ভারতের বুকে বৈচিত্র সর্বত্র। প্রকৃতিই হোক বা সিনেমার পর্দায়, স্থান কাল পাত্র বিশেষে ভিন্ন তাঁর ধাঁচ-ধরন। আঞ্চলিক ভেদে কখনও তার স্বাদ গল্প আলাদা, কখনও আবার কালের বিবর্তনে পাল্টে পাল্টে যায় ছবির খুব চেনা ছবি। ফলে নানা স্বাদের নানা ধাঁচের পর্দার গল্পের মাঝে সেরার সেরা হওয়ার প্রতিযোগিতা অতীতেও ছিল বর্তমানেও রয়েছে। কিন্তু সেই সেরার টক্করে যখন এগিয়ে থাকে বাংলা, তখন তা রূপোলী পর্দার গর্ব। বাংলার বুকে এমন এমন সৃষ্টি রয়েছে, যা বিশ্বের দরবারে ভারতীয় চলচ্চিত্রকে পৌঁছে দিয়েছে পলকে।
এবার ইন্টারন্যাশানাল ফেডারেশন অফ ফিল্ম ক্রিটিক-এর তরফ থেকে প্রকাশ করা হল ভারতের চিরকালিন সেরা ১০ ছবির তালিকা। যা যুগে যুগে প্রশংসিত ও সিদে দুনিয়ার সম্পদ। সেই তালিকায় থাকা প্রথম তিনেই তিন বাঙালি পরিচালকের নাম জ্বলজ্বল করতে দেখে এক কথায় আনন্দের জোয়ারে ভাসছে টলিপাড়া। শুক্রবার তালিকা প্রকাশ হওয়া মাত্রই তা সকলের নজরের কেন্দ্রে জায়গা করে নেয়। সত্যিজিৎ রায়, ঋত্বিক ঘটক ও মৃণাল সেন, তিন কিংবদন্তীর মধ্যে প্রথম কে!
১. সত্যজিৎ রায়
ছবির নাম ‘পথের পাঁচালি’। বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা উপন্যাস ‘আম আঁটির ভেঁপু’ থেকে নেওয়া এই কাহিনি। এই ছবির জন্য সত্যজিৎ রায় পেয়েছিলেন অস্কার। টানা চার বছর ধরে নানা অর্থিক অনটনের সঙ্গে লড়াই করে এই ছবি তৈরি করেছিলেন তিনি। ‘ইতালিয়ান নিউরিয়ালিজ়ম’ প্রথম চোখ খুলে দিয়েছিল সত্যিজৎ রায়ের। ‘বাই সাউকেল থিপ’ দেখার পরই স্থির করেছিলেন সাধারণের পাতে সাধারণের গল্প তুলে দেবেন। আর তাতেই সৃষ্টি হয় ইতিহাস।
২. ঋত্বিক ঘটক
ঋত্বিক ঘটক মানেই ছবির মধ্যে এক না বলা যন্ত্রণার আভাস। দেশ ভাগের যন্ত্রণা যে মানুষটিকে তাড়িয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছিল, তাঁর প্রতিটা ছবির প্রতিটা ফ্রেমেই সেই যন্ত্রণাকে তিনি ভীষণ যত্নের সঙ্গে ফুটিয়ে তুলতে পারতেন। যার মধ্যে এক অনবদ্য সৃষ্টি ‘মেঘে ঢাকা তারা’। তালিকায় দ্বিতীয় নাম এটাই। সুপ্রিয়া দেবীর মতো এক বাণিজ্যিক ছবির অভিনেত্রীকে মেকাপ ছাড়া পর্দায় এভাবেও ব্যবহার করা যেতে পারে, তাঁর আগে ও পড়ে কেউ ভাবেননি। শেষ দৃশ্যে চাবুকের শব্দের ব্যবহারই হোক বা গল্পে থাকা সম্পর্কের চানাপোড়েন, মেঘে ঢাকা তারা ছবির প্রতিটি উপাদানই ভারতীয় চলচ্চিত্র জগতের কাছে সম্পদ।
৩. ভূবন সোম
ফলত তিনে স্থান পরিচালক মৃণাল সেলের। তাঁর ভূবন সোম ছবিটি মুক্তি পেয়েছিল ১৯৬৯ সালে। উৎপল দত্ত নিঃসন্দেহে ছবির সম্পদ, এছাড়াও ছবিতে ছিলেন সুহাসিনী মূলে। এই ছবিতে প্রথম ভাষ্যকার হিসেবে জায়গা করে নিয়েছিলেন অমিতাভ বচ্চন।