Exclusive Iman: মহিলাদের সেক্স অবজেক্ট হিসাবে দেখা বন্ধ হোক: ইমন চক্রবর্তী

Iman Chakraborty: ৩৫ বছর বয়স হল। সকাল ৭.১৫-তে জন্মেছিলাম। তাই ওই সময়ে কাছের মানুষরা আশীর্বাদ করেন। আর প্রতিবারই বন্ধুবান্ধবরা জন্মদিনের আগে রাতে শুভেচ্ছা জানাতে আসে। এবারও তাই হল...

Exclusive Iman: মহিলাদের সেক্স অবজেক্ট হিসাবে দেখা বন্ধ হোক: ইমন চক্রবর্তী
Follow Us:
| Updated on: Sep 13, 2024 | 3:25 PM

এবারের জন্মদিন অন‍্যরকম। পায়েস খাওয়ায় মন নেই গায়িকা ইমন চক্রবর্তীর। বরং জন্মদিনের ছুটি বাতিল করেছেন। কেন? কিছু প্রশ্নের উত্তর দিলেন TV 9 বাংলা-কে।

TV 9 বাংলা: জন্মদিনে পরিকল্পনা কী?

ইমন: সত্যি কথা বলছি, এবার জন্মদিনে একটা শো করছি। পুরো মাস জুড়ে যে ক’টা শো ছিল, বাকিগুলো বাতিল হয়েছে। দু’-তিন বছর আগে হলেও, জন্মদিনে শো করার কথা ভাবতাম না। পরিবারের মানুষজনের কাছে থাকতাম। কিন্তু এই মুহূর্তে যা অবস্থা একটাও শো হলে আমি ঈশ্বরের কাছে কৃতজ্ঞ। ৩৫ বছর বয়স হল। সকাল ৭.১৫-তে জন্মেছিলাম। তাই ওই সময়ে কাছের মানুষরা আশীর্বাদ করেন। আর প্রতিবারই বন্ধুবান্ধবরা জন্মদিনের আগে রাতে শুভেচ্ছা জানাতে আসে। এবারও তাই হল।

জন্মদিনে কী খেতে ইচ্ছা করছে?

ইমন: পায়েস খেতে ইচ্ছা করছে, সেটা বলার মতো অবস্থায় পর্যন্ত নেই। আরজি কর-এ যে নৃশংস ঘটনাটা ঘটল, সেটা মাথার মধ্যে ঢুকে যাওয়ার পর মাথার অর্ধেকটা কাজ করছে না। তার সঙ্গে শিল্পীদের উপর সোশ্যাল মিডিয়ায় যে কদর্য আক্রমণ হচ্ছে, যে অসভ্যতা হচ্ছে, সেটায় আমি ভীষণ বিচলিত। কীভাবে নিজেকে সামলাব বুঝতে পারছি না।

আরশাদ আলি খানের সঙ্গে আপনার ‘মেঘ মেদুর বরষায়’ গানটা মুক্তি পেল। কেন গান মুক্তি পাচ্ছে এই সময়, সেটা নিয়েও কেউ-কেউ প্রশ্ন করছেন। বিষয়টা অদ্ভুত নয়?

ইমন: নিজের একটা কাজ মুক্তি পেল। তাতে আনন্দ পাব নাকি ভয় পাব, গুলিয়ে যাচ্ছে। শিল্পীদের অনেক ধৈর্য্য রাখতে হয় জানি। অনেক স্যাক্রিফাইস করতে হয়, তা-ও জানি। কিন্তু সব পেশার মানুষ কাজ করছেন, আর শিল্পীরা কাজ করলেই দোষ, আর্টিস্টদের ক্ষেত্রে এমন অসহিষ্ণুতা মেনে নেওয়া যায় না। আমার খুব খারাপ লাগছে। আমি বলব, এটা কোভিডের থেকেও খারাপ সময়।

নিজেকে এই খারাপ সময়ে কীভাবে সামলাচ্ছেন?

ইমন: পারছি না। আমার একটা সময় সিভিয়ার ডিপ্রেশন ছিল। এরকম কিছু ঘটলে সেই ডিপ্রেশন আবার মাথাচাড়া দেয়। ভয় লাগে। অ্যাংজাইটি হয়। এবার লেখাটা পড়ে, অনেকে বলবেন, ন্যাকামি করছি। কিন্তু সেটা নয়। আমি নিজের কষ্টের কথা বলছি।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আপনার গান পছন্দ করেন। দু’ জনের একসঙ্গে ছবি দেখা যায়। এই ঘটনার পর সেরকম একটা ছবি নিয়ে তার উপর ক্রস চিহ্ন দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাসিয়ে দেওয়া হল। কী বলবেন?

ইমন: কারও আমার গান পছন্দ, সেটা আমার দোষ হতে পারে না। মুখ্যমন্ত্রীর আমার গান পছন্দ, সেটা আমার দোষ নয়! এই ধরনের অসভ্যতা যাঁরা করছেন, তাঁদের বলি, বিনোদনকে এত হালকাভাবে নেবেন না। যে কোনও পেশার মানুষ সারা দিন পরিশ্রম করে বাড়ি ফিরে হয়তো গান শুনে কিছুটা ভালো সময় কাটান। তাই সিনেমা, গান এগুলো থামবে না। অরিজিৎ সিং যে গানটা গাইলেন আরজি কর কাণ্ডের পর, তা প্রতিবাদের ভাষা হয়ে উঠল। তার মানে উনি নিজের বাকি কাজ বন্ধ করে দেবেন, সেটা হয় না। শিল্পীরা প্রতিবাদ করলে ‘রাম-বাম’ বলা হচ্ছে। আর প্রতিবাদ না করলে ‘চটিচাটা’ বলা হচ্ছে! শিল্পী তাঁর কাজ করলে, বয়কটের ডাক দেওয়া হচ্ছে। এগুলো বন্ধ হওয়া দরকার। মানুষকে সম্মান জানানোর জন্যই তো এত বড় প্রতিবাদ গড়ে তোলা হল!

নিউলি ম্যারেড কাপলদের প্রতিবাদে পথে দেখা যাচ্ছে। বাচ্চাদের দেখা যাচ্ছে বাবা-মায়ের সঙ্গে প্রতিবাদে যোগ দিতে…

ইমন: নিউলি ম্যারেড কাপল বলে বিশেষ কিছু, সেটা নয়। আমি এমন এক দম্পতিকে চিনি, যাঁরা রেজিস্ট্রি ম্যারেজের দিনই মিছিলে হাঁটতে চলে গিয়েছেন। সকলে মিলে যে প্রতিবাদ গড়ে তোলা হচ্ছে, সেটাই বড় ব্যাপার। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনীক জানা (গায়ক), সাত বছরের একজন বাচ্চাকেও ট্রোল করা হয়! আমাদের কথা বাদ দিলাম। তাই সবাইকেই পথে নামতে হবে।

কিছু তারকা এমন কাণ্ড ঘটাচ্ছেন, যা নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে। কী বলবেন?

অস্বীকার করতে পারি না, কিছু অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটছে। অনেকে মিছিলে হাঁটতে গিয়ে এমন প্রসঙ্গ উত্থাপন করছেন যা অপ্রয়োজনীয়। অনেকে আইনি পদক্ষেপ না করে শুধু সোশ্যাল মিডিয়ায় কিছু লিখে, তারপর থেমে যাচ্ছেন। তবে এটাই বলব, কয়েকজনকে বাদ দিলে আমার পরিচিত বেশিরভাগ মানুষ একদম অন্তর থেকে এই প্রতিবাদ গড়ে তুলেছেন।

জন্মদিনে প্রায় সকলেরই একটা-দু’টো প্রার্থনা থাকে। আপনি কী চাইবেন?

ইমন: সত্যিই যদি আমার প্রার্থনা ঈশ্বর শুনতে পান, তাঁকে বলব, নির্যাতিতাকে যিনি ধর্ষণ, খুন করলেন, তাঁর চরম শাস্তি চাই। পুরো দেশ জুড়ে মহিলাদের উপর যে অত্যাচার হয়, যে অশালীন আচরণ হয়, সেটা যেন থামে। মহিলাদের সেক্স অবজেক্ট হিসাবে দেখা বন্ধ হোক। একজন মহিলার শরীরের দিকে যে কোনও সময় তাকিয়ে যৌন-ভাবনা ভাবা যায় না, সেই শিক্ষা যেন পুরুষদের হয়!