দুর্গাপুরের মেয়ে অলিভিয়া সরকার। বাবা-মা দু’জনেই ক্রীড়া জগতের মানুষ। মধ্যবিত্ত মূল্যবোধ নিয়ে বড় হয়েছিলেন। পরিবারের থেকে সবসময়ই সমর্থন পেয়েছিলেন অলিভিয়া। একটা সময় ঠিক করেন তিনিও অভিনয় করবেন। জীবন তাঁকে কোনওদিনও একবার সুযোগে সিঁড়ি পাইয়ে দেয়নি। তাঁকে দ্বিতীয়বার চেষ্টা করতে হয়েছে এবং তাতে তিনি সফল হয়েছেন। তাই তো অভিনেত্রী মনেপ্রাণে বিশ্বাস করেন, সাফল্যই উপরে ওঠার সিঁড়ি। একাধিক সিরিয়ালে অভিনয় করেছেন অলিভিয়া। অনেকবার নাকচ হয়েছেন। অনেকবার কটুক্তিও শুনেছেন। কিন্তু হেরে যাননি। নিজের লক্ষ্যে স্থির ছিলেন। তাই একটা সময় পর মানুষ তাঁকে ডাকতে শুরু করেন। তিনি কাজের মাধ্যমে প্রমাণ করতে শুরু করেন নিজের প্রতিভা।
একটা সময় বাংলা সিরিয়ালে পরপর খলনায়িকার চরিত্রেই অভিনয় করেছেন অলিভিয়া। ‘সীমারেখা’ ধারাবাহিকে টিয়ার চরিত্রে অভিনয় করে জনপ্রিয় হয়েছিলেন অলিভিয়া। ‘টাইপকাস্ট’ও হয়েছিলেন বেশ কয়েকবার। অর্থাৎ, খলনায়িকার চরিত্রের জন্যই তাঁকে ডাকা হচ্ছিল বারবার। কিন্তু তেমনটা চাইছিলেন না অলিভিয়া। বলেছিলেন, “আমাদের ইন্ডাস্ট্রির এটা একটা সমস্যা। টাইপকাস্ট করে দেয়। আমার সঙ্গেও তেমনটাই হয়েছে বারবার। আমাকেও বারবারই ভিলেন কিংবা ভ্যাম্পের চরিত্রে ডাকা হচ্ছিল। কিন্তু আমি চাইছিলাম এক্সপ্লোর করতে। অভিনয়ের সবকটি দিক ঘুরে দেখতে।”
তেমনটাই হল। পরিচালক দেবালয় ভট্টাচার্য তাঁকে সরমা চরিত্রের জন্য কাস্ট করলেন ‘মন্টু পাইলট’ ওয়েব সিরিজ়ে। যৌনকর্মীর চরিত্র। কঠিন এবং কালো। এই চরিত্রটিকে পর্দায় ফুটিয়ে তোলার জন্য পরিচালক তাঁকে বলেছিলেন, “১৫ দিন না হেসে থাকতে পারবি।” অলিভিয়া তাই করেছিলেন। সরমা হয়ে ওঠার জন্য তিনি টানা ১৫দিন হাসেননি। এবং সেই চরিত্রটিতে অভিনয় করে বিপুল তৃপ্তি পেয়েছিলেন শিল্পী। দাদার থেকে বার্তা এসেছিল, “আমি তোর জন্য গর্বিত।” এটাই চেয়েছিলেন অলিভিয়া। তিনি মনে করেন, গোটা বিশ্বের লোকের থেকে না হলেও কাছের মানুষগুলোই যেন তাঁর কাজের জন্য গর্ববোধ করেন। একজন শিল্পী এর চেয়ে বেশি আর কীই বা চাইতে পারেন।