জয়িতা চন্দ্র
অভিনেত্রী শ্বেতা ভট্টাচার্য মানেই দর্শকদের মনে উত্তেজনার পারদ তুঙ্গে। ছোটপর্দায় যতবারই তিনি নয়া নয়া ভূমিকায় এসেছেন, ততবারই ধারাবাহিক এক কথায় হিট। তবে ছোট পর্দা থেকে যখন তিনি বিদায় নিয়ে বড়পর্দায় গেলেন, বারে বারে ভক্তরা প্রশ্ন করেছিলেন, শ্বেতা কবে ফিরবে সিরিয়ালে। প্রজাপতি করার পরই ছোটপর্দায় ফিরলেন শ্বেতা। ধারাবাহিকের নাম ‘সোহাগজল’। তবে নায়ক গেলেন পাল্টে। সকলেই প্রোমো দেখে ভীষণ খুশি। রমরমিয়ে চলবে ধারাবাহিক। কিন্তু টিআরপির তালিকায় সেভাবে প্রথম পাঁচে জায়গা করতে পারছে না ধারাবাহিক। কারণ কী? জুঁইয়ের মধ্যে কি লড়াকু যমুনাকেই কি খুঁজছেন দর্শক? TV9 বাংলার প্রশ্নে কী বললেন অভিনেত্রী?
সোহাগজল-এ অন্য শ্বেতা? দর্শক কী তবে প্রতিবাদী যমুনাকেই খুঁজছে?
হতে পারে, কারণ এটা তো একেবারে একটা অন্য ধরনের চরিত্র। আমার খুবই ভাললাগছে জুঁই করে। আমি তো একজন অভিনেত্রী, যত নতুন নতুন চরিত্র আমার কাছে আসবে আমি নিজেকে ততটাই এক্সপ্লোর করতে পারব। যদিও আমাকে দর্শকেরা বরাবরই দেখে এসেছে অন্যায়ের বিরুদ্ধে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে। লড়াকু মেয়ের চরিত্রে। আমি ফাইটার। এখানেও কিন্তু সেই ফাইটটা রয়েছে। হয়তো উপস্থাপনাটা আলাদা। এখানে হাতে কাটারি নিয়ে দৌড় বা কাউকে রাস্তায় দাঁড় করিয়ে হুমকি দেওয়ার বিষয়টা নেই। এখানের ফাইটটা বাস্তব ফাইট। আমরা তো সিরিয়ালে লার্জার দ্যান লাইফ দেখি। সেটাতেই আমরা অভ্যস্থ। কিন্তু এই ফাইটটাই আসল। একটা মেয়ের জীবনে খুব কমন।
জুঁই চরিত্রটা কি সেই সাধারণ মেয়েদের লড়াইয়ের কথাই বলছে?
খুব সাধারণ। জুঁই, যার সাতকুলে কেউ নেই। মা-বাবা নেই, দাদা প্রতারক। বিয়ের স্বপ্নও তার ভেঙে যায় যখন জানতে পারে, তাঁর স্বামীও একটা চুক্তির জন্য তাকে বিয়ে করেছে। সে যখন দেখছে ভালবাসা বলে কিছু নেই, সবটাই সাজান তখন সে সব ছেড়ে বেরিয়ে আসছে। শ্বশুরবাড়ি তাকে অনেক ভালবাসা দিচ্ছে, কিন্তু আসল মানুষের মনে যখন তাঁকে নিয়ে কোনো চাওয়া পাওয়া নেই, তখন সেখান থেকে সে নিজেকে সরিয়ে আনতে চাইছে। এটা লড়াই নয়? কোথায় যাবে মেয়েটি? তার যাওয়ার জায়গা নেই, তবুও সে তার স্বামীকে এই চুক্তি থেকে মুক্তি দিচ্ছে। তাকে প্রশ্ন করা হচ্ছে, তার আশ্রয় নেই, সে কোথায় যাবে, সে বলতে পারছে না। জুঁই মনে করে ভালবাসাহীন প্রতিটা সম্পর্কই অবৈধ। এতেও তো মারাত্মক রকমের প্রতিবাদ রয়েছে। এই গল্প কি আপনার অজানা বলুন? আসেপাশে দেখেননি এমন ঘটনা…!
শ্বেতাও কী এমন ঘটনার সাক্ষী?
কে নয় বলুন তো। আশে পাশে এমন লড়াকু জুঁই ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। আমারই একবন্ধু, যে তাঁর সম্পর্কের জন্য নাচ ছেড়ে দিয়েছে, অভিনয় ছেড়ে দিয়েছে, সব ছেড়েছে। স্বামীর হাত ধরে সংসার করার জন্য ও সব করতে পারত। কী হল? বিয়ের পর পরিস্থিতি এমন জায়গায় গেল, ডিভোর্স হল। তাঁর একটা মেয়ে আছে। তাঁকে নিয়েই চলছে লড়াই। সে কি প্রতিবাদী নয়? সে ফাইটার নয়? এগুলো সাধারণ মানুষের চোখে পড়ে না। আমরা ওই কাটারি নিয়ে দৌড়চ্ছি, ওটাই চোখে পড়ে।
টিআরপি পতন নিয়ে তবে শ্বেতার কী মত?
দেখুন দর্শক যে দেখেছে না, এমনটা তো নয়। রাত নটার স্লটে স্টেডি টিআরপি। ধীরে ধীরে মানুষ জুঁকে চিনছে, জানছে, ভালবাসা দিচ্ছে। আমার মনে হয় আর কিছুদিন চলতে চলতে দর্শক বুঝতে পারবে জুঁইও তাঁদেরই মধ্যে একজন। কিছুটা সময়ও দর্শকদের দিতে হবে। প্রচুর ধারাবাহিক হচ্ছে ভাল ভাল। ফলে পর্দার লড়াইটাও তো বাদ দেওয়া যায় না।