কেটে গিয়েছে ৭২ ঘণ্টারও বেশি সময়। গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় রবিবার দুপুরে গরফার ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার বছর ২৫-এর অভিনেত্রী পল্লবী দে’র মৃতদেহ। এ কী আত্মহত্যা নাকি খুন? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে উঠে আসছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। ইতিমধ্যেই গ্রেফতার পল্লবীর লিভ-ইন সঙ্গী সাগ্নিক চক্রবর্তী।
সাগ্নিক চক্রবর্তীর গ্রেফতার প্রসঙ্গে TV9 বাংলার কাছে মুখ খুললেন পল্লবীর প্রাক্তন রুম-মেট এবং ঘনিষ্ঠ বান্ধবী প্রত্যুষা পাল।
প্রত্যুষার জবানিতে…
রবিবারের পর থেকে মুহূর্তগুলো কাটতেই চাইছে না। বারবার পল্লবীর মুখটা চোখের সামনে ভেসে আসছে। ওর হাসিমুখটা। না, ও ডিপ্রেশনে থাকতে পারে না। আমি নিজে ক্লিনিক্যাল ডিপ্রেশনে ছিলাম দীর্ঘদিন। তখন তো এই মানুষটাই ছিল আমার পাশে। আমাকে বুঝিয়েছিল জীবন অনেক লম্বা, জীবনে অনেক ছোট-বড় ঢেউ আসবে। সেগুলো পেরিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা নিজেকেই রাখতে হবে। অনেক ভুল চিন্তা মাথায় আসত, তখন পরিবার ছাড়া এই পল্লবীই তো ছিল আমার সেই বটগাছের ছায়া—যাকে নির্দ্বিধায় ভরসা করতে পারতাম। সাগ্নিকের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হওয়ার পর আমার সঙ্গে একটা দূরত্ব তৈরি হয়েছিল ঠিকই। তবে ওদের মধ্যে কোনও সমস্যা হলে কিন্তু আমাকে এসে বলত।
প্রথম-প্রথম আমার বা ভাবনার (পল্লবী, প্রত্যুষার বন্ধু ভাবনা বন্দ্যোপাধ্যায়, যিনি ইতিমধ্যে TV9 বাংলাকে তাঁর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন:Pallavi Dey Death: ‘সাগ্নিক কোথাও গিয়ে পল্লবীর দায়িত্ব হয়ে দাঁড়িয়েছিল’, অভিনেত্রীর রহস্যমৃত্যুতে অকপট বান্ধবী ভাবনা বন্দ্যোপাধ্যায়) খুব একটা পছন্দ ছিল না ওদের সম্পর্ক। তাই হয়তো সাগ্নিকের সঙ্গে সম্পর্কের কথা আমাদের সঙ্গে শুরুতে শেয়ার করেনি পল্লবী। সময়ের সঙ্গে ওদের সম্পর্ক যখন অনেকটা পরিপক্ক, তখন জানতে পারি। সাগ্নিকের সঙ্গে সম্পর্কের পর থেকে কোনওদিন আমাদের সঙ্গে একা দেখা করেনি পল্লবী। সাগ্নিকের লাইফস্টাইল, ওঠাবসা নিয়ে মনে-মনে প্রশ্ন জন্মাত, কিন্তু পল্লবীকে বলিনি। এমনিতেই সাগ্নিককে প্রথম দিকে পছন্দ না করায় ও আমাকে শত্রু ভাবত। যদিও পরে সবই ঠিক হয়ে যায়। আজ যদিও সাগ্নিককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ, জানি না ও দোষী নাকি নির্দোষ। তবে যেহেতু বিষয়টি বিচারাধীন, তাই কিছুই মন্তব্য করা উচিত হবে না। কিন্তু মনে অনেকগুলো প্রশ্ন ভিড় করে আসছে। যে মুহূর্তে পল্লবী এই সিদ্ধান্ত নেয় (প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছে, আত্মহত্যা করেছে পল্লবী), তখন বাড়িতে ওরা দু’জনই ছিল।
পল্লবী আমার বন্ধু, যে আর পৃথিবীতেই নেই। আর সাগ্নিক, যে এই মুহূর্তে পুলিশ হেফাজতে। সাগ্নিকের উদ্দেশে আমার প্রশ্ন: আমার বা ভাবনার সঙ্গে তো তোমার (সাগ্নিকের) বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কই ছিল। এমনকি দু’দিন আগে ভাবনা, পল্লবী, সাগ্নিকরা একসঙ্গে সিনেমাও দেখতে গিয়েছিল। তাহলে কেন তুমি (সাগ্নিক) পল্লবীর মৃত্যুর কথা জানতে পারার পরই যোগাযোগ করলে না? ভাবনার বাড়ি পল্লবীর গরফার বাড়ি থেকে তো মাত্র সাত মিনিট দূরে। ওকে কেন ফোন করলে না তুমি (সাগ্নিক)? কেন জানালে না কাউকে, সাগ্নিক? এই উত্তর কি আদৌ মিলবে, জানি না…