স্নেহা সেনগুপ্ত
শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে ফেঁসে এই মুহূর্তে প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে বন্দি রাজ্যের একদা তৃণমূল মহাসচিব এবং একদা মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়। ভাবছেন কারাবাসে থেকে কীভাবে ছবি তৈরি করছেন পার্থ! আসলে টুইস্টটা সেখানেই। এই পার্থ সেই পার্থ নন। কেবলই ‘নেমসেক’। নাম-পদবি সবটাই এক। যে পার্থ জেলবন্দি, তিনি এই ছবি তৈরি করেননি। তৈরি করেছেন অন্য এক পার্থ চট্টোপাধ্যায়। ছবির নাম ‘বিদূষক’। যিনি ছবির পরিচালক, তিনি অমিতাভ ভট্টাচার্য। ছবিতে মুখ্য চরিত্রের নাম মদন। সেই চরিত্রে অভিনয় করেছেন থিয়েটারের দুর্দান্ত অভিনেতা গৌতম হালদার। মদন টোটো চালক। সে ভাল থিয়েটার করে। বাবা ছিলেন নামজাদা ফুটবলার। একটা সময় পর্যন্ত মদনও ভাল ফুটবল খেলত। কিন্তু পায়ে চোট পাওয়ার কারণে ফুটবল খেলা বন্ধ হয় তার। রুজিরোজগারের জন্য টোটো চালায় সে। ছবিটি তৈরি হয়েছে মাস তিন আগে। পরিচালক শেয়ার করেছেন ছবির একটি পোস্টার।
এই সেই পোস্টার:
ছবি সম্পর্কে TV9 বাংলার সঙ্গে কথা বলেছেন গৌতম, অমিতাভ দু’জনেই।
গৌতম হালদার যা বললেন:
“ছবিটা তৈরি হয়ে গিয়েছে। আমরা দেখেওছি। অমিতাভ পরিচালক এবং পার্থবাবু প্রযোজক। ‘মুক্তি প্রাইম’-এর ছবি। খুব অন্যরকম একটা কাজ। ছবির টাইটেল ‘বিদূষক: অ্যান অ্যাক্টর’। সেই চরিত্রটাকে ঘিরেই তৈরি হয়েছে ছবির চিত্রনাট্য। অসম্ভব ইন্টারেস্টিং চরিত্র লিখেছেন অমিতাভ। সেই জন্যই কিন্তু আমি করতে রাজি হয়েছি। চরিত্রের নাম মদন। সে টোটো চালায়। কিন্তু সকলে তাঁকে ‘মদন রিক্সাওয়ালা’ বলে ডাকে। মদন থিয়েটার করে। ফুটবলার ছিল। তার বাবাও নামকরা ফুটবলার। পায়ে চোট পেয়ে মদনের ফুটবল খেলা বন্ধ হয়। অভিনয় কী এবং সৃষ্টি কী – এই বিষয়টির খোঁজ রয়েছে গোটা ছবি জুড়ে। মদন আসলে জীবনের মানে খোঁজার চেষ্টা করে। একজন টোটোওয়ালার মধ্যে লুকিয়ে থাকা শিল্পীর গল্প।”
কেন গৌতমকে বেছে নিলেন পরিচালক?
পরিচালক অমিতাভ ভট্টাচার্য বলেছেন, “গৌতম হালদারের মতো অভিনেতা বঙ্গদেশে খুঁজে পাওয়া কঠিন। তিনি এমন একজন অভিনেতা, যিনি কত্থক জানেন, মুনওয়াক করতে পারেন, একটি সংলাপকে ১৭-১৮ রকমভাবে বলতে পারেন। গৌতমদাকে ভেবেই আমি মদনের চরিত্রটা তৈরি করেছি। এবং সেই জন্যই ছবিটা তৈরি হয়েছে। গৌতমদা অভিনয় করতে রাজি না হলে আমি ছবিটা বানাতামই না।”
পরের বছর মুক্তি পাবে ছবি। কিন্তু কোন তারিখে মুক্তি পাবে, তা নিয়ে কোনও কিছু চূড়ান্ত করেননি নির্মাতারা। ছবিতে গৌতম ছাড়াও অভিনয় করেছেন ত্বরিতা চট্টোপাধ্যায়, অনিন্দ্য বন্দ্যোপাধ্যায়, কৌশিক কর, অনুষ্কা চক্রবর্তী, প্রীতি ভট্টাচার্য, মুস্কান খান, বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় ও অন্যান্যরা। ছবির সিনেম্যাটোগ্রাফি করেছেন গোপী ভগৎ, বিজিএমের দায়িত্বে ছিলেন গৌরব চট্টোপাধ্যায়। গান গেয়েছেন চিরন্তন বন্দ্যোপাধ্যায়।