‘কলকাতার রসগোল্লা’ দেবশ্রী রায় নিজে কি খান সেই মিষ্টি? একান্তভাবে জানালেন TV9 বাংলাকেই
'Kolkatar Rosogolla' Debasree Roy: বহু বছর আগে একটি গানের জন্য ‘কলকাতার রসগোল্লা’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছিলেন দেবশ্রী। রসগোল্লা যেন দেবশ্রীরই সমনাম হয়ে ওঠে রাতারাতি। বাঙালি দর্শক তো বটেই, দেবশ্রীও বলেছেন, তিনি ছাড়া আর কেউই কলকাতার রসগোল্লা হতে পারবেন না কোনওদিনও। শীতকালে নলেন গুড়ের রসগোল্লা খাওয়ার ধুম ওঠে খুব। আচ্ছা, দেবশ্রী কি নিজে রসগোল্লা খান? এ ব্যাপারে দেবশ্রীর সঙ্গে মজাদার কথপোকথন হল TV9 বাংলার।

শোনা যায়, ১৮৬৮ সালে রসগোল্লা আবিষ্কার করেছিলেন উত্তর কলকাতার ময়রা নবীনচন্দ্র দাস। স্ত্রী ক্ষীরোদমণি দেবীর আবদারেই নাকি বাঙালির ‘সেরা মিষ্টি’ তৈরি করতে সক্ষম হয়েছিলেন তিনি। এই তথ্য পাভেল পরিচালিত ‘রসগোল্লা’ ছবিতেও পাওয়া যায়। কিন্তু দ্বিমত আছে বহু। ১৬ শতাব্দীতে নাকি এই মিষ্টান্ন আবিষ্কৃত হয় বাংলাদেশে। আবার ওড়িশাবাসীদের দাবি, এই মিষ্টি তাঁদের তৈরি। যদিও এত বিতর্কের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গেরই জয় হয়। ২০১৭ সালে মেলে সেই স্বীকৃতি। কিন্তু যতই যাই-ই হোক না কেন, রসগোল্লা বাংলার ঠিকই। কিন্তু ‘কলকাতার রসগোল্’লা একজনই—তিনি জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেত্রী দেবশ্রী রায়।
১৯৯২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘রক্তে লেখা’ ছবিতে অভিনয় করেছিলেন দেবশ্রী রায়। সেই ছবির পরিচালক ছিলেন দেবশ্রীর জামাইবাবু, অর্থাৎ বলিউড অভিনেত্রী রানি মুখোপাধ্যায়ের বাবা রাম মুখোপাধ্য়ায়। ছবিতে দু’জন নায়ক ছিলেন। একজন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় এবং অন্যজন চিরঞ্জিত চক্রবর্তী। এক পকেটমারের চরিত্রে দেবশ্রীকে দেখা যায় ছবিতে। সে রাস্তায় নাচে। সুন্দরীর নাচ দেখে লোকে ভুলে যায় এবং সেই কৌশলে পকেটমারি করে। দৃশ্যটি দেখানো হয়েছিল গানের মাধ্যমে। এবং যে গান দেবশ্রীর লিপে বসানো হয়েছিল তা হল ‘আমি কলকাতার রসগোল্লা’। গানটি গেয়েছিলেন কবিতা কৃষ্ণমূর্তি, সুর দিয়েছিলেন বাপ্পি লাহিড়ি এবং গানের কথা ছিল পুলক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। কলকাতার টালিগঞ্জে শুটিং হয়েছিল রাস্তায়। কখনও হলুদ ঘাগরা, কখনও লাল পাড় সাদা শাড়িতে কোমর দুলিয়ে নেচেছিলেন ছিপছিপে দেবশ্রী। আপামর বাঙালির হৃদয় হরণ করেছিলেন সেই নাচেই।
এবং এই গানটি এত জনপ্রিয় হয়েছিল যে, সঙ্গে-সঙ্গে ‘কলকাতার রসগোল্লা’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছিলেন দেবশ্রী। রসগোল্লা যেন দেবশ্রীরই সমনাম হয়ে ওঠে রাতারাতি। বাঙালি দর্শক তো বটেই, দেবশ্রীও বলেছেন, তিনি ছাড়া আর কেউই কলকাতার রসগোল্লা হতে পারবেন না কোনওদিনও। শীতকালে নলেন গুড়ের রসগোল্লা খাওয়ার ধুম ওঠে খুব। আচ্ছা, দেবশ্রী কি নিজে রসগোল্লা খান? এ ব্যাপারে দেবশ্রীর সঙ্গে মজাদার কথপোকথন হল TV9 বাংলার।
TV9 বাংলা: আচ্ছা, ওই গানটার জন্য যে আপনাকে ‘কলকাতার রসগোল্লা’ বলা হয়, আপনি নিজে রসগোল্লা খান?
দেবশ্রী: ও মা খাবো না কেন? ওটা আমার প্রিয় মিষ্টি। আমি তো আমার পোষ্যদেরও খাইয়েছি…
TV9 বাংলা: সে কী, কুকুরদের তো মিষ্টি খাওয়া ঠিক না। ওদের লোম পড়ে… তা-ও আপনি খাওয়ান…?
দেবশ্রী: হ্যাঁ। ডাক্তাররা তো বলেন খাওয়াতে। এটা ওদের পেটে অ্যান্টাসিডের মতো কাজ করে। ওদের হজমশক্তি বাড়িয়ে দেয়। যে বা যাঁরা মিষ্টি খান না, ডায়েট করেন, তাঁদেরও খাওয়া উচিত। এটা তো ছানা দিতে তৈরি একটা মিষ্টি। এটা স্বাস্থ্যের জন্যে ভাল।
TV9 বাংলা: আপনি ক’টা রসগোল্লা খেতে পারেন একসঙ্গে?
দেবশ্রী: বেশ কয়েকটা খেতে পারি। এখন তো আবার নলেন গুড়ের রসগোল্লা পাওয়া যাচ্ছে। জানেন তো, কলকাতার বাইরে জেলার রসগোল্লা খেতে বেশি ভাল লাগে আমার; বাড়ির সামনের দোকানেও ভাল রসগোল্লা পাওয়া যায়।
TV9 বাংলা: এই মুহূর্তে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির কোন তারকাকে আপনি রসগোল্লা খাওয়াতে চাইবেন?
দেবশ্রী: আমি খুব আনন্দ পেয়েছি যে, মিঠুন চক্রবর্তী পদ্মভূষণ পেয়েছেন। তাঁকে আমি রসগোল্লা খাওয়াতে চাইব। সামনেই একসঙ্গে একটা কাজ করছি আমরা। তখন দেখা হবে। খাওয়াব।
TV9 বাংলা: আর কোন তারকাকে রসগোল্লা খাওয়াবেন না?
দেবশ্রী: (একটু ভেবে) যাঁর ডায়াবেটিস আছে, তাঁর মুখের সামনে থেকে রসগোল্লার হাঁড়িটাই কেড়ে নেব আমি।
TV9 বাংলা: আপনি ছাড়া ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে আর কোন অভিনেত্রীকে ‘কলকাতার রসগোল্লা’ মনে হয় আপনার?
দেবশ্রী: আমি ছাড়া আর কেউ ‘কলকাতার রসগোল্লা’ হতেই পারবে না। অসম্ভব। হয়েছিল তো রিমেক। পেরেছে কি ধারেকাছে তৈরি করতে আমার মতো কাউকে (অভিনেত্রী রুক্মিণী মৈত্র ‘কলকাতার রসগোল্লা’ গানের রিমেকে নেচেছিলেন ‘ককপিট’ ছবিতে)। পারেনি… পারবেও না… এটা আমার চ্যালেঞ্জ!
প্রতিবেদক: স্নেহা সেনগুপ্ত





