১৪ বছর পর ক্যানসার ফিরে এল অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা শর্মার মা শিখা শর্মার শরীরে। ব্লাডারে ক্যানসার ধরা পড়েছে তাঁর। এই মুহূর্তে বহরমপুরেই চলছে চিকিৎসা। শিখাদেবী টিভিনাইন বাংলাকে জানিয়েছেন, মোট ১৮টি কেমো নিতে বলা হয়েছে তাঁকে। এর মধ্যে ১১টি তিনি নিয়েছেন। আগামী ১৩ জানুয়ারি কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে অস্ত্রোপচার হবে তাঁর। তবে তিনি স্থিতিশীল আছেন বলেই জানিয়েছেন শিখাদেবী। তাঁর কথায়, “অক্টোবরে ক্যানসার ধরা পড়ে, তখন থেকেই চিকিৎসা শুরু হয়েছিল। এর মধ্যে মিষ্টি (ঐন্দ্রিলা)র যে এসব বুঝতে পারিনি। আমি এমনিতে ঠিক আছি। অপারেশনের জন্য কলকাতা আসব কিছু দিনের মধ্যেই।” এর আগে জরায়ুতে ক্যানসার ধরা পড়েছিল শিখাদেবী ১৪ বছর আগে। সে সময় তাঁর দুটি জরায়ুই বাদ দিতে হয়, যদিও এর পর ভালই ছিলেন তিনি। কিন্তু আবারও ফিরে এল রোগ।
কিছু দিন আগেই ঐন্দ্রিলা শর্মার মৃত্যুর এক মাস পূর্ণ হয়েছে। টিভিনাইন বাংলার কাছে প্রিয় মিষ্টিকে নিয়ে কথা বলতে গিয়ে সে সময় কেঁদে ফেলেছিলেন তিনি। বলেছিলেন, “ভালবাসত মিষ্টি। কোলে নিয়ে থাকত সব সময়। পুজো-আচ্চা বেজায় পছন্দ ছিল, জানেন… ওই জন্যই ভগবানও বোধহয় ওকে বেশি ভালবেসে ফেলেছিলেন। বহরমপুরে চলে এসেছি আমি আর ওর বাবা। কী করে থাকব আমি? এই বাড়ির প্রতি কোণায় মিষ্টি। ছোটবেলায় ওকে মজা করে বলতাম, ‘ভুল করে তোর নাম মিষ্টি দিয়ে ফেলেছি। উচিৎ ছিল দুষ্টু দেওয়া’। ও খিলখিল করে হেসে বলত, ‘দিয়ে যখন ফেলেছ, আর তো কিচ্ছু করা যাবে না।’ আমার দুই মেয়ে ছিল দুই মেরুর। বড়টা পড়াশোনায় তুখোড় আর ছোটটা এই সব… গান-বাজনায়। স্কুলে সবাই বলত, ‘দিদি আমার মেয়ে যেন আপনার মিষ্টির মতো হয়’। আমি প্রতিবাদ করে বলতাম, ‘একদম না, ও যে কী দুষ্টু’। ওর বাবা বলত, ‘ভালই তো আমাদের দু’টো দু’রকম।’ এ বাড়িটায় আজকাল আর থাকতে পারি না। নার্সিংহোম যাই। ওখানেও বেশিক্ষণ বসতে পারি না। কী নিয়ে থাকব আমি? মিতুল (ঐন্দ্রিলার দিদি) বাইরে, ওদের বাবা চেম্বারে আর আমি…।
যোগ করেছিলেন, “মিষ্টির এক ইচ্ছে বাকি রয়ে গিয়েছে। চলে যাওয়ার কিছু দিন আগে হঠাৎ একদিন ফোন করে বলল, “মা অনেক শাড়ি হয়ে গিয়েছে। একটা ওয়ার্ডড্রোব লাগবে। তুমি এসে করে দিও। আর শাড়িও গুছিয়ে দিও।” খুব টিপটপ ছিল তো। আমি কথাও দিয়েছিলাম। কথা রাখতে পারিনি সে সময়। এবার রাখব। বাঁচতে চেয়েছিল মেয়েটা, পারল না। মা হয়ে ওয়ার্ডড্রোবটা অন্তত ওর জন্য করিয়ে দিই।” গত ২০ নভেম্বর চলে যান ঐন্দ্রিলা। তাঁর মা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুক, এমনটাই প্রার্থনা সকলের।