ওজন বেড়ে যাওয়া আজকাল খুব সাধারণ সমস্যা। ওবেসিটির সমস্যা থাকলে সেখান থেকে আসে আরও একাধিক সমস্যা। হাইব্লাড প্রেশার, কোলেস্টেরল, ট্রাউগ্লিসারাইডের মত সমস্যা কিন্তু আসে অতিরিক্ত ওজন থেকেই। সেই সঙ্গে ওজন বাড়লে শরীরে সারাদিন ক্লান্তি লেগেই থাকে। অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধির নেপথ্যে চিকিৎসকরা বার বার দোষ দেন আমাদের রোজকারের জীবনযাত্রা আর খাদ্যাভ্যাসকে। কোনও রকম শরীরচর্চা না করা, এক জায়গায় বসে খাওয়া-দাওয়া, অতিরিক্ত পরিমাণ চর্বি খাওয়া সেখান থেকেই আসে মূল সমস্যা। ওজন কমাতে গেলেও নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে। প্রত্যেক মানুষের ডায়েট চার্ট কিন্তু আলাদা। বয়স, লিঙ্গভেদ এবং শারীরিক গঠনের উপর নির্ভর করে ডায়েট বানানো হয়। ইন্টারনেটের দৌলতে অনেক রকম চার্ট এখন হাতের সামনে পাওয়া যায়। অধিকাংশই সেই চার্ট মেনে চলার চেষ্টা করেন। এখান থেকেই কিন্তু সমস্যা হয় সবচাইতে বেশি।
অনেকেই ভাবেন সারাদিন না খেয়ে থাকলেই অতিরিক্ত সব মেদ গলে যাবে। আবার কারোও ধারণা ডায়েট থেকে কার্বোহাইড্রেট বাদ দিতে পারলেই কেল্লা ফতে। ওজন কমানোর সহজ টোটকা হিসেবে ইন্টারনেটে কদর রয়েছে আনারসের।
এমন প্রচুর পরামর্শ থাকে, যেখানে বলা হয় ওজন কমানোর জন্য সেরা হল আনারস। এমনও বলা হয় যে রোজ যদি ২ বাটি করে আনারস খান তাহলে ৫ দিনে ওজন কমবে ৫ কেজি। এবার এমন সুযোগ পেলে সহজে কেউ হাতছাড়া করতে চান না। গুগল বাবার দেওয়া নিয়ম মেনে ৫ দিন শুধুই আনারস খান। আর এই আনারস খেয়েই ভাবেন ৫ দিনেই ওজন কমে যাবে যেমনটা চাইছেন।
সম্প্রতি পুষ্টিবিদ লভনীত বাত্রা তাঁর ইন্সটাগ্রামে এই আনারস ডায়েট সম্পর্কে নতুন একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন। সেখানেই তিনি লেখেন এই আনারস ডায়েট আমাদের শরীরের জন্য কতখানি ক্ষতিকর। কারণ এখান থেকে আসতে পারে একাধিক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। ১৯৭০ সালে ডেনিশ মনোবিজ্ঞানী স্ট্যান হেগলার একটি বিশেষ ডায়েট টিপস শেয়ার করেন। সেখানেই তিনি উল্লেখ করেন, রোজকার খাবারের সঙ্গে মাত্র ৫ দিন যদি আনারস খাওয়া হয় তা হলে অবধারিত ভাবে ২ কেজি ওজন কমবেই। সেই সঙ্গে শরীরের ক্ষতিকারক টক্সিনও কিন্তু বের হয়ে যাবে। তবে অতিরিক্ত আনারস খাওয়ার ফলে যে সব সমস্যা হতে পারে তা হল-
১.আনারসের মধ্যে থাকে ভিটামিন সি এবং প্রচুর পরিমাণ হজমে সাহায্যকারী অ্যাসিড। এই অ্যাসিডের কারণেই মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়, খুব বেশি খিদে পায়, ক্লান্ত লাগে, বমি বমি ভাব, পেট খারাপ, ডায়ারিয়া এসব লেগেই থাকে।
২.আনারস অতিরকরিক্ত খেলে সেখান থেকে মাথা ঘোরা, মাথা ব্যথা, ঘুম কম হওয়া, অতিরিক্ত খিদে পেতে পারে। আনারসে প্রোটিনের পরিমাণ খুব কম থাকে। থাকে ভিটামিন আর মিনারেল। যা আমাদের শরীরে পুষ্টির ঘাটতি দূর করে।
৩.আনারস বেশি পরিমাণে খেলে সেখান থেকে স্কিন ইনফেকশন হতে পারে। আনারসের মধ্যে থাকে প্রচুর পরিমাণ ব্রোমেলাইন। যে কারণে ত্বকের সমস্যা, ফুসকুড়ি, বমি, ভারী রক্তপাতের সমস্যা হতে পারে।
৪.লভনীত বলছেন ওজন কমানোর জন্য তিনটে জিনিস মেনে চললেই হবে। তা হল পরিমাণে খেতে হবে, প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং চিনি সম্পূর্ণ বাদ দিতে হবে, হাই ক্যালোরির খাবারও একেবারেই চলবে না।