২০১০ সালে টেলিভিশনের পর্দায় সম্প্রচার শুরু করেছিল বাংলা ধারাবাহিক ‘গানের ওপারে’। প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় এবং অর্পিতা চট্টোপাধ্যায় প্রযোজিত, ঋতুপর্ণ ঘোষের চিত্রনাট্যের উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছিল ২৫১ এপিসোডের ‘গানের ওপারে’। সেই ধারাবাহিকেই নবাগতা হিসেবে সুযোগ পেয়েছিলেন টলিউড ইন্ডাস্ট্রির প্রথম সারির নায়িকা মিমি চক্রবর্তী। প্রথম কাজের সুযোগ পেয়েছিলেন অভিনেতা সব্যসাচী চক্রবর্তীর দুই পুত্র গৌরব চক্রবর্তী এবং অর্জুন চক্রবর্তী। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এই ধারাবাহিক ছিল দর্শকের কাছে দারুণ এক নান্দনিক উপহার। ধারাবাহিকের নামেই সেই প্রকাশ। রবীন্দ্রনাথের বিখ্যাত ‘গানের ওপারে’ থেকেই এর নামকরণ। ধারাবাহিকেও ছিল রবীন্দ্রচর্চার নানা দিক। রবীন্দ্রচর্চা করে এমন এক সম্ভ্রান্ত ‘দেব’ পরিবারকে ঋতুপর্ণ তুলে ধরেছিলেন ছোট পর্দায়। সেই পরিবারের ব্রাহ্মসমাজের আচার্য চন্দ্রশেখর দেব এক রবীন্দ্র বিশেষজ্ঞ এবং সংগীতশিল্পী। উত্তরাধিকারী হিসেবে গড়ে তুলেছিলেন নিজের নাতনি পুপে, অর্থাৎ সোহিনী দেবকে।
ধারাবাহিকে এই চন্দ্রশেখর দেবের চরিত্রেই অভিনয় করেছিলেন দীপঙ্কর দে। এবং পুপে রূপে মিমি চক্রবর্তী। সাদা শাড়ি, লম্বা খোলা চুল, মোটা করে চোখে কাজল, মাথায় কালো টিপ এবং কাঠের মানানসই গয়নায় ঋতুপর্ণা সাজিয়েছিলেন মিমিকে। যে মিমিকে আজও এক শ্রেণির মানুষ পুপে হিসেবেই মনে রেখে দিয়েছেন। রবীন্দ্রনাথেরও এক পালিত নাতনি ছিলেন যাঁকে তিনি আদর করে পুপে নামেই ডাকতেন। ঋতুপর্ণার সেই নামটি দিয়েছিলেন মিমিকে।
দীপঙ্করের সেই চেনা মিমি আজ অনেকটা পথ এগিয়ে এসেছেন তাঁর ক্যারিয়ারে। এবারের পূজোতে মুক্তি পেয়েছে মিমি অভিনীত ছবি ‘রক্তবীজ’। ছবিতে পুলিশ অফিসারের চরিত্রে অভিনয় করছেন মিমি। তাঁকে মারামারি করতেও দেখা গিয়েছে। মঙ্গলবার কলকাতার একটি মাল্টিপ্লেক্সে ছিল সেই ছবিরই প্রিমিয়ায়। তাঁর পর্দার ‘ঠাকুরদা’ চন্দ্রশেখর দেব, তথা দীপঙ্কর দেব গিয়েছিলেন পুপে, থুড়ি মিমির অভিনয় দেখতে। TV9 বাংলার মুখোমুখি হতেই বিগলিত দীপঙ্কর আদরের মিমি সম্পর্কে বলেছেন, “মিমি আমার পুপে। ওটাই ছিল মিমির প্রথম কাজ আমার নাতনি রূপে। আজ ও যে জায়গায় এসেছে, তা নিজের ক্ষমতায় এবং দক্ষতায় হয়েছে। ওর অভিনীত ‘রক্তবীজ’ দেখতে এসেছি আমি। ‘গানের ওপারে’ সিরিয়ালে পুপের জন্যে ওর ঠাকুরদার যেমন আশা ছিল অনেক, মিমির সম্পর্কেও তেমনই আশা আছে আমার। খুব ভাল অভিনেত্রী। খুব ভাল মেয়ে। এখন আবার নামকরা সাংসদও। কিছু বলার নেই আর (হাসি)। ওর মঙ্গল কামনা করি আমি।”