স্নেহা সেনগুপ্ত
সম্প্রতি তেলেঙ্গানায় আয়োজিত বাংলা ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে পপুলার চয়েস-এ সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার পেয়েছেন অভিনেত্রী শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়। আপাতত মুম্বই এবং দক্ষিণে কাজ করার মোহ নেই তাঁর। বাংলা ছবিতেই নিজের ১০০% দিয়ে পারফর্ম করতে আগ্রহী তিনি। বাঙালি দর্শককে এখন বাংলা ছবির পাশে এসে আলাদা করে দাঁড়াতে বলতে হচ্ছে—এটা কি শ্রাবন্তীকে দুঃখ দেয়? জানালেন TV9 বাংলাকে।
প্রশ্ন: তেলেঙ্গানার বাংলা চলচ্চিত্র উৎসব আয়না ২০২২-তে সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার পেয়ে কেমন লাগছে?
শ্রাবন্তী: গত সোমবারই আমি কলকাতায় ফিরেছি। পুরস্কার পেয়ে ভাল লাগছে। ওরা ‘ভয় পেও না’ ছবিটার জন্য পুরস্কার দিয়েছে।
প্রশ্ন: এমনিতে পুরস্কার পেতে কেমন লাগে আপনার?
শ্রাবন্তী: জানেন তো, পুরস্কারের চেয়েও মানুষের প্রশংসা বেশি পছন্দ করি আমি। পুরস্কার সেই অর্থে বাড়তি পাওনা। অন্য ধরনের প্রিভিলেজ মনে হয়। কিন্তু হ্যাঁ, আমার বেশি ভাল লাগে দর্শক যখন আমাকে দেখে প্রচণ্ড খুশি হয়, তাঁদের ভালবাসা আমার উপর ছড়িয়ে দেয়। তবে তেলেঙ্গানার এই ফিল্ম ফেস্টিভ্যালকে আমি অনেক ধন্যবাদ জানাতে চাই।
প্রশ্ন: দক্ষিণ ভারতীয় অনেককিছু নিয়েই আমাদের এবং দেশের বিরাট অংশের মধ্যে একটা উন্মাদনা রয়েছে। সেখানকারই একটি রাজ্যের বাঙালি বাসিন্দাদের থেকে ভালবাসা-সম্মান নিশ্চয়ই আলাদা করে আপ্লুত করে তোলে আপনাকে?
শ্রাবন্তী: একদমই। এর আগে হায়দরাবাদে প্রচুর শুটিং করেছি। আর এই প্রথমবার হায়দরাবাদ ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে গিয়েছি। এইভাবে যেতে পেরে খুবই ভাল লাগছে। ওখানকার প্রবাসী বাঙালিরা এতটা অ্যাপ্রিশিয়েট করেছেন, পপুলার চয়েসের নিরিখে আমাকে জিতিয়েছেন, ভোট দিয়েছেন আমার জন্য, সেটা দেখে আমার খুবই ভাল লাগছে।
প্রশ্ন: কৌশিক গঙ্গোপাধ্য়ায়ের ‘কাবেরী অন্তর্ধান’ তো আসছে। আর কী-কী কাজ আসছে আপনার?
শ্রাবন্তী: হ্যাঁ ‘কাবেরী…’ আসছে। ‘রবীন্দ্রনাথ কাব্য রহস্য’ আসছে। সায়ন্তন ঘোষালের ছবি সেটা। তারপর আসছে ‘ডিয়ার ডি’। রবীন নাম্বিয়ার সেটার পরিচালক। এই তিনটে ছবির শুটিং শেষ। কেবল মুক্তির অপেক্ষায়। পরের মাস থেকে শুরু হবে ‘মীরজাফর’-এর শুটিং। এটা রানা সরকারের প্রযোজনায়।
প্রশ্ন: সব কটাই বাংলা ছবি…
শ্রাবন্তী: হ্যাঁ, সবগুলোই।
প্রশ্ন: এখন তো দেখা যাচ্ছে বাংলা ছবির পাশে এসে দাঁড়াতে বলছেন কিছু স্বঘোষিত টলিউডপন্থী। আপনি একজন প্রথম সারির অভিনেত্রী… বাংলা ছবির পাশে আলাদা করে দাঁড়ানোর আর্জি কেন জানাতে হচ্ছে? এই আর্জি তো আগে জানাতে হত না, দর্শক এমনিতেই বাংলা ছবি দেখতে হলে যেতেন…
শ্রাবন্তী: আমরা ইন্ডাস্ট্রির প্রত্যেকেই চাই বাংলা ছবি দর্শক দেখুন। কিন্তু এটাও তো দেখি, বাঙালি হয়েই কেউ-কেউ বলছেন, ‘আমরা বাংলা সিনেমা দেখি না খুব একটা’। এটা শোনার পর আমার খুব অভিমান হয়। আমার মনে হয়, বাঙালি হয়ে বাংলা ছবিকে আগে জায়গা দেওয়া উচিত। নিজের জায়গা, নিজের ভাষাকে তো লোকে আগে সাপোর্ট করবে, তাই নয় কী? এটা কিন্তু দক্ষিণে দেখা যায়। দক্ষিণী ছবির দর্শক ওদের ভাষায় তৈরি ছবি দেখাকে ধর্ম বলে মনে করে। ওদের ভাষার সিনেমাকে ওরা রীতিমতো পুজো করে। আমরা সেটা করি না কেন? আমার মনে বারবারই এই প্রশ্ন জাগে।
প্রশ্ন: মুম্বইয়ে কোনও কাজের অফার পেলেন?
শ্রাবন্তী: না, এখনও পর্যন্ত আমার ওখানে গিয়ে কাজ করার কোনও প্ল্যানিং নেই।
প্রশ্ন: দক্ষিণে পেলেন?
শ্রাবন্তী: দেখা যাক পাই কি না। তবে এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে আমি বাংলা ভাষায় তৈরি ছবিতেই কাজ করা নিয়ে বেশি আগ্রহী।
প্রশ্ন: বাংলাদেশে তো আপনার অনেক অনুরাগী, সেখান থেকে কাজের অফার ক’টা এল?
শ্রাবন্তী: একটা প্ল্যানিং চলছে। কিন্তু এখনও ফাইনাল কিছুই হয়নি।
অলঙ্করণ: অভীক দেবনাথ