শিলাজিতের ১২ সেকেণ্ডের ‘দুঃস্বপ্নে’  শ্রীলেখা মিত্র!

রণজিৎ দে |

Dec 26, 2020 | 6:07 PM

টলিউডের 'বিতর্কিত' অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র কখনও কোনও পুরুষের দুঃস্বপ্নে আসতে পারেন? আর সেই পুরুষ যদি হন গায়ক শিলাজিৎ? 

শিলাজিতের ১২ সেকেণ্ডের দুঃস্বপ্নে  শ্রীলেখা মিত্র!
শ্রীলেখা-শিলাজিৎ

Follow Us

 

টলিউডের বিতর্কিত‘ অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র (Sreelekha Mitra)কখনও কোনও পুরুষের দুঃস্বপ্নে আসতে পারেনআর সেই পুরুষ যদি হন গায়ক শিলাজিৎ(Silajit)

কী দেখলেন শিলাজিৎ দুঃসপ্নেশিলাজিৎ খুন করছেন শ্রীলেখাকেশুধু তাইই নয়শ্রীলেখাকে খুন করার পর নিজেকেও গুলি করছেন শিলাজিৎপা দিয়ে নিজের লাশ সরাচ্ছেনকেন দেখছেন শিলাজিৎ এসবকারণ স্বামী‘ শিলাজিতের সন্দেহ, ‘স্ত্রী‘ শ্রীলেখা অন্য কারও সঙ্গে প্রেম করছেন। 

১২ সেকেণ্ডস’। পরিচালক অংশুমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের ১২ মিনিটের স্বল্প দৈর্ঘ্য়ের ছবি। ছবিতে শিলাজিৎ যে চরিত্রে অভিনয় করছেনতার নাম দেবাঞ্জন মিত্র। দেবাঞ্জনের স্ত্রী সৃজিতা। এই সৃজিতাই শ্রীলেখা। অংশুমান  বললেন, “আসলে আমরা ঘুমের মধ্য়ে যে স্বপ্ন দেখিতার দৈর্ঘ্য় সাধারণত ১২ সেকেণ্ড। কোনও স্বপ্নই ১২ সেকেণ্ডের বেশি হয় না আমরা যখন টানা কোনও স্বপ্ন দেখি১২ সেকেণ্ড পরপর দৃশ্যগুলো বদলাতে থাকে যদিও নিউরোলজিস্ট ডাঃ অমিত ঘোষ বলেন “ স্বপ্নের দৈর্ঘ কয়েক সেকেণ্ড থেকে ৩০ মিনিট অবধি হতে পারে।এটা ক্লিনিক্যালি প্রমাণিত।ঘুমের র‍্যাপিড আই মুভমেন্ট স্টেজে (REM) আমরা স্বপ্ন দেখি।ব্রেনের কোনও একটি বিশেষ অংশ স্বপ্ন তৈরি করে না। বরং ব্রেনের কতগুলো অংশ জুড়ে একটা সার্কিট তৈরি হলে আমরা স্বপ্ন দেখি।অবচেতন মনে আমরা যা ভাবি সেইগুলোই সাধারণত আমরা স্বপ্নে দেখি”।

ছবির নায়ক দেবাঞ্জন দুঃস্বপ্ন দেখে। দেবাঞ্জনের সঙ্গে ওর অল্টারইগোর একটা বিরোধ আছে। এই বিরোধ থেকেই দেবাঞ্জনের মনে সন্দেহ দানা বাঁধে। স্ত্রীছেলেমেয়েকে খুন করে দেবাঞ্জন। গোটা ছবিটাই আ ড্রিম উইদইন আ ড্রিম।

আরও পড়ুন :ভোটের আগেই পাপিয়া অধিকারীর নেতৃত্বে টলিপাড়ায় স্বশাসিত সংগঠন; নতুন সমীকরণ ইন্ডাস্ট্রিতে?

দুঃস্বপ্ন কেন দেখে মানুষস্বপ্নের অনেকটা অংশ এখনও ধূসর।ঠিকমতো বোঝা যায়নি। স্বপ্নের নানা পরত নিয়ে এখনও গবেষণা চলছে।কেউ কোনও স্বপ্ন বা দুঃস্বপ্ন কতক্ষণ ধরে কেন দেখলেন তার ব্যখ্যা ব্যক্তিবিশেষে বদলে যায়।সাইকোলজিস্ট অনুত্তমা বন্দোপাধ্যায়ের মতে “ স্বপ্নের দৈর্ঘ ১২ সেকেন্ড কি না সেটা গবেষণার বিষয়।তবে আমাদের মত মনস্তত্ত্ববিদদের কাছে স্বপ্নের দৈর্ঘ নয়,কোনও ব্যক্তি কী স্বপ্ন বা দুঃস্বপ্ন দেখলেন সেটা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।একজন ব্যক্তি কেন দুঃস্বপ্ন দেখেন তা একদিনের স্বপ্ন বিশ্লেষণ করে ব্যখ্যা করা মুশকিল।স্বপ্ন তো অবচেতন মনের বহিঃপ্রকাশতাই কোনও ব্যক্তিকে ভেতর থেকে না জানলে তার দুঃস্বপ্ন ব্যখ্যা করা কঠিন।দুঃস্বপ্নের প্যার্টান এক হলেও ব্যক্তি বিশেষে তার ব্যখ্যা বদলে যায়”। কিন্তু মজার হল আমরা রাতে দুঃস্বপ্ন বা স্বপ্ন,যাই দেখি না কেন, সকালে উঠে তা প্রায়ই ভুলে যাই।যেমন সিনেমার দেবাঞ্জনের হয়েছে। কেন এমন হয়? “ আসলে আমাদের অবচেতন মনে কী চলেতা আমাদের সচেতন মন নাগালই পায় না।আমরা তো সচেতন ভাবে কেউই নিজেকে খারাপ মানুষ ভাবতে বা খারাপ কিছু করতে চাই নাকিন্তু অবচেতনে এমন কিছু ঘটলে আমাদের সচেতন মন তা নিজে থেকেই ঢাকা দেবার চেষ্টা করে।তাই সকালে উঠে অনেক সময় আমরা দুঃস্বপ্নের কথা ভুলে যাই”বললেন অনুত্তমা।

আত্মঘাতী হওয়ার মতো দুঃস্বপ্ন কখনও দেখেছেন শিলাজিৎ? “না নাদেবাঞ্জনের মতো দুঃস্বপ্ন আমি কখনও দেখিনি। তবে কোথাও আটকে গেছিনিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছেএমন স্বপ্ন অনেকবার দেখেছি”উত্তর শিলাজিতের। 

আর ঠোঁটকাটা শ্রীলেখা মিত্র? “আমি তো খুব কল্পনাপ্রবণ মানুষ। তাই মাঝেমাঝেই দুঃস্বপ্ন দেখি। একটা স্বপ্ন তো আমি প্রায়ই দেখিআমাকে কেউ যেন পাহাড় থেকে ঠেলে ফেলে দিচ্ছে।” শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে অকপট শ্রীলেখা, “এখন তো কেউ খুব একটা চিন্তাভাবনা করে ছবি বানায় না। একটা কিছু বানিয়ে দিলেই হল।” সেইসঙ্গে তাঁর সংযোজন, “অংশুমানের অন্তত একটা চিন্তাভাবনা আছে। তাইই কাজ করতে ভাল লেগেছে। আর শিলাজিতের সঙ্গে শুটিং করাটা আমার কাছে খুব মজার। আমি আর শিলাজিৎ খুব ভাল বন্ধু। শিলাজিতের সঙ্গে আমার অনেক কিছু মেলে। আমরা অনেক কিছুই একই রকমভাবে ভাবি। সেকারণেই সহজে ওর সঙ্গে মিশে যেতে পারি।” শিলাজিতের মতো শ্রীলেখারও একই কথা, “শুটিং করতেকরতেও আমরা প্রচুর পিএনপিসি করেছি। তবে সেটা সুস্থ পিএনপিসি।” 

১২ সেকেণ্ডস’এর পোস্ট প্রোডাকশনের কাজ প্রায় শেষ। এরপর দেশেবিদেশে বিভিন্ন ফেস্টিভালে ঘুরবে ছবিটি। ফেস্টিভালপর্ব মিটলে কোনও ওটিটি প্ল্যাটর্ফমে ছবিটি দেখা যেতে পারে বলে জানিয়েছেন পরিচালক।

Next Article