গতকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ছবি ভাইরাল হয়েছে। দেখা যাচ্ছে ১৮ ফুটের একটি অজগর সাপ নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন চন্ডীপুরের বিধায়ক সোহম চক্রবর্তী। আরও এক ভিডিয়োও ভাইরাল হয়েছে, সেখানে দেখা যাচ্ছে, সোহমের পাশেই লাল জামা পরা এক ভদ্রলোক জুতো পরে অজগরের উপর পা দিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। এই নিয়েই গতকাল থেকে চলছিল চরম নিন্দে। উত্তরবঙ্গের মুখ্য বনপাল (বন্যপ্রাণী) রাজেন্দ্র জাখরও এই ঘটনার প্রতিবাদ করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন। এবার এ নিয়ে মুখ খুললেন সোহমও। দীর্ঘ বিবৃতিতে তিনি বলেন, “খুব দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি যে আমার পাইথনের সঙ্গে একটা পোস্ট নিয়ে কিছু মিডিয়া ও কিছু সাধারণ মানুষ তাদের মতো করে মতামত দিয়ে চলেছেন, হয়তো পুরো বিষয়টার সম্বন্ধে তাঁরা ভাল করে অবগত নন। পাইথনটিকে প্রথমে রিসোর্টের লোক দেখতে পান রিসোর্টের বারান্দায়। বন দফতরকে জানানোও হয়। বনদফতরের কর্মীরা আসেন এবং সাপটিকে উদ্ধার করেন, আমি তখন ওপরে রুমে খবর পাই যে সাপ ধরা পড়েছে। জানলা দিয়ে দেখি এবং নীচে যাই। গিয়ে হাত লাগাই সাপটিকে উদ্ধারে। ওকে আঘাত করার কোনও ইচ্ছেই আমার ছিল না।”
প্রসঙ্গত, সোহমের সঙ্গে সাপের ছবি ভাইরাল হওয়ার পর থেকেই টেনে আনা হচ্ছে দেবকেও। এই মুহূর্তে ‘প্রধান’ ছবির জন্য দেব ও সোহম একসঙ্গেই রয়েছেন উত্তরবঙ্গে। কিন্তু অকারণে দেবকে টানায় কিছুটা ক্ষিপ্ত হয়েই সোহম আরও যোগ করেন, “দেবের নাম যে নেওয়া হচ্ছে, সেটাও কিন্তু ঠিক নয়। কারণ সে পুরোটাই তার ব্যালকনি থেকে দাঁড়িয়ে দেখছিল।” কিন্তু ওই যে লাল জামা পরা ভদ্রলোক, যিনি সাপের উপর জুতো পরে দাঁড়িয়েছিলেন! তাঁকে কি চেনেন সোহম? সোহম জানিয়েছেন, ওই লাল জামা পরিহিত ভদ্রলোক হয়তো রিসোর্টের কোনও কর্মচারী। তাঁদের শুটিং টিমের কেউ নন বলেই দাবি করেছেন সোহম। সোহম যোগ করেন, “যখন উনি পা দেন তখন আমরা কেউই ওখানে ছিলাম না, তাই ঘটনাটির সম্পর্কে অবগত ছিলাম না। সাপটিকে ধরে কীভাবে সুরক্ষিত ভাবে রাখা যায়, সেই চেষ্টাই করছিলাম। হয়তো আবেগের বশে ছবি তোলা হয়েছে, কিন্তু সবাই কিন্তু সাহায্যেরই হাত বাড়িয়ে দেন। সাপটিকে অক্ষত অবস্থায় বনদফতরের কর্মী এসে নিয়েও যান।”
ঘটনাটি ঘটার পর সোহম ও তাঁর পরিবারকে নিয়েও করা হয়েছে কুরুচিকর সব মন্তব্য। তা নিয়ে প্রতিবাদ করেছেন সোহম। তিনি আরও বলেন, “তোমাদের ভাষায় তোমাদেরকে উত্তর দিতে পারি। কিন্তু সেটা আমার শিক্ষার ও রুচিতে বাধে। আর পশুপ্রেমী হিসেবে নিজের ঢাক নিজে পেটানো আমার উচিৎ নয়। যারা জানেন তাঁরা জানেন, ভাল থাকবেন।” সোহম নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেছে। তবে এই জল কতদূর গড়ায় এখন সেটাই দেখার।