‘মির্জাপুর’ হোক বা ‘সেক্রেড গেমস’- ওটিটি প্ল্যাটফর্ম জুড়ে যে সব অভিনেতাদের সাম্প্রতিক কালে দাপট নজরে পড়েছে দর্শকের, তার মধ্যে পঙ্কজ ত্রিপাঠি অন্যতম। ওটিটিতে নাকি সব ধরনের কনটেন্ট দেখানো যায়। কারণ ওটিটির সেন্সরশিপ নিয়ে তেমন বাড়াবাড়ি নেই বলেই মনে করেন নির্মাতাদের বড় অংশ। এ বিষয়ে পঙ্কজ কী মনে করেন? সদ্য এক সাক্ষাৎকারে মুখ খুললেন অভিনেতা।
পঙ্কজ জানিয়েছেন, কনটেন্ট হাতে পাওয়ার পর নিজেকে দর্শকের আসনে বসিয়ে বিচার করেন তিনি। চিত্রনাট্যের জন্য কতটা প্রয়োজন, আর কতটা সেনসেশনালাইজ করার জন্য রয়েছে, তা বুঝতে চেষ্টা করেন। সেলফ সেন্সরশিপ তাঁর কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
পঙ্কজের কথায়, “ওটিটিতে সেই অর্থে কোনও সেন্সরশিপ না থাকায় অনেকেরই বহুদূর পর্যন্ত চলে যাওয়ার প্রবণতা থাকে। অভিনেতা হিসেবে আমি সেলফ সেন্সরশিপে বিশ্বাসী। অভিনেতা হিসেবে আমার চরিত্র, আমার দৃশ্যে মনোযোগ দেওয়া আমার কাজ। কখনও পুরো শোয়ের বিচার করা আমার কাজ নয়। সুতরাং আমি নিজেকে প্রশ্ন করি, যে সব দৃশ্যে অভিনয় করছি, তার প্রয়োজন কতটা। দৃশ্যগুলো কি গল্পকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করবে নাকি সেনসেশনালাইজ করার জন্য শুট করা হবে?”
পঙ্কজ আরও জানান, ওটিটি তাঁর কাছে অনেকটাই ব্যক্তিগত স্তরে দেখার মাধ্যম বলে মনে হয়েছে। একজন অভিনেতা হিসেবে অনেক কিছু করার রয়েছে ওটিটিতে। তবে যে কোনও মাধ্যমেই গল্প, গল্প বলার ধরন এবং পারফরম্যান্সের উপর জোর দেওয়া উচিত বলে মনে করেন অভিনেতা।
বিহারের বেলসন্দ গ্রামে জন্ম পঙ্কজ ত্রিপাঠির। ছোটবেলায় গ্রামের নাটকে মেয়ের চরিত্রে অভিনয় করেছেন পঙ্কজ। গ্রামে চাষবাস করেছেন এই প্রতিভাবান অভিনেতা। বিদ্যুৎ ছিল না। এমনকী, ভাল স্কুলও ছিল না। প্রকৃতির কোলে, খোলা আকাশে লেখাপড়া করেছেন। কলেজে পড়ার সময় রাজনীতি করেছিলেন পঙ্কজ ত্রিপাঠি। ১৯৯৩ জেল খেটেছেন সাত দিনের জন্য। অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের সদস্য ছিলেন। লালু প্রসাদ যাদবের বিরুদ্ধে গলা তুলেছিলেন সে সময়। পঙ্কজের বাবা চেয়েছিলেন তিনি ডাক্তারি নিয়ে পড়াশোনা করুন। পাটনায় পাঠিয়েছিলেন উচ্চ শিক্ষার জন্য। পাটনাতেই পঙ্কজ নিজের মধ্যে অভিনেতা সত্ত্বাকে চিনতে পারেন। হোটেল ম্যানেজমেন্টের কোর্স করেছেন পঙ্কজ। একটি হোটেলে দু’বছরের জন্য রান্নাও করেছেন তিনি। কিন্তু তখনও অভিনয়ের ইচ্ছে মন থেকে মুছে যায়নি। ন্যাশনাল স্কুল অফ ড্রামায় পড়ার সময় অভিনয়ে পিছনে সময় দিতে শুরু করেন। একটা সময় ভালো করে হিন্দি বলতে পারতেন না পঙ্কজ। তিনি বিহারের ছেলে। ভোজপুরি তাঁর মাতৃভাষা। পাটনায় উচ্চ শিক্ষা করতে এসে হিন্দি বলা রপ্ত করেন। একবার ট্রেনে যাতায়াত করার সময় একটি মেয়ের প্রেমে পড়েন পঙ্কজ। সেই মেয়ের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক তৈরি হয়। বাড়িতে জানাজানি হওয়ার পর সমস্যাও হয়। কিন্তু নিজের মর্জির মালিক পঙ্কজ সেই মেয়েটিকেই বিয়ে করেন। তিনি পঙ্কজের স্ত্রী মৃদুলা। যিনি পঙ্কজের কেরিয়ারে সব সময় সাপোর্ট দিয়েছেন।
আরও পড়ুন, ‘সেটের মধ্যে ঘুমিয়ে পড়া একটা আর্ট’, কেন বললেন অন্বেষা?