গরমকাল। নগর কলকাতা পুড়ছে সূর্যের তাপে। মার্চের শেষেই তাপমাত্রা প্রবল। এপ্রিল-মে আরও ভোগাবে বলেই অনুমান করছেন আবহাওয়াবিদরা। এই পরিস্থিতিতে যানবাহনের অন্দর যেন কাঁদছে। প্রবেশেই মনে হচ্ছে ফার্নেস। এখন যদি অ্যাব-ক্যাবের এসি বন্ধ থাকে পরিস্থিতি আরওই দুর্বিসহ হওয়ার জোগাড়। এমনটাই হচ্ছে সর্বত্র। অ্যাপ-ক্যাবের ভাড়াও প্রচুর। তেলের দাম বৃদ্ধির কারণ দেখিয়ে বহু ক্যাবেই চলছে না এসি। আমজনতার পকেটে টান তো পড়ছেই, সেই সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বেজায় গরমের কষ্ট। অনেকেই নালিশ জানাচ্ছেন। সেই তালিকায় রয়েছেন তারকারাও। সম্প্রতি দুই তারকা অ্যাপ-ক্যাবের সমস্যা নিয়ে সরব হয়েছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। একজন জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত অভিনেতা ঋদ্ধি সেন, অন্যজন অভিনেত্রী ও নৃত্যশিল্পী বিদিশা চক্রবর্তী।
ফেসবুকে রাগ উগরে দিয়ে লিখেছেন অভিনেত্রী-নৃত্যশিল্পী, অভিনেতা বিপ্লবকেতন চক্রবর্তীর কন্যা বিদিশা চক্রবর্তী। বুধবার (৩০.০৩.২০২২) অ্যাপক্যাব বুক করেছিলেন।এই গরমে এসি চালাতে রাজি ছিলেন না ক্যাব-চালক। ফলে গরমে কষ্ট পেয়ে তাঁকে গন্তব্যে পৌঁছতে হয়েছে। কিন্তু বিদিশা চুপ থাকেননি। অনেকের মতোই রাগ উগরে দিয়েছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। ছবিও পোস্ট করেছেন অভিনেত্রী। তাঁর পোস্টে লিখেছেন, “আচ্ছা, এবার বুঝতে পেরেছি। তা হলে আমাদের শহরের হলুদ ট্যাক্সিওয়ালাদের নিয়ে কী সমস্যা হল? যদিও বা তাঁরা ২০-৩০ টাকা বেশিই চান? কী সমস্যা… এখন যা দিচ্ছেন, তার চেয়ে নিশ্চয়ই কম হব, তাই নয় কী! এটা গরমকাল। আমি আশা করছি এই মরশুমে এটাই আমার শেষ অ্যাপ-ক্যাপ রাইড। পুরনোতে ফিরে যাওয়ার সময় এসে গিয়েছে।”
মঙ্গলবার প্রায় একই সমস্যার মুখোমুখি হয়েছিলেন জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেতা ঋদ্ধি সেন। চলুন দেখি তাঁর পোস্ট কী বলছে – “উবার ড্রাইভারদের সামনে দেখা যায় বলে তাদের গালাগালি দিতে সুবিধে হয়। বহু ড্রাইভার আছে যাদের ব্যবহার খারাপ। বহু পরিস্থিতিতে ইচ্ছাকৃত ভাবে ট্রিপ ক্যানসেল করে দিয়েছে। বহু মহিলা কিছু সাংঘাতিক দুর্ঘটনার সম্মুখীন হয়েছে। বেশকিছু ড্রাইভারের জন্য, প্রচণ্ড কঠিন আবহাওয়ার সঙ্গে দৈনন্দিন মোকাবিলা করা অত্যন্ত কঠিন সাধারণ মানুষের জন্য এবং সেই মুহূর্তে বহু চালকের ব্যবহার অত্যন্ত খারাপ। কিন্তু তিন গুণ, দুই গুণ ভাড়া বৃদ্ধি বা এসি না চালানোর জন্য শুধু ড্রাইভারদের উপর চোখ রাঙানোর কোনও অর্থ নেই। তাদের বেশিরভাগই পরিস্থিতির শিকার। একদিকে কিছু দুর্নীতিগ্রস্থ চালক আছে যাদের হেনস্থার শিকার সাধারণ মানুষ। কিন্তু সমস্যাটা শুধু সেখানে আটকে নেই।
উবার ভাড়া আকাশচুম্বী আর সেই ভাড়ার অর্ধেকও চালকদের না দিয়ে উবার কোম্পানির মাথায় যারা বসে আছেন তাদের উপর চোখ রাঙান। বা ঠান্ডা ঘরে বসে যারা তেলের দাম ১০৯ টাকায় পৌঁছে দিয়ে বাজার আর সাধারণ মানুষকে আগুনের দিকে ঠেলে দিচ্ছে, তাদের উপর চোখ রাঙান। নায্য টাকা দিয়ে কেন সেই পরিষেবা পাওয়া যাচ্ছে না, সেই নিয়ে প্রশ্ন বা অভিযোগ আমাদের কার কাছে করা উচিত?”