বাংলার চলচ্চিত্রে ফের নক্ষত্রপতন। প্রয়াত পরিচালক বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত (Buddhadeb Dasgupta)। বৃহস্পতিবার সকাল ছ’টা নাগাদ ঘুমের মধ্যেই দক্ষিণ কলকাতায় নিজের বাসভবনে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। বয়স হয়েছিল ৭৭। তাঁর স্মৃতিচারণা করলেন অভিনেত্রী সুদীপ্তা চক্রবর্তী।
বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত কবি তো বটেই। তাঁর সিনেমাতেও কবিতাই বলতেন। আমার খুবই সৌভাগ্য তাঁর দুটি সিনেমায় অভিনয় করার সুযোগ পেয়েছি। আমার কেরিয়ারে উল্লোখযোগ্য দুটি ছবি। ‘মন্দ মেয়ের উপাখ্যান’ এবং ‘কালপুরুষ’। দু’টো ছবিতে কাজ করতে গিয়ে খুবই সামনে থেকে দেখার অভিজ্ঞতা হয়েছে, তার আগে বা তার পরে। সিনেমাতে ভিস্যুয়াল দিয়ে যে কীভাবে গল্প বলা যায় এবং গল্পের মধ্যে, সিনের মধ্যে, চরিত্রদের মধ্যে যথেষ্ট স্পেস রাখা, দর্শকের মগজের জন্য, মননের জন্য, যথেষ্ট জায়গা রাখা সেটা মনে হয় বুদ্ধদার ছবি দেখেই আমাদের জেনারেশন এবং তার পরের জেনারেশন, ইন্টারন্যাশনাল জেনারেশন শিখবে।
বুদ্ধদা সারা পৃথিবীতে সেলিব্রেটেড, প্রণম্য একজন ফিল্মমেকার। এখনকার এই যে, বক্স অফিসে ছবি চলল কি না, তাই নিয়ে একটা মারামারি এবং বক্স অফিস চললেই, তিনি পরিচালক আর না চললে, অর্থাৎ পপিউলিস্ট ছবি নয়, অনেক মানুষ হাজার হাজার মানুষ ভিড় করে দেখতে যাচ্ছেন না বলে সেই পরিচালক, পরিচালকই নন, এই যে একটা দেগে দেওয়ার ট্র্যাডিশন এই মুহূর্তে চলছে বাংলা ছবিতে এবং ভারতীয় ছবিতে, এটার সম্পূর্ণ অন্যদিকে ছিলেন বুদ্ধবাবু এবং তাঁর মতো পরিচালকেরা। তাঁরাই শিখিয়ে গিয়েছিলেন সিনেমা কী জিনিস। সেটা তো আমাদের ঐতিহ্য, তারপর এগুলো দেখতে কষ্ট হয়।
তবুও বলব, এখনকার ফিল্ম মেকাররা, বহু নতুন ফিল্ম মেকার যাঁরা হাতে কলমে হয়তো বুদ্ধদাক ইউনিটে কাজ করার সুযোগ পেলেন না, কিন্তু বুদ্ধদার ছবি দেখেই শিখতে পারবেন। এক একটা ছবি, এক একটা মাস্টার ক্লাস তাঁদের জন্য। আমাদের ইন্ডাস্ট্রির জন্য তো নিঃসন্দেহে অনেক বড় ক্ষতি।
আরও পড়ুন, আন্তর্জাতিক সিনেমার নক্ষত্র ছিলেন বুদ্ধদা: প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়