Lata Mangeshkar:নস্টালজিক কলকাতার ১৬ অক্রুর দত্ত লেন, ভি.বালসারার ডাকে নিয়মিত আসতেন লতা

TV9 Bangla Digital | Edited By: Shubhendu Debnath

Feb 06, 2022 | 10:56 PM

Lata Mangeshkar: ষাটের দশকে 'বিদ্যাপতি' ছবির সুরকারের দায়িত্ব পান ভি বালসারা। বাংলার ধনঞ্জয় ভট্টাচার্যের সঙ্গে তিনি বাছলেন লতা মঙ্গেশকরকেও। কিন্তু লতা মুম্বইতে থাকেন, রিহার্সাল কীভাবে হবে, অগত্যা লতাই এলেন অক্রুর দত্ত লেনের ওই ছোট্ট ঘরে। আজ লতা মঙ্গেশকরের প্রয়াণে বউবাজার এলাকার ১৬ অক্রুর দত্ত লেনের পুরোনো বাসিন্দারা কিছুটা নস্টালজিক।

Follow Us

কলকাতা: ১৯৫৪ সাল, মাত্র একত্রিশ বছর বয়সে মুম্বই ছেড়ে কলকাতার স্যুইন হো স্ট্রিটের একটি বাড়িতে থাকতে শুরু করলেন প্রবাদপ্রতিম সুরের জাদুকর ভিয়েস্তাপ বালসারা। পার্সি বালসারা বলিউডের যে সব গায়কদের গানে ইন্সট্রুমেন্ট বাজাতেন তাঁদের সিংহভাগই ছিলেন কলকাতার শিল্পী। পঙ্কজকুমার মল্লিক, যূথিকা রায়, কাননদেবী, কমল দাশগুপ্তের মতো প্রবাদপ্রতিম শিল্পীরা সকলেই তখনকার বিখ্যাত নিউ থিয়েটার্স স্টুডিওতে কাজ করতেন। নিউ থিয়েটার্স তখন তারকাদের পীঠস্থান। বাঙালি শিল্পীদের প্রতি অসম্ভব শ্রদ্ধাবান ভি বালসারাকে অনিল বিশ্বাস ১৯৫৩ সালে কলকাতায় একটি অনুষ্ঠানের জন্য নিয়ে এসেছিলেন। উপরোক্ত সকলেই উপস্থিত ছিলেন সেই অনুষ্ঠানে। আপ্লুত বালাসারা তারপরই কলকাতায় পাকাপাকিভাবে থাকার সিদ্ধান্ত নিলেন। স্যুইন হো স্ট্রিটে প্রথমে থাকলেও পরে পাকাপাকি ১৬, নমব্র অক্রুর দত্ত লেনে থাকতে শুরু করেন তিনি। ছোট্ট বাড়িটিকেই নিজের সঙ্গীত সাধনার মন্দির করে তোলেন তিনি।

ষাটের দশকে ‘বিদ্যাপতি’ ছবির সুরকারের দায়িত্ব পান ভি বালসারা। বাংলার ধনঞ্জয় ভট্টাচার্যের সঙ্গে তিনি বাছলেন লতা মঙ্গেশকরকেও। কিন্তু লতা মুম্বইতে থাকেন, রিহার্সাল কীভাবে হবে, অগত্যা লতাই এলেন অক্রুর দত্ত লেনের ওই ছোট্ট ঘরে। আজ লতা মঙ্গেশকরের প্রয়াণে বউবাজার এলাকার ১৬ অক্রুর দত্ত লেনের পুরোনো বাসিন্দারা কিছুটা নস্টালজিক। বিদ্যাপতির গান ‘মোরে নয়না শাওন ভাদোঁ’ গেয়েছিলেন লতা, আর তার মহড়া হয়েছিল এই বাড়িতেই। গানটির কথা প্রহ্লাদ শর্মার আর গানটি রেকর্ড হয়েছিল অক্রুর দত্ত লেনেই অবস্থিত হিন্দুস্তান রেকর্ড কোম্পানির স্টুডিওয়। সেই রেকর্ডিংয়ে উপস্থিত ছিলেন ভি. বালসারার বাজনার সঙ্গী অসিতকুমার ঘোষ।

নিজস্ব চিত্র

অসিতবাবুর স্মৃতিচারণে সেদিনের ঘটনা উজ্জল। রিহার্সালের পর এই বাড়িতেই বহু আড্ডা দিয়েছিলেন সুরসম্রাজ্ঞী। এসেছেন বহুবার। ভি. বালসারা মেমোরিয়াল কমিটির সম্পাদক মহেশ গুপ্তার স্মৃতিতে উজ্জ্বল, এই বাড়িতেই নিজের হাতে করে একটি দূর্গা প্রতিমার ছবি লাগিয়েছিলেন লতা। এখানে এলেই তিনি সেই ছবিতে পুজো দিয়ে বাইরে যেতেন। আরও এক বিস্ময়কর তথ্য জানালেন মহেশবাবু। তখনকার সঙ্গীতকারদের প্রবল চাহিদা থাকা লতা এই ছবির গানটি গাইবার জন্য দক্ষিণা হিসেবে নিয়েছিলেন মাত্র ১ টাকা। আরও এক অদ্ভুত গল্প শোনা গেল এই ঘটনার। আর এই গল্পের সঙ্গে যোগ রয়েছে এই ছবির আরেক গায়ক ধনঞ্জয় ভট্টাচার্যের সঙ্গে।

রেকর্ডিংয়ের দিন গান গেয়ে স্টুডিও থেকে বাড়ি ফিরে এসেছেন ধনঞ্জয়। ঠিক তার দুদিন পর একটি পুরুষ কণ্ঠের টেলিফোন আসে। ফোন করেছেন লতার ভাই হৃদয়নাথ মঙ্গেশকর। টেলিফোনে তিনি জানালেন, ‘দিদি আপনার কাছে যাবে দাদা।’ পরদিন বালসারার সহকারীর সঙ্গে গাড়ি করে ধনঞ্জয়ের বাড়িতে এলেন লতা। বাড়িতে ধনঞ্জয়ের নির্দেশ ছিল কেউ যেনো লতাকে গান গাইবার অনুরোধ না করেন। লতা ঘরে এসে অনেক আড্ডা দিলেন। খানিকক্ষণ পর বাড়ির লোকের জোরাজুরিতে ধনঞ্জয়ের স্ত্রী রেখা দেবী লজ্জার মাথা খেয়ে রেখাকে বলেই বসলেন, ‘বহিনজি, তুমি আমার বাড়িতে এলে অথচ গান শুনব না!’ সহাস্য লতার জবাব, ‘কিন্তু বোন আমার যে গান গাইতে বই লাগে।’ রেখাদেবী জানান, বাড়িতে তো বই নেই। কিন্তু তিনি শুনেছেন লতা রোজ ঠাকুরের সামনে গান গেয়ে থাকেন। সেই গানই শোনাতে অনুরোধ করেন তিনি। রাজি হয়ে সেই গান শুনিয়েছিলেন লতা, আর তার সঙ্গে হারমোনিয়ামে সঙ্গত করেছিলেন স্বয়ং ধনঞ্জয়ই।

বাংলা টেলিভিশনে প্রথমবার, দেখুন TV9 বাঙালিয়ানা

কলকাতা: ১৯৫৪ সাল, মাত্র একত্রিশ বছর বয়সে মুম্বই ছেড়ে কলকাতার স্যুইন হো স্ট্রিটের একটি বাড়িতে থাকতে শুরু করলেন প্রবাদপ্রতিম সুরের জাদুকর ভিয়েস্তাপ বালসারা। পার্সি বালসারা বলিউডের যে সব গায়কদের গানে ইন্সট্রুমেন্ট বাজাতেন তাঁদের সিংহভাগই ছিলেন কলকাতার শিল্পী। পঙ্কজকুমার মল্লিক, যূথিকা রায়, কাননদেবী, কমল দাশগুপ্তের মতো প্রবাদপ্রতিম শিল্পীরা সকলেই তখনকার বিখ্যাত নিউ থিয়েটার্স স্টুডিওতে কাজ করতেন। নিউ থিয়েটার্স তখন তারকাদের পীঠস্থান। বাঙালি শিল্পীদের প্রতি অসম্ভব শ্রদ্ধাবান ভি বালসারাকে অনিল বিশ্বাস ১৯৫৩ সালে কলকাতায় একটি অনুষ্ঠানের জন্য নিয়ে এসেছিলেন। উপরোক্ত সকলেই উপস্থিত ছিলেন সেই অনুষ্ঠানে। আপ্লুত বালাসারা তারপরই কলকাতায় পাকাপাকিভাবে থাকার সিদ্ধান্ত নিলেন। স্যুইন হো স্ট্রিটে প্রথমে থাকলেও পরে পাকাপাকি ১৬, নমব্র অক্রুর দত্ত লেনে থাকতে শুরু করেন তিনি। ছোট্ট বাড়িটিকেই নিজের সঙ্গীত সাধনার মন্দির করে তোলেন তিনি।

ষাটের দশকে ‘বিদ্যাপতি’ ছবির সুরকারের দায়িত্ব পান ভি বালসারা। বাংলার ধনঞ্জয় ভট্টাচার্যের সঙ্গে তিনি বাছলেন লতা মঙ্গেশকরকেও। কিন্তু লতা মুম্বইতে থাকেন, রিহার্সাল কীভাবে হবে, অগত্যা লতাই এলেন অক্রুর দত্ত লেনের ওই ছোট্ট ঘরে। আজ লতা মঙ্গেশকরের প্রয়াণে বউবাজার এলাকার ১৬ অক্রুর দত্ত লেনের পুরোনো বাসিন্দারা কিছুটা নস্টালজিক। বিদ্যাপতির গান ‘মোরে নয়না শাওন ভাদোঁ’ গেয়েছিলেন লতা, আর তার মহড়া হয়েছিল এই বাড়িতেই। গানটির কথা প্রহ্লাদ শর্মার আর গানটি রেকর্ড হয়েছিল অক্রুর দত্ত লেনেই অবস্থিত হিন্দুস্তান রেকর্ড কোম্পানির স্টুডিওয়। সেই রেকর্ডিংয়ে উপস্থিত ছিলেন ভি. বালসারার বাজনার সঙ্গী অসিতকুমার ঘোষ।

নিজস্ব চিত্র

অসিতবাবুর স্মৃতিচারণে সেদিনের ঘটনা উজ্জল। রিহার্সালের পর এই বাড়িতেই বহু আড্ডা দিয়েছিলেন সুরসম্রাজ্ঞী। এসেছেন বহুবার। ভি. বালসারা মেমোরিয়াল কমিটির সম্পাদক মহেশ গুপ্তার স্মৃতিতে উজ্জ্বল, এই বাড়িতেই নিজের হাতে করে একটি দূর্গা প্রতিমার ছবি লাগিয়েছিলেন লতা। এখানে এলেই তিনি সেই ছবিতে পুজো দিয়ে বাইরে যেতেন। আরও এক বিস্ময়কর তথ্য জানালেন মহেশবাবু। তখনকার সঙ্গীতকারদের প্রবল চাহিদা থাকা লতা এই ছবির গানটি গাইবার জন্য দক্ষিণা হিসেবে নিয়েছিলেন মাত্র ১ টাকা। আরও এক অদ্ভুত গল্প শোনা গেল এই ঘটনার। আর এই গল্পের সঙ্গে যোগ রয়েছে এই ছবির আরেক গায়ক ধনঞ্জয় ভট্টাচার্যের সঙ্গে।

রেকর্ডিংয়ের দিন গান গেয়ে স্টুডিও থেকে বাড়ি ফিরে এসেছেন ধনঞ্জয়। ঠিক তার দুদিন পর একটি পুরুষ কণ্ঠের টেলিফোন আসে। ফোন করেছেন লতার ভাই হৃদয়নাথ মঙ্গেশকর। টেলিফোনে তিনি জানালেন, ‘দিদি আপনার কাছে যাবে দাদা।’ পরদিন বালসারার সহকারীর সঙ্গে গাড়ি করে ধনঞ্জয়ের বাড়িতে এলেন লতা। বাড়িতে ধনঞ্জয়ের নির্দেশ ছিল কেউ যেনো লতাকে গান গাইবার অনুরোধ না করেন। লতা ঘরে এসে অনেক আড্ডা দিলেন। খানিকক্ষণ পর বাড়ির লোকের জোরাজুরিতে ধনঞ্জয়ের স্ত্রী রেখা দেবী লজ্জার মাথা খেয়ে রেখাকে বলেই বসলেন, ‘বহিনজি, তুমি আমার বাড়িতে এলে অথচ গান শুনব না!’ সহাস্য লতার জবাব, ‘কিন্তু বোন আমার যে গান গাইতে বই লাগে।’ রেখাদেবী জানান, বাড়িতে তো বই নেই। কিন্তু তিনি শুনেছেন লতা রোজ ঠাকুরের সামনে গান গেয়ে থাকেন। সেই গানই শোনাতে অনুরোধ করেন তিনি। রাজি হয়ে সেই গান শুনিয়েছিলেন লতা, আর তার সঙ্গে হারমোনিয়ামে সঙ্গত করেছিলেন স্বয়ং ধনঞ্জয়ই।

বাংলা টেলিভিশনে প্রথমবার, দেখুন TV9 বাঙালিয়ানা

Next Article