জয়িতা চন্দ্র
ভ্রমণপিপাসুদের কাছে পাহাড়ে বেড়াতে যাওয়ার নির্দিষ্ট কোনও মরসুম হয়? প্রতিটা ঋতুতেই পাহাড়ের সৌন্দর্য নজর কাড়ে। শহুরে কোলাহল থেকে দূরে, প্রকৃতির কোলে সর্পিল পথে সফরের আনন্দ এক কথায় স্বর্গীয় সুখ। আর সেই সফরসঙ্গী যদি হন একজন গায়ক? সিনেমাপ্রেমী মানুষের হয়তো অনেকেরই ‘আরাধনা’ ছবির রাজেশ খান্নার কথা মনে পড়ে যেতে পারে, ‘মেরে স্বপ্নোঁ কি রানি কব আয়েগি তু…’। না, কল্পনা নয়, কয়েকমাস আগে পর্যন্ত এটাই নিত্যদিনের রুটিন ছিল জি বাংলার রিয়ালিটি শো ‘সারেগামাপা’র প্রতিযোগী অ্যালবার্ট কাবোর। তিনি গাইড। দার্জিলিংয়ে যাওয়া ভ্রমণপিপাসুদের অনেকেই চেনেন অ্যালবার্টকে।
ছোট থেকেই গান গাইতে ভালোবাসেন অ্যালবার্ট। পাহাড়ে অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টস করান তিনি। অন্ধকার নামলে তেমন কিছু করার থাকে না। আর সেটাই সময় অ্যালবার্টের জলসার। বর্ন-ফায়ারের আসরে একের পর এক স্থানীয় গান ধরতেন তিনি। কিন্তু প্রকৃত প্রশিক্ষণের অভাবে সেভাবে গান শেখা হয়নি তাঁর। তবে যাত্রীদের নিয়ে যখন অ্যালবার্ট যখন সফরে যেতেন, তাঁর কণ্ঠস্বরে মুগ্ধ হয়ে থাকতেন অনেকেই। বেশ কিছু শুভাকাঙ্খী, কাছের মানুষ, বন্ধুদের পরামর্শেই তিনি সারেগামাপা-র অডিশনে হাজির হন। সেখান থেকেই পাল্টে যায় অ্যালবার্ট কাবোর জীবন। TV9 বাংলাকে অ্যালবার্ট কাবো জানালেন, অতীতে যখন পাহাড়ে পর্যটকেরা তাঁর সঙ্গে ঘুরতে যেতেন, তখন মাঝেমধ্যেই ট্য়ুরিস্টকে গান শোনাতেন তিনি।
ছোট থেকেই কি ইচ্ছে ছিল বড় হয়ে গায়ক হওয়ার?
গান তো ছোট থেকেই গাই। তবে আমার কোনও ট্রেনিং ছিল না। গান গাইতে আমার খুবই ভাল লাগে। শিলিগুড়িতে থাকার সময় একটা ব্যান্ডের সঙ্গেও যুক্ত ছিলাম আমি। সেখান থেকেই হিন্দি গানের চর্চা শুরু। নয়তো পাহাড়ে নেপালি গানের প্রচলনই বেশি। দার্জিলিং থেকে শিলিগুড়িতে আসার পরই হিন্দি শেখা। এমনভাবেই চলছিল সবটা। একদিন আমি খবর পাই ‘সারেগামাপা’র অডিশন রয়েছে। তারপর সবটাই এখন দর্শকদের সামনে।
প্রতিযোগিতা মানেই হারা-জেতা… এরপর?
প্রশিক্ষণের যে অভাবটা আমার ছিল, সেই শিক্ষা সারেগামাপা-র সেট থেকেই পাচ্ছি। এবার ভাবছি কলকাতায় কাজ করব, এখানে থাকার ইচ্ছেও রয়েছে। তবে নিজের জায়গায় তো ফিরতেই হবে, মাঝেমধ্যে যাব। তবে এখনও কিছু স্থির করিনি। আমার জীবনে মিউজিকের এই জার্নিটা সবে শুরু হয়েছে। এরপর কী হবে, তাই-ই ভাবি মাঝেমধ্যে।
নেপালি গানের জগতে কাজ করার কথা ভেবেছেন?
নিশ্চয়ই গাইব। সুযোগ পেলেই গাইব।
পাহাড়ের কাছে আপনি অনুপ্রেরণা…
এখন সবাই খুব ভালবাসেন। যাঁরা চিনতেন না, তাঁরাও এখন চিনে গিয়েছেন। অনেকেই খোঁজ করছেন। অনেকেই জানতে চান কীভাবে এই ইন্ডাস্ট্রিতে আসা যায়, কলকাতার ব্যাপারেও জানতে চান। আশা করি অনেকেই এবার স্বপ্ন দেখার পাশাপাশি সেটাকে সত্যি করার সাহস পাবেন।
এখন গোটা বাংলা আপনাকে চেনে। দার্জিলিংয়ে বেড়াতে গেলে এখন অনেকেই তো আপনার খোঁজ করবেন। চাইবেন আপনার সঙ্গে ট্রিপ করতে, তা নিয়ে কিছু ভেবেছেন?
দেখুন এই পর্যটনের ব্যবসা তো আমার পারিবারিক। সেখানে অনেকেই আছেন, যাঁরা এখন সামলাচ্ছেন। তাঁদের মুখেই শুনি অনেকে আমার খোঁজ করছেন, আমার কথা জানতে চাইছেন।