Pallavi Dey Death: ‘সাগ্নিক কোথাও গিয়ে পল্লবীর দায়িত্ব হয়ে দাঁড়িয়েছিল’, অভিনেত্রীর রহস্যমৃত্যুতে অকপট বান্ধবী ভাবনা বন্দ্যোপাধ্যায়
Pallavi Dey Death: পল্লবীর আত্মহত্যার ৭২ ঘণ্টা পর এবার মুখ খুললেন অভিনেত্রীর ঘনিষ্ঠ বন্ধু ভাবনা বন্দ্যোপাধ্যায় ('রেশম ঝাঁপি' ধারাবাহিকে পল্লবীর সঙ্গে অভিনয় করেছিলেন ভাবনা)।
গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় রবিবার দুপুরে গরফার ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয় বছর ২৫-এর টেলিভিশন অভিনেত্রী পল্লবী দের মৃতদেহ। এটি আত্মহত্যা নাকি খুন, সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে জল গড়িয়েছে অনেকদূর। পল্লবীর আত্মহত্যার ৭২ ঘণ্টা পর এবার মুখ খুললেন অভিনেত্রীর ঘনিষ্ঠ বন্ধু ভাবনা বন্দ্যোপাধ্যায় (‘রেশম ঝাঁপি’ ধারাবাহিকে পল্লবীর সঙ্গে অভিনয় করেছিলেন ভাবনা)।
ভাবনার জবানিতে…
আমার আর পল্লবীর চার বছরের বন্ধুত্ব। ২০১৮-র এপ্রিল থেকে শুরু সম্পর্কের। ‘রেশম ঝাঁপি’ নামক এক ধারাবাহিকে কাজ করার সুবাদে পল্লবীর সঙ্গে বন্ধুত্বের শুরু। একসঙ্গে কাজ করতে গেলে একটা বন্ধুত্ব তৈরি হয়ে যায়, তেমনটাই হয়েছিল। দু’মাসের মধ্যে যদিও সেই ধারাবাহিক বন্ধ হয়ে যায়, কিন্তু আমাদের বন্ধুত্ব থেমে থাকেনি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্ব গভীর হয়েছে। লকডাউনে আমরা রোজ দেখা করতাম, ঘুরে বেড়াতাম। ওর মতো হাসিখুশি মেয়ে আমি খুব কম দেখেছি। এই চার বছরের সম্পর্কে আমি পল্লবীকে দু’বার কাঁদতে দেখেছি। একবার প্রত্যুষার (পল্লবীর বন্ধু) সঙ্গে মনোমালিন্য হয়েছিল। আর একবার শুটিংয়ে পড়ে গিয়ে ব্যথা পেয়েছিল। তখন কেঁদেছিল। তাই এখনও বুঝতেই পারছিল না।
আমার সারাজীবন একটা আক্ষেপ রয়ে যাবে যে পল্লবীর খুব শখ ছিল একটা গার্লস ট্রিপের… সেটাই হল না। একবার আমরা প্ল্যান করেছিলাম কিন্তু শুটিং থাকার জন্য ও যেতে পারেনি। আর অন্যবার যখন ঘুরতে যাওয়ার প্ল্যান হয়, প্রত্যুষার জন্মদিন উপলক্ষে তখনও সাগ্নিক (পল্লবীর বয়ফ্রেন্ড) যায় আমাদের সঙ্গে। কারণ পল্লবী-সাগ্নিকের সম্পর্কটা তখন সবেমাত্র গড়ে উঠেছিল। আর প্রথম-প্রথম প্রেমে যা হয় আর কী…
ওদের দু’বছরের সম্পর্কে সাগ্নিকের সঙ্গে আমার দেখা হয়েছে ১০ থেকে ১১ বার। আমাদের তেমন কিছুই বলেনি পল্লবী। আমার সঙ্গে প্রথম দিকে ওর এই সম্পর্ক নিয়ে অল্পবিস্তর কথা-কাটাকাটিও হয়েছিল। সাগ্নিক সবসময় পল্লবীর কাছে নিজেকে দুর্বল প্রমাণ করার চেষ্টা করত। কতটা দুঃখে আছে, সেটাই প্রমাণ করার চেষ্টা করত। বোঝানোর চেষ্টা করত যে স্ত্রীয়ের সঙ্গে খুশি নয় সাগ্নিক। নিজের স্ত্রীয়ের ব্যাপারে অকথা-কুকথা বলত। ফলে যথারীতি পল্লবীর মনও দুর্বল হয়ে যেত। আর এই বিষয়টাকে আমি ভালভাবে দেখিনি। আমি তখন ইনস্টাগ্রামে লিখেওছিলাম, যে নিজের দ্বিতীয়র জন্য প্রথমকে ছাড়তে পারে, সে তৃতীয় কারও জন্য দ্বিতীয়কেও ছাড়তে পারে। এই নিয়ে ও কান্নাকাটিও করে। পরে আমি এমনও বলেছিলাম যে দিন তোর মনে হবে সম্পর্কটা ঠিক চলছে না, সে দিনই বেরিয়ে আসবি। বলতে দ্বিধা করবি না। সাগ্নিক কোথাও গিয়ে পল্লবীর দায়িত্ব হয়ে দাঁড়িয়েছিল।
এখন অনেকেই লিভ-ইন সম্পর্কর দিকে আঙুল তুলছেন, কিন্তু প্রথমে প্রত্যুষা এবং পল্লবী একসঙ্গে থাকত। পরে প্রত্যুষার ধারাবাহিক শেষ হয়ে যাওয়ায় ও বাড়ি ফিরে যায়। আর পল্লবী এখানে একা থাকত, তারপরই সাগ্নিক থাকা শুরু করে পল্লবীর সঙ্গে। কারণ পল্লবীর বাড়ি থেকে সাগ্নিকের অফিস ছিল কাছে। আমার মনে হয়, আমাদের এই স্বাধীনতাটাই স্বেচ্ছাচারিতার রূপ নিয়েছে। আমার সবসময় মনে হয় পরিবার ছেড়ে দূরে আছি, মানে এটা আমাদের দায়িত্ব। ফলে যেন এমন কোনও কাজ না করি যাতে আমাদের মা-বাবারা দুঃখ পায়। তাই স্বাধীনতা যেন অভিশাপ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
আমি জানি এত কিছুর মধ্যেও পল্লবী আমাদের মধ্যেই আছে। সবকিছু দেখছে, শুনছে। আমার ওকে একটাই প্রশ্ন। সাত মিনিট দূরে আমার বাড়ি, কেন আমার কাছে এল না? কেন বলল না কিছু?