সোমবার, ৮ মে রাজ্যে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয় ‘দ্য কেরালা স্টোরি’। নবান্নে এক সাংবাদিক বৈঠক করে সে দিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, রাজ্যে শান্তি-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতেই তিনি এহেন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তারপর থেকেই তোলপাড়া গোটা দেশ। রাজনৈতিক মহল থেকে শুরু করে সিনেপাড়া, যে যাঁর মতো এই সিদ্ধান্তের পক্ষে-বিপক্ষে মত রাখছেন। সোশ্যাল মিডিয়াও দুই ভাগে বিভক্ত। এই ঘোষণার পর কেটে গিয়েছে দু’দিন। ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোর এখনও চলছে জোর। এবার মুখ্যমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে কী মত বিধায়ক তথা তৃণমূল-ক্যাম্পের পরিচিত মুখ চলচ্চিত্র পরিচালক রাজ চক্রবর্তীর? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সিদ্ধান্তের ঠিক দু’দিনের মাথায়, বুধবার, ১০ মে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে কলকাতা আন্তর্জাতিক ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের সভাপতি রাজ বলেন, “প্রত্যেক ক্ষেত্রে সিনেমাকেই অস্ত্র করা হয়।”
মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার প্রসঙ্গে সাংবাদিকরা তাঁকে প্রশ্ন করলে রাজ তাঁর মতামত জানিয়েছেন অকপটে। যেখানে বিধায়ক কার্যত আঙুল তুললেন রাজনীতির কৌশলের দিকেই। ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ নিষিদ্ধকরণের পরিপ্রেক্ষিতে রাজ বলেছেন, ”এক-একটি রাজনৈতিক দলের এক-এক ধরনের স্ট্র্যাটেজি থাকে; নানাভাবে দলকে পরিচালনা করা হয়।” এরপরই রাজের সংযোজন, “আমাদের ইন্ডাস্ট্রিকেই সব জায়গায় টার্গেট করা হয়। আমাদেরই সব জায়গায় নানা ধরনের বিষয়ে ব্যবহার করা হয়।” ঘটনাচক্রে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিকে যে যুগে-যুগে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল বিবিধ কারণে টার্গেট করে, সেই ইতিহাস খুব অজানা নয়ও কারও।
পরিচালক-বিধায়ক রাজ চক্রবর্তীর এই ধরনের মন্তব্যে শোরগোল পড়ে গিয়েছে রাজনৈতিক মহলে। যদিও তিনি আরও ভেঙে বলেছেন, ”কোন সময় কোনটা করলে ভাল হয়, তা অনেক দলই জানে। মানুষকে কীভাবে মোটিভেট করতে হয়, সেটাও অনেকে জানেন। আমাদের ইন্ডাস্ট্রিকে টার্গেট করা হয়। আমাদেরই নানারকম সাবজেক্টের মধ্যে ব্যবহার করা হয়।” ফলে বোঝাই যায়, ছবির পক্ষেই সওয়াল করেছেন তিনি: কেন বারবার হাতিয়ার করা হয় বিনোদন জগতকেই?
কেবল রাজ চক্রবর্তীই নন, বাংলার বুকে বহু স্টারই ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ প্রসঙ্গে মুখ খুলছেন। কেউ করছেন সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট, কেউ প্রকাশ্যে প্রশ্ন তুলেছেন। কারও আবার যুক্তি: ‘দাঙ্গা কাম্য নয়’, সাধারণ মানুষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা দেখেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে সরকারের তরফে। এ দিকে, ‘দ্য কেরালা স্টোরি’কে কেন্দ্র করে যে দু’টি মামলা দায়ের হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে, সে ব্যাপারে শুনানির দিন স্থির করেছে শীর্ষ আদালত।