গত রবিবার (২৫.০৯.২০২২) ছিল মহালয়া। রেডিয়োতে মহিষাসুরমর্দিনী শোনার পর বিভিন্ন চ্যানেলে শুরু হয় মহালয়ার অনুষ্ঠান। সিরিয়াল ও সিনেমার জনপ্রিয় নায়িকারা সেজেছিলেন দুর্গা। অভিনেতাদের কাউকে দেখা যায় শিব, অন্যান্য দেব-দেবী এবং অসুরের চরিত্রে। টেলিভিশনের পর্দায় মহালয়ার অনুষ্ঠান দেখার পর সোশ্য়াল মিডিয়ায় নানা মুনি নানা মতামত প্রকাশ করতে শুরু করেছেন। অধিকাংশ মন্তব্যই বিপক্ষে যদিও। তুলনা শুরু হয়েছে দুরদর্শনের মহালয়ার অনুষ্ঠানের সঙ্গেও। অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র ‘সিমপ্লিসিটি’ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। একটি দীর্ঘ পোস্টে শ্রীলেখা লিখেছেন,
শ্রীলেখা মিত্রর পোস্ট:
“মা দুর্গা সাজতে গেলে ডিজ়াইনার শাড়ি গয়না লাগে না। স্পেশ্যাল এফেক্টস দিয়ে ‘খামতি’গুলো পূরণ করা যায় না। চ্যানেল এবং বাকিরা বুঝবেন কবে? আমাদের ছোটবেলার মা দুর্গা সেজেছিলেন সংযুক্তা বন্দ্যোপাধ্যায়, দূরদর্শনে। তাঁকে মানাত। কারণ তাঁর মুখের শ্রী ছিল মায়ের মতো। আপনাদের সেটা নেই, দোষ আপনাদের নয়, সিস্টেমের… পলিটিক্যাল এবং ক্ষমতার। আবার ভাববেন না প্লিজ়, আমায় কোনওদিন মা দুর্গা হতে দেখেননি বলে আমি হিংসেতে বলছি। আর বললেও কী বা যায় আসে আমার। আপনারা বলুন? সিমপ্লিসিটি সর্বদা রাজ করে। এটা বুঝলে আমার ১৪ পুরুষের ভাগ্য।”
TV9 বাংলাকে শ্রীলেখা বলেছেন, “ছোটবেলার কথা খুব মনে হচ্ছে। মনে হচ্ছে আমাদের সময়কার দূরদর্শনের কথা। তখনকার দিনে এখনের মতো জাঁকজমক ছিল না। খুব সাধারণ ছিল তো সবকিছু। তাই টিভির পর্দায় মহালয়াও ছিল সাধারণ। এখন অনেক সরঞ্জাম ব্যবহার করা হয়। কিন্তু অন্তরের সৌন্দর্য মিসিং। মায়ের যে মুখশ্রী দেখে অন্তর থেকে ভক্তি জাগবে, সেই বিষয়টা হারিয়ে গিয়েছে। সিমপ্লিসিটি নেই এক্কেবারেই। যাঁর জন্য সবাই বিদ্রুপ করছে। আসলে আমার নিজের মাকে হারানোর পর মা দুর্গার মধ্যে আমার নিজের মাকেই খুঁজি।”
এ বছর ২৫ অক্টোবর পালিত হয় মহালয়া। ভোর ৪টের সময় বরাবরের মতো এবারও রেডিয়োতে ভেসে ওঠে কায়েস্ত সন্তান বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের সেই স্বর্গীয় চণ্ডীপাঠ। এবার পয়লা অক্টোবর থেকে দুর্গা পুজো শুরু। সেদিন ষষ্ঠী। কলকাতা ও তাঁর সংলঘ্ন এলাকার দুর্গা পুজোর প্যান্ডেলের উদ্বোধন অবশ্য় মহালয়ার আগে থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে। কলকাতা ও সারা বাংলা সেজে উঠেছে শরতের সাজে। এবারের বাড়তি আনন্দ – কলকাতার দুর্গাপুজো পেয়েছে হেরিটেজ তকমা।