সেরিব্র্যাল অ্যাটাকে আক্রান্ত হয়েছেন অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরীর বাবা। হাসপাতালে এই মুহূর্তে অচৈতন্য হয়ে যুদ্ধ করছেন তিনি। তবে পেশাদারিত্ব বড় দায়। বাবার চিন্তা, দায়িত্ব সব কিছু সামলেই শহরে এলেন চঞ্চল। যোগদান করলেন ২৮ তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে। কিছু দিন আগে তাঁর আসন্ন ওয়েব সিরিজ ‘কারাগার ২’-এর সাংবাদিক সম্মেলনে শহরে এসেছিলেন চঞ্চল। সে সময়েই তিনি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন চলচ্চিত্র উৎসবে তিনি অবশ্যই হাজির হবেন। কথা রেখেছেন অবশেষে। হাজির হয়েছেন চঞ্চল। এ দিন তাঁকে চলচ্চিত্র উৎসবে বরণ করে নেন আবির চট্টোপাধ্যায়। গোটা অনুষ্ঠান জুড়েই মুখে ছিল তাঁর চিন্তার ভাঁজ। হাজার হোক, মন যে ভাল নেই তাঁর। আগামীকাল অর্থাৎ শুক্রবার মুক্তি পাচ্ছে চঞ্চলের ছবি ‘হাওয়া’। সেই উপলক্ষে বুধবার শহরে অনুষ্ঠিত হয়েছিল এক সাংবাদিক সম্মেলন। ছবির পরিচালক ও অন্যান্য অভিনেতা হাজির থাকলেও আসতে পারেননি চঞ্চল। জানা যায়, বাবার অসুস্থতার কারণেই এ হেন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি।
এ দিন বাবাকে নিয়ে এক পোস্টও করেছিলেন চঞ্চল। লিখেছিলেন, বাড়ির উঠোনেই স্কুল ছিল তাঁদের। বাবা ছিলেন সেই স্কুলের প্রধান শিক্ষক। ছাত্র হিসেবে বরাবরই ভাল ছিলেন অভিনেতা। কিন্তু দুষ্টুমিতেও ছিলেন সেরা। চঞ্চলের কথায়, “বাবা স্কুলের প্রধান শিক্ষক। স্কুলের মাঠ, গাছপালা, স্কুল, ঘর, বই পত্র, সব কিছুকেই পৈতৃক সিম্পত্তি ভাবতাম। একজন সৎ এবং স্বনামধন্য শিক্ষক হিসেবে আমার বাবাকে এলাকার সবাই একনামে চিনত,এখনও চেনে।” চঞ্চল বড় হলেন। তৈরি হল আলাদা পরিচিতি। যদিও তিনি জানিয়েছেন, যে কোনও জায়গায় গেলে দুলাল মাস্টারের সন্তান হিসেবেই পরিচিতি বেশি পেতেন তিনি। একদিন বাবাকে জিজ্ঞাসা করেন, “ছোটবেলা থেকে তোমার পরিচয়ে পরিচিত হয়ে এসেছি,এখন যখন তোমাকে কেউ চঞ্চল চৌধুরীর বাবা বলে চেনে,তোমার কেমন লাগে?”
অভিনেতার বাবা উত্তর দেননি সেদিন। শুধু চোখ ভিজে গিয়েছিল আবেগে। ছেলের জন্য গর্ব যেন সেদিন ঝরে পড়ছিল তাঁর বাবার চোখ দিয়ে। আবেগে বিহ্বল হয়ে পড়েছিলেন তিনি। আর চঞ্চলও বুঝেছিলেন তাঁর কাজে সবচেয়ে বেশি গর্ব অনুভব করেন যে মানুষটা তিনি আর কেউ নন, তাঁর বাবা। চোখ দুটো ঝাপসা হয়ে গিয়েছিল তাঁরও। চঞ্চল যোগ করেন, “সন্তানের সকল সফলতায় বাবা মায়ের যে কী শান্তি, কী আনন্দ…তা আমি দেখেছি।” সেই বাবাই আজ হাসপাতালের শয্যায় অচেতন। ভাল নেই চঞ্চল। তাঁর সহজ স্বীকারোক্তি, “বাবাকে হাসপাতালের বিছানায় রেখে কোনও সন্তানই ভাল থাকতে পারে না। আমিও ভাল নেই।” আপাতত সুস্থ হয়ে উঠুক তাঁর বাবা। এমনটাই চাইছেন অভিনেতার অনুগামীরা।