খারাপ জীবনধারা (Lifestyle) আমাদের শরীরে একাধিক মারাত্মক রোগ ডেকে আনে। একটু খেয়াল করে দেখুন, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিসের মতো লাইফস্টাইল ডিজিজের (Lifestyle Disease) পিছনে দায়ী আমাদের অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস (Food Habits) ও জীবনধারা। এই তালিকায় রয়েছে আরেকটি রোগ: কোলেস্টেরল। তবে কোলেস্টেরল মানেই যে খারাপ এমন ধারণা পুষে রাখার কোনও প্রয়োজন নেই। তাই প্রথমে আমাদের এই রোগ সম্পর্কে অবগত হতে হবে। তার পরের ধাপ হল সচেতনতা বজায় রাখা এবং রোগকে প্রতিরোধ করা। রোগ নিরাময়ের চেয়ে রোগ প্রতিরোধই বুদ্ধিমানের কাজ।
কোলেস্টেরল হল রক্তে উপস্থিত মোম জাতীয় এক পদার্থ। এই পদার্থ কোষের মেমব্রেন তৈরিতে কাজে লাগে। আমাদের সকলের শরীরেই কোলেস্টেরল উপস্থিত। কোলেস্টেরল মূলত দু’ধরনের হয়: এইচডিএল বা ভাল কোলেস্টেরল এবং এলডিএল বা খারাপ কোলেস্টেরল। সমস্যা তখনই বাড়ে তখন এই এলডিএল বা খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা তুলনায় বেশি বেড়ে যায়। তখন রক্তনালীতে জমাট বাঁধে কোলেস্টেরল। ফলে ব্যাঘাত ঘটে রক্ত চলাচলে। আর এখান থেকে উৎপত্তি হয় নানা রোগের।
তাই, যেন তেন প্রকারে এলডিএল বা খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। কিন্তু এই কোলেস্টেরল বেড়ে যাওয়ার পিছনে বেশ কয়েকটি জিনিস দায়ী। আপনি যে খাবার খান তাতে যদি স্যাচুরেটেড ফ্যাট, ট্রান্স ফ্যাট থাকে তাহলে এই ধরনের খাবার কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ায়। তাই চেষ্টা করুন এই ধরনের খাবার এড়িয়ে চলুন।
অতিরিক্ত ওজন ট্রাইগ্লিসারাইড বাড়াতে পারে। এই ক্ষেত্রে, ওজন কমালে আপনার ট্রাইগ্লিসারাইড স্তর কমাতে পারে এবং HDL-এর মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করতে পারে।
এখন বহু মানুষই শরীরচর্চা করেন না-ই বললে চলে। ব্যস্ত জীবনে যোগব্যায়াম না করে আদতে জীবনেরই ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে। অলস জীবনযাপন রক্তে এলডিএল-এর মাত্রা বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে। তাই সুস্থ থাকতে প্রতিদিন ৪৫ মিনিট থেকে ১ ঘণ্টা যোগব্যায়াম করুন।
বয়সের সঙ্গে কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। মেনোপজের জন্য অনেক সময় মহিলাদের মধ্যে কোলেস্টেরলের ঝুঁকি বেড়ে যায়। এই দিক দিয়ে পুরুষদের মধ্যে কোলেস্টেরলের ঝুঁকি তুলনামূলকভাবে কম।
উচ্চ কোলেস্টেরল এড়াবেন কোন উপায়ে-
-আপনি যদি নিয়মিত ধূমপান করেন তাহলে অবিলম্বে তা ত্যাগ করুন। এই অভ্যাস উচ্চ কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে তোলে।
-ডায়েটে ট্রান্স ফ্যাট এবং স্যাচুরেটেড ফ্যাটের পরিমাণ কমাতে হবে। এর পরিবর্তে ফল, শাকসবজি, মাছ এবং গোটা শস্যের মতো স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন।
-কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে ওজনকে নিয়ন্ত্রণে রাখুন। বেশি ওজন হলে তা কমানোর চেষ্টা করুন।
-তবে শুধু জীবনধারা নিয়ন্ত্রণ করলেই সব সময় বশে থাকে না কোলেস্টেরলের মাত্রা। এর পাশাপাশি আপনাকে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ শুনতে চলতে হবে। সঠিক ডায়েটের সঙ্গে ওষুধও খেতে হবে।