শঙ্কর চক্রবর্তী ও স্বণালী চক্রবর্তী বিয়ের পিঁড়িতে বসেছিলেন ১৯৯০ সালে। তবে সেই সময় মোটেও খুব একটা স্বচ্ছল ছিল না শঙ্কর চক্রবর্তীর সংসার। কোনও মতে থিয়েটার করে তিনি রোজগার করছেন ৬০-৭০ টাকা। দূরদর্শনে দেওয়া একটা সাক্ষাৎকারে সঞ্চালক চৈতালী দাসগুপ্তকে অভিনেতা জানিয়েছিলেন তাঁর স্ট্রাগলের কথা। তিনি জানান, ১৯৯০ সালে বিয়ে করে রীতিমত চাকরি করতে বাধ্য হয়েছিলেন। সংসার চালাতেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে হয় তাঁকে। অভিনয় করলেও তা দিয়ে খুব একটা স্বাভাবিক জীবন যাপন করা সম্ভবপর হত না তাঁর পক্ষে। যেখানে তিনি মাকে নিয়ে থাকতেন, সেখানে স্ত্রীকে রাখার মতো জায়গা ছিল না।
এই সাক্ষাৎকারে অভিনেতা বলেছিলেন, ”বিয়ের পর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি করা। চাইনি আমি কোনও কেরানির চাকরি করতে। বিয়ের জন্য বাধ্য হলাম। যেখানে থাকতাম যেখানে বিয়ের পর যাওয়া সম্ভব ছিল না। আমি আর আমার মা থাকতাম, সেই বাড়িতে বউকে তোলা যেত না। এরপর গোটা খড়দহতে ঘুরলাম আমি আর আমার এক বন্ধু একটি বাড়ি ভাড়া নেব বলে, কিন্তু কেউ দিল না। একটাই কথা, সরকারি চাকরি না করলে বাড়ি ভাড়া দেব না। এরপর বন্ধুর বাড়ির নিচে দুই ঘরে থাকার ব্যবস্থা হল। তিনতলা বাড়ি ছিল ওদের। একতলার গোডাউন খালি করে দেওয়া হল, সেখানেই আমরা থাকব স্থির হল।”
এ তো গেল বিয়ে আগের পর্ব, বিয়েতেও কম গল্প ছিল না জড়িয়ে। অভিনেতা জানান, ”এরপর মামারবাড়ি থেকে বিয়ে করতে যাওয়া। বউভাতের দিন আমার স্ত্রী শো ছিল থিয়েটারে। আমার থেকে যদিও জানতে চাওয়া হয়েছিল যে শো বাতিল করে দেওয়া হবে কি না। আমি জানিয়েছিলাম তার কোনও প্রয়োজন নেই। সকালে বিয়ের যা অনুষ্ঠান ছিল তা মিটিয়ে, স্ত্রীকে নিয়ে বিকেলে কলকাতার উদ্দেশে রওনা দিলাম। রবীন্দ্রসদনে শো ছিল। শো শেষ করে অবশেষে ফিরে এলাম আমরা খড়দহে। মায়ের কাছে নয়। সেই নতুন জায়গাটায়। এসে দেখি অবাক কাণ্ড। বন্ধুরা মিলে সাজিয়ে রেখেছে জায়গাটা”।