ফোন ধরার পর অভিনেত্রী বললেন,”এখানে একেবারে টাওয়ার নেই, কিচ্ছু শুনতে পাবেন না।” খুব ভুল বলেননি শ্রীলেখা ওঁর কথা স্পষ্ট নয়। হাওয়ার শোঁ শোঁ শব্দ আর মাঝে মাঝে কথা একেবারেই শোনা যাচ্ছিল না। কিন্তু তাও চেষ্টা চালাতে হল। গতকাল রাত থেকে ত্রাণের সামগ্রী প্যাকেটে সাজাচ্ছিলেন শ্রীলেখা এবং তাঁর বন্ধুবান্ধব। আজ সকালে তাঁদের গন্তব্য ছিল বকখালি, মৌসুনি দ্বীপ আর দেবনগরের কাছে কিছু গ্রামে পৌঁছে যাচ্ছে সেই ত্রাণ। মানুষের পাশে থাকার এ উদ্যোগে শ্রীলেখা পাশে পেয়েছেন অভিনেতা জয়জিৎকেও।
পূর্ণিমার ভরা কোটাল আর ইয়াসের তান্ডবে লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছে সমগ্র সুন্দরবন উপকুলবর্তী এলাকা। প্রবল জলোচ্ছ্বাসে ভেসে গিয়েছে প্রচুর বাড়িঘর। বাংলার বহু শিল্পীরা এক হয়েছেন এমন কঠিন সময়ে।
বারবার ছুটে যাচ্ছেন মানুষের কাছে। নিজের সাধ্যমতো প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন তাঁরা। সুন্দরবন এলাকার মানুষদের পরিস্থিতি দেখে মনখারাপ বাড়ছে শ্রীলেখার, বললেন, “নদীর নোনা জল ঢুকে চাষাবাদের জমি একেবারে নষ্ট করে দিয়েছে। আগামী পাঁচ-ছ’বছর চাষও করা যাবে না। এমনকি মাছ চাষও নয়। আমি যেই গ্রামে এসেছি সেখানে মাটি পড়েনি গত দশবছর। সেটা হলে, ক্ষয়ক্ষতি কম হত। পঞ্চায়েত দুরবস্থার ছবি তুলেছে কিন্তু কাজ কিছু করেনি। টাকা-পয়সার লুটপাট চলেছে। এখানকার ছেলেমেয়েদের পড়বার কোনও স্কুল নেই। শিক্ষা ব্যবস্থা তলানি বললেও কম বলা হবে। এই মানুষগুলোর জন্য যতটুকু পেরেছি, সাধ্যমতো করছি।”
চাল, আলু, আটা, বিস্কুট, চিনি, সাবান, দেশলাই, মোমবাতি, মাস্ক, স্যানিটাইজার, জলের বোতল আরও সব সামগ্রী হাতে হাতে চলে যাচ্ছে চাল-চুলোহীন মানুষের কাছে। শ্রীলেখা বললেন, “এখানে এসে, এত গুলো মানুষের দুর্দশা নিজের চোখে দেখে মনে হয় যদি আরও কিছু নিয়ে আসতে পারতাম। আবার আমি আসব। আমাকে আসতে হবে। ”