Tota Roy Chowdhury: ‘বাংলার দর্শকের মুখ চেয়েই…’, আক্ষেপ ভুলে ঠোঁটে হাসি ‘পিকোসা’ টোটার
Tota Roy Chowdhury: 'শ্রীময়ী' ধারাবাহিকের 'রোহিত সেন' রাতারাতি ক্রাশ হয়ে উঠেছিলেন বহু মহলিরা। তবে 'রকি অউর রানি কি প্রেম কাহিনি' দেখেই কি দর্শক তাঁকে নতুন করে আবিষ্কার করলেন? ইন্ডাস্ট্রির মনে পড়ল অভিনেতা টোটা রায় চৌধুরীর কথা?

বাংলার বুকে এখন তিনিই ট্রেন্ড। ঝুপ করে যেন বয়সও কমে গিয়েছে অনেকটা। চেনা শহর যেন আজ তাঁর চোখে বড্ড বেশি অচেনা। মাঝের কয়েকটা বছর কোথায় ছিলেন ‘পূজা’ ছবির ‘চয়ণ’? ‘শ্রীময়ী’ ধারাবাহিকের ‘রোহিত সেন’ রাতারাতি ক্রাশ হয়ে উঠেছিলেন বহু মহলিরা। তবে ‘রকি অউর রানি কি প্রেম কাহিনি’ দেখেই কি দর্শক তাঁকে নতুন করে আবিষ্কার করলেন? ইন্ডাস্ট্রির মনে পড়ল অভিনেতা টোটা রায় চৌধুরীর কথা?
এখন তিনি ওয়েব দুনিয়ার ‘পিকাসো’। পরিচালক রাজা চন্দর ফ্রেমে থ্রিলার সাসপেন্স KLIKK-এ মুক্তি পেল বৃহস্পতিবার। তবে না, টোটার সম্প্রতি সাফল্য দেখে তাঁর কাছে এই চরিত্রের প্রস্তাব পৌঁছিয়েছে এমনটা নয়। পর্দার পিকাসো হয়ে উঠেছিলেন তিনি আগেই। চেনা শহরে সেই ‘পিকাসো’কে নিয়ে এই উত্তেজনা অভিনেতার ঠোঁটের হাসি মেলাতে দেয়নি। TV9 বাংলাকে এদিন কী বললেন টলিপাড়ার নয়া ক্রাশ?
ট্রেলারে একটি সংলাপে বলতে শোনা যায়, ‘হেরে যাওয়া মানুষ…’ আপনি যে তা নন, বরং লড়ে গেলেন, সেটা দর্শক-ইন্ডাস্ট্রি এখন বুঝছে?
এটা মানুষই বলতে পারবে। আমার কাজ আমি আগেও করে গিয়েছি, এখনও করে যাচ্ছি, সাফল্য হোক, ব্যর্থতা হোক, মন দিয়ে কাজ করাটাই আমার কাজ। কাজ ছাড়া তো অন্য কোনও দিকে আমি মনোনিবেশ করিনি। মন দিয়ে ভাল অভিনয় করে যেতেই তো চেয়েছি। বিশেষ করে পিকাসো-র মতো একটি চরিত্রে যখন কাজ করার সুযোগটা পেলাম, সেটাকে সম্পূর্ণ রূপে চেষ্টা করেছি কাজে লাগানোর। আমি মনে করি এটাই আমার কাজ।
টোটা রায়চৌধুরী ট্রেন্ড বলেই কি তাঁর ডাক? তিনি পিকাসো?
দেখুন যে ছবিটা করার পর হঠাৎ করে মানুষ আমায় আবিষ্কার করেছে, সাফল্য এসেছে, সেই ছবিটা মুক্তির আগে এই কাজটা আমি করেছি। তখনও আমি বাছাই করে কাজ করতাম, এখনও তাই করি। আমার মনে হয় চরিত্র যদি আমায় স্পর্শ না করে, তবে তা যত বড়ই চরিত্র হোক না কেন, আমি তা করিনি। ইন্ডাস্ট্রির বহু পরিচালকেরা জানেন, প্রযোজকরা জানেন, আমি নাম দেখে কাজ করি না। আমার কাছে মানুষের কাছে পৌঁছানোটা বড় কথা, চরিত্রটার গুরুত্ব কতটা, গভীরতা কতটা সেটা বড় কথা, চরিত্রটা কত বড়, তা আমায় ভাবায়নি, ভাবায় না। চরিত্র আমার শিল্পী সত্ত্বাকে আন্দোলিত করতে না পারলে আমি আগ্রহ পাই না। এটাই মুখ্য। তা যদি না করতে পারি, আমি কাজ করি না।
আজ যাঁরা আপনার কাছে কাজের অফার নিয়ে আসছেন, তাঁদের প্রশ্ন করতে ইচ্ছে করে না, ‘আমার মাঝের এতগুলো বছর নষ্ট হল কেন’?
(ঠোঁটে হাসি নিয়ে জানালেন), আমি এগুলোতে বিশ্বাস করি না। আমি ভীষণ ঈশ্বরে বিশ্বাসী। আমার মনে হয় তিনি প্রতিটা মানুষের জীবনের প্ল্যান তৈরি করে রেখেছেন। কখন কাকে কী দেব, কতটা দেব, দেব না, সবটা লেখা আছে। হম, আমরা অভিমান করতে পারি, রাগ হতে পারে, দুঃখ করতে পারি, তবে তাতে সেটা বদলাবে না। আমি আমার থেকে অনেক অনেক যোগ্য মানুষদের দেখেছি, যাঁরা জীবনে তেমন কোনও সুযোগই পাননি। তৃতীয় সারিতে বসে আছেন। বহু অযোগ্য মানুষকে দেখেছি, তাঁরা তাঁদের ক্ষমতা থেকে অধিক পেয়ে গিয়েছেন। সেক্ষেত্রে আমি বিশ্বাস করি যে এটা ওনার ওপর, আমাদের ওপর নয়।
View this post on Instagram
যে টলিউডে একটা সময় আপনাকে ভুলে গিয়েছিল, আজ আপনি তো তাঁদের থেকে মুখ ফেরালেন না। বরং আনন্দের সঙ্গে কাজ করছেন….
আমার কাছে টালিগঞ্জ দর্শকদের থেকে যেটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ সেটা হল বাংলা ছবির দর্শক। যখন আমার পাশে কেউ ছিল না, তখন আমার কাছে বাঙালি, বাংলা দর্শকেরা ছিলেন। এটা আমি কোনওদিনই ভুলতে পারব না, ভুলতে চাইব না। আজ আমার যত সাফল্য হোক বা যতই কাজ আসুক না কেন, আমি বারবার ফিরে আসতে চাই শুধুমাত্র তাঁদের জন্যে। যে সময় আমার কাছে কোনও কাজ ছিল না, মাসের পর মাস আমি বাড়িতে বসে, তখন যখন রাস্তায় বেরতাম, সেই দর্শকেরাই চিনতেন, ডেকে বলতেন- দাদা আপনাকে দেখা যাচ্ছে না কেন, করুন করুন ভাল কাজ করুন। আপনার কাজ দেখার জন্য বসে আছি। এগুলো ক্ষণিকের জন্য হলেও আমার মনে একটা ভাললাগা সৃষ্টি করত, সাহস ভরসা যোগাত, ভেঙে যাওয়া আত্মবিশ্বাসটাকে আবারও জোড়া লাগাত। তাঁরা কারা? তাঁরা তো বাংলা দর্শক-ই। তাঁদের জন্যই করি, কোনও নির্দিষ্ট ইন্ডাস্ট্রির জন্য কিন্তু করি না।
View this post on Instagram
