হালিশহরের ছেলে তিনি। কলকাতায় এসেছিলেন চোখে অনেক স্বপ্ন নিয়ে। সত্যিই তো স্বপ্ন ছাড়া তাঁর আর কোনও সম্বল ছিল না। সঙ্গে ছিল ভরসা দেওয়ার মতো কিছু বন্ধু। সেই বন্ধুদের তালিকায় ছিলেন অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষের মতো কিছু মানুষও। এ গুলো সব অনেক পুরনো কথা। কিন্তু এগুলো জানলে মানুষের লড়াই সম্পর্কে আলাদা ধারণা তৈরি হতে পারে। সময়ের সরণী বেয়ে জীবন পাল্টেছে পরিচালক রাজ চক্রবর্তীর। আজ তিনি কেবল পরিচালক নন। শাসক দল তৃণমূলের বিধায়কও। সেই সঙ্গে কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের চেয়ারম্যানও।
এই রাজই এক সময় কলকাতায় এসে ভাড়া বাড়িতে বসবাস করতেন। তাঁর রুমমেট ছিলেন রুদ্রনীল ঘোষ। বাড়ি ভাড়া বাবদ রাজের দরকার ছিল ৩০০ টাকা। সেই ৩০০ টাকা রোজগার করতে হত রাজকেই। এদিকে হাতে কোনও কাজই নেই। সেই সময় পাশে এসে দাঁড়িয়েছিলেন রুদ্রনীল ঘোষ। তখন তিনিও স্ট্রাগল করছেন কলকাতায়। তিনি রাজকে করে দিয়েছিলেন ৩০০ টাকার জোগান। কেমন সেই জোগান জানলে অবাকই হবেন আপনি।
একটি শোয়ে বাদর সাজতে বলা হয়েছিল রাজ চক্রবর্তীকে। তেমনটা করলে তবেই তিনি পাবেন ৩০০ টাকা। সে রকমই ছিল চুক্তি। রাজ রাজি হয়েছিলেন মাথা গোঁজার ঠাঁইয়ের দায়ে। মাত্র ৩০০ টাকার বিনিময়ে বাঁদর সেজেছিলেন আজকের রাজ চক্রবর্তী। তাঁর কাজ ছিল মুখ থেকে ‘হুপ-হুপ’ শব্দ বের করা।
এ হেন রাজ একটা সময় জুনিয়র আর্টিস্টের চরিত্রেও অভিনয় করেছিলেন। তাঁকে একটি মশাল নিয়ে সাত-আটবার দৌড়াতে বলা হয়েছিল একটি ছবির সিনে। পায়ে চটি পর্যন্ত দেওয়া হয়নি। ছুলে গিয়েছিল পায়ের পাতা। চটি চাইতে যাওয়ায় অসম্মানিত হয়েছিলেন রাজ চক্রবর্তী।
যে কারণে পরবর্তী সময়ে তিনি নিজে যখন পরিচালক হিসেবে কাজ করতে শুরু করেন, বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখেন জুনিয়র আটিস্টরা যেন অসম্মানিত না বোধ করেন তাঁর সেটে। রাজের কাছে সকল জুনিয়র আর্টিস্টই আর্টিস্ট। তিনি মনে করেন শিল্পীর কোন ছোট-বড় হয় না। এ সব কথাই রাজ চক্রবর্তী বলেছিলেন একটি টক শোতে সে।