হাজার হাজার বছরের পুরনো দর্শন হল যোগা (Yoga)। যোগা শুধু ব্যায়াম নয়, শারীরিক ও আত্মিক উন্নতির পথ হল যোগা। শ্বাসকার্য, শরীরের উন্নতির (Health Issues) জন্যও যোগা অত্যন্ত কার্যকরী প্রক্রিয়া। মন ও শরীরের গঠন শক্তিশালী করতে যোগা অদ্বিতীয়। যোগা শুরু করতে পারেন যে কোনও বয়সেই। ‘যোগা ডে-এর পর কেটে গিয়েছে একমাস। এরপরেও যদি আপনি সঠিক সময়ের অপেক্ষা করেন তাহলে আমি বলব এই মুহূর্তই হল উপযুক্ত সময়।’ মালাইকা (Malaika Arora) লিখেছেন তাঁর ইনস্টাগ্রাম অ্যাকউন্টে। আরও বলেছেন বলি ডিভা। ‘আপনি যদি সারাদিনে ৫ থেকে ১০ মিনিটও নিজের জন্য সময় বের করতে পারেন তাতেই আপনার স্বাস্থ্যে সুপ্রভাব পড়বে। আগের চাইতে অনেক বেশি ভাল থাকতে পারবেন।’ তাঁর ফিট থাকার তিনটি পর্যায় রয়েছে…
সক্রিয় হন: এই পর্যায়ে থাকে যোগা, জিম এবং পাইলেটস (পেশি বর্ধক ব্যায়াম)। শরীরকে এভাবে সক্রিয় করলে দীর্ঘদিন থাকা যায় কর্মক্ষম এবং ক্ষিপ্র।
শ্বাস নিন: মন শান্ত করতে হলে শ্বাসের ব্যায়াম শেখা জরুরি। ফুসফুসের কার্যকারিতাও বাড়ায় শ্বাসের ব্যায়াম। স্মৃতিশক্তি ও মনঃসংযোগের ক্ষমতাও বৃদ্ধি করে।
সংযোগ: সংযোগের অর্থ হল ধ্যান। ‘পাঁচ মিনিটের জন্য হলেও চেষ্টা করুন ধ্যান করার।’— বলছেন মালাইকা।
প্রতিদিন ৫ থেকে ১০ মিনিটের জন্য হলেও নিজের যত্ন নিন। ভাল থাকা ও সুস্থ থাকার ক্ষেত্রে সাহায্য করবে এটুকু পরিচর্যা।—জানিয়েছেন অভিনেত্রী।
আপনিও কি যোগা ও প্রাণায়াম করে থাকতে চান সেলেবদের মতো ফিট? তাহলে রইল যোগা বিশেষজ্ঞের বিশেষ টিপস—
ভুজঙ্গাসন: ভুজঙ্গ কথার অর্থ সাপ। এই আসনে দেহের ভঙ্গিমা হয় ফণা তোলা সাপের মতো। তাই এই আসনের নাম ভুজঙ্গাসন। ম্যাট্রেসের উপর উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ুন। দু’টি হাত কনুই থেকে ভাঁজ করে বুকের পাশে রাখুন। এক্ষেত্রে কনুই থাকবে পিঠের দিকে ও হাতের তালু থাকবে কাঁধ বরাবর মাটির দিকে। এবার শ্বাস নিতে নিতে নাভি থেকে মাথা পর্যন্ত অংশ সাপের ফণার মতো তুলে দিন। ওই অবস্থানে ১০ থেকে ১৫ সেকেন্ড থাকুন। ধীরে ধীরে ব্যায়ামটি অভ্যেস হয়ে গেলে ৩০ সেকেন্ড অবধি ওই অবস্থানে থাকতে পারেন।
পবনমুক্তাসন: মুখ আকাশের দিকে করে অর্থাৎ চিৎ হয়ে শুয়ে পড়ুন। এরপর হাঁটুশুদ্ধ ডান পা ভাঁজ করে পেটের সঙ্গে যুক্ত করুন। এই অবস্থায় দুই হাত হাঁটুশুদ্ধ ডান পা’কে জড়িয়ে থাকুন। ১০-১৫ বার দম নিন ও ছাড়ুন। এরপর ডান পা সোজা করে মাটিতে নামান। বাম পা ভাঁজ করে পেটের সঙ্গে যুক্ত করুন। আগের মতোই দুই হাত দিয়ে ভাঁজ করা পা চেপে ধরে দম নিন ও ছাড়ুন। একটু অভ্যেস হলে একসঙ্গে দুই হাঁটু ভাঁজ করে পেটের উপর চেপে ধরে আগের মতো শ্বাসকার্য চালান।
প্রাণায়াম
সবচাইতে সহজ প্রাণায়ামটি হল অনুলোম বিলোম। হাঁটু মুড়ে বাবু হয়ে বসুন। এবার ডান হাতের অনামিকা দিয়ে বাম নাক চেপে ধরুন। ডান নাক খোলা রাখুন। খোলা পথ দিয়ে লম্বা শ্বাস নিন। এবার ডানহাতের বৃদ্ধাঙ্গুলি দিয়ে ডান নাক চেপে ধরুন। ও বাম নাক থেকে অনামিকার চাপ সরান। বাম নাক দিয়ে শ্বাস ছাড়ুন। এবার বামদিকের নাকের রন্ধ্র দিয়ে শ্বাস নিয়ে বাম নাক বন্ধ করুন। ডান নাকের উপর থেকে চাপ সরিয়ে শ্বাস ছাড়ুন। পাঁচ থেকে সাত মিনিট করুন এই শ্বাসের ব্যায়াম।
উপকার কী?
যোগাসন ও প্রাণায়াম বাড়িয়ে দেয় যৌবনকাল। তাই যৌবনকালে যত বেশি যোগাসন ও প্রাণায়াম করা যাবে ততই বার্ধক্য পিছোতে শুরু করবে। এছাড়া সুগার, প্রেশার, ডায়াবেটিস, থাইরয়েডের মতো অসংখ্য ব্যাধি থাকবে দূরে।