটির প্রদর্শনীর উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফে। এর পরেই এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন, ছবিটির পরিচালক সুদীপ্ত সেন।
সংবাদ সংস্থা এএনআইকে তিনি বলেন, “যা হয়েছে তা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। ছবিটা না দেখেই তিনি কী করে বলতে পারেন ওই ছবি আইন লঙ্ঘন করেছে? কলকাতা ওই ছবি মন থেকেই দেখা শুরু করেছিল। কোনও অনভিপ্রেত ঘটনা কিন্তু ঘটেনি। কোনও প্রেক্ষাগৃহ থেকেই কোনও দাঙ্গার খবর আসেনি।” এখানেই শেষ নয়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর অভিমান উগরে দিয়ে সুদীপ্ত আরও যোগ করেন, “ওরা আমায় আশীর্বাদ করেছিলেন। কারণ আমি নিজেও বাঙালি। ওঁরা আমায় ভালবাসা জানিয়েছিলেন কারণ এরকম একটা বিষয় আমি নেছে নিয়েছিলাম। কিন্তু হঠাৎ করেই গতকাল সন্ধেবেলা জানি না দিদিকে কী বোঝানো হয়েছে, উনি রাতারাতি ছবিটিকে নিষিদ্ধ করে দিলেন। মুক্ত চিন্তার পথপ্রদর্শক দিদি ও মুহুয়া মিত্র। নাগরিক অধিকার নিয়ে তাঁরা কথা বলেন। যখন বিবিসির তথ্যচিত্র নিষিদ্ধ হচ্ছিল তখন তাঁরা তার প্রতিবাদ করেছিলেন। যখন পদ্মাবত নিষিদ্ধ হয়েছিল তখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই প্রথম রাজনৈতিক নেতা যিনি এই ছবির পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। তাই তাঁর কাছ থেকে এরকমটা একটা সিদ্ধান্ত সত্যিই অপ্রত্যাশিত। আমার মনে হয় যা হয়েছে তা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত। আমি মনে করি তাঁকে ভুল বোঝানো হয়েছে, আমি ওঁকে অনুরোধ করছি, ছবিটি দেখবার জন্য।
কী রয়েছে এই ছবিতে? কেনই বা তা নিয়ে এত বিতর্ক? ছবির কেন্দ্রীয় চরিত্রের নাম শালিনী উন্নিকৃষ্ণণ। জন্মসূত্রে হিন্দু, শালিনী পাকচক্রে কেন ফতিমা হন বা হতে বাধ্য হন, তা নিয়েই ছবি। শুধু তাই-ই নয়, সিরিয়ার জঙ্গি বাহিনীতে তাঁর যোগদান, অসহায়তা, দুর্বিষহ জীবনই ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছেন তিনি, এমনটাই দাবি করেছেন সুদীপ্ত। ট্রেলারে দাবি করা হয়েছে, কেরল থেকে ৩২ হাজার মহিলা ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্মান্তরিত হতে বাধ্য হয়েছেন। পরিচালক ট্রেলারে আরও দাবি করেছেন, শুধু হিন্দু মহিলারাই নন, অন্য ধর্মের মহিলাদেরও এই ধর্মান্তকরণ প্রক্রিয়ায় ঠেলে দেওয়া হয়েছে। বিতর্ক চললেও এই ছবি কিন্তু বক্স অফিসে বেশ ভালই আয় করছে। কথাতেই তো বলে, “ইতিবাচক অথবা নেতিবাচক, দিনের শেষে প্রচার আদপে প্রচারই।”