কেকে’র মৃত্যুর ২ বছর পার! ভয়াবহ সেই রাতের পর কি টনক নড়েছে অরগানাইজ়ারদের, জানালেন ইমন-রূপমরা?
KK Death: কেকের মৃত্যু আঙুল তুলেছিল অরগ্যানাইজ়ারদের ব্যবস্থাপনায়। অনেকের আজও বিশ্বাস, অরগ্যানাইজ়ারদের অব্যবস্থার কারণেই কেকের মৃত্যু। এ ভাবে কেকের মৃত্যু দেখে আরও বেশি সজাগ হয় উঠেছেন রূপম ইসলাম, ইমন চক্রবর্তীর মতো গায়ক-গায়িকারা। যাঁরা প্রায়ই কেকের মতো স্টেজ শো করেন হাজার-হাজার, লাখ-লাখ শ্রোতার সামনে। অরগানাইজ়াররা কি সচেতনতা বাড়িয়েছেন, কী মত তাঁদের?
৩০ মে, ২০২৪। সেই কালো রাত। যে রাতে শহর কলকাতার নজরুল মঞ্চে পারফর্ম করতে এসে প্রাণ হারিয়েছিলেন জনপ্রিয় ভারতীয় গায়ক কৃষ্ণকুমার কুন্নথ, অর্থাৎ কেকে। পারফরম্যান্স শেষ করার পরই তাঁর মৃত্যু হয়েছিল। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন গায়ক। নজরুল মঞ্চে এদিন কেকের গান শুনতে এসেছিলেন বহু শ্রোতা। তাঁদের সকলের বসার কিংবা দাঁড়ানোর জায়গাও ছিল না সেইভাবে। ফলে এসি ঠিক মতো কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছিল। শরীর খারাপ লাগা সত্ত্বেও প্রচণ্ড গরমেই, কার্যত ঘামতে-ঘামতেই একের পর-এক গান গেয়ে চলেছিলেন কেকে। অনুষ্ঠান শেষ হতে হোটেলে গেলেন এবং তারপরই সব শেষ। কেকের আকস্মিক মৃত্যু আজও মানতে পারেন না তাঁর অনুগামীরা। হাজার-হাজার দর্শকের সামনে গান গেয়ে, শেষে মৃত্যু, যেন এক বিভীষিকা। দু’বছর কেটে গিয়েছে এই ঘটনার। শহর কলকাতা আজও ভোলেনি দিনটাকে। কেকের মৃত্যু আঙুল তুলেছিল অরগ্যানাইজ়ারদের ব্যবস্থাপনায়। অনেকের আজও বিশ্বাস, অরগ্যানাইজ়ারদের অব্যবস্থার কারণেই কেকের মৃত্যু। তাঁর জন্য ফ্যানের ব্যবস্থা না করা, নজরুল মঞ্চে প্রচুর মানুষের উপস্থিতি, কাছেই হাসপাতাল থাকা সত্ত্বেও তাঁকে সেখানে না নিয়ে গিয়ে হোটেলে নিয়ে যাওয়া–পরপর গাফিলতির দিকে প্রশ্নচিহ্ন ঝোলানো হয়েছিল। এ ভাবে কেকের মৃত্যু দেখে আরও বেশি সজাগ হয় উঠেছেন রূপম ইসলাম, ইমন চক্রবর্তীর মতো গায়ক-গায়িকারা। যাঁরা প্রায়ই কেকের মতো স্টেজ শো করেন হাজার-হাজার, লাখ-লাখ শ্রোতার সামনে। অরগানাইজ়াররা কি সচেতনতা বাড়িয়েছেন, কী মত তাঁদের?
ইমন চক্রবর্তী যা বললেন TV9 ডিজিট্যালকে:
“আমি স্টেজে পারফর্ম করতে উঠলে সঙ্গে জল রাখি। গ্লুকনডি রাখি। পোর্টেবল ফ্যান রাখি। শীতকালে সে রকম অসুবিধা হয় না। যদি কোনও বন্ধ জায়গায় পারফর্ম করতে হয়, তখনও পোর্টেবল ফ্যান রাখি সঙ্গে, হলে যতখানি শ্রোতা ধারণের জায়গা, ততজনই যেন লোক আসেন, সেদিকটা দেখি। এসি কাজ করছে কি না দেখে নিই। তারপর পুরোটাই কপালের বিষয়। আমি একটা কথা বলতে চাই আজকে–কেবল আমরা নই, আমাদের অর্গানাইজ়াররাও অনেক বেশি সচেতন হয়েছেন আগের চেয়ে। তাঁরা আগের চেয়ে অনেক বেশি ওয়াকিবহাল। চেষ্টা করেন আর ফাঁক না রাখতে। কেকের মৃত্যু নিঃসন্দেহে আমাদের কাছে একটা বড় ধাক্কা ছিল। আজও দিনটা ভোলার নয়।”
রূপম ইসলাম যা বললেন TV9 ডিজিট্যালকে:
“কেকের মৃত্যু সত্যি নাড়া দেওয়ার মতোই একটি দুর্ঘটনা। কেকের অনুষ্ঠানের কয়েকদিন আগেই আমার অনুষ্ঠান ছিল নজরুল মঞ্চে। সেই একই রকম উপচে পড়া ক্রাউড ছিল। এটা কেউই আশা করেননি ঘটবে। আমার মতে, গোটাটাই ম্যানেজমেন্টের গাফিলতি ছাড়া কিচ্ছু ছিল না। আমার শো থাকে যখন, সেরকম কোনও ম্যানেজমেন্টগত সমস্যা থাকে না। আমাদের ম্যানেজমেন্ট এই বিষয়গুলো নিয়ে সব সময়ই সতর্ক থাকে। আমার স্ত্রী রূপসা এবং গিটারিস্ট দীপ, এঁরা দু’জন মিলে বিষয়টা দেখেন। এ ছাড়াও আছে দক্ষ পেশাদারী ম্যানেজমেন্ট গ্রুপ। শিল্পীদের সুরক্ষার ব্যাপারটা দেখেন আমার নিজের লোকজনেরাই। কেকের মৃত্যু বাড়তি সতর্ক করেছে তো বটেই। আমরা যতদূর জানি কেকের পারফরম্যান্সের সময় জায়গাটা প্রচণ্ড গরম হয়ে গিয়েছিল। এসি কাজ করেনি। ৬,০০০-৭,০০০ লোক ঢুকে পড়েছিল অডিটোরিয়ামে। কেকে পাখার হাওয়াটাও পাননি ঠিক মতো। অনুষ্ঠান থেকে বেরনোর সময় তাঁকে হাসপাতালে না নিয়ে গিয়ে সোজা নিয়ে যাওয়া হয় হোটেলে। অনেক প্রতিকূল পরিবেশেই আমাদের পারফর্ম করতে হয়। তবে এই ধরনের বিষয় যাতে না ঘটে, আমার টিম পুরোপুরি সেটা খেয়াল রাখে। আমি আমার ম্যানেজমেন্টের উপর ভরসা রাখতে পারি। সেদিক থেকে আমরা অনেক বেশি প্রফেশনাল।”