শহরে শীতের স্থায়িত্ব মাত্র ২ মাস। আর তাই বছরভর শীতের প্রতীক্ষায় থাকেন সকলেই। শীত মানেই শহর জুড়ে মেলা আর উৎসব। সঙ্গে থাকে দেদার খাওয়া দাওয়াও। এছাড়াও পার্টি থেকে পিকনিক- সেরা সময় কিন্তু এই শীতকাল। তবে অই শাতেই বাড়ে নানা রকম শারীরিক সমস্যা। জাঁকিয়ে বসে রোগ জীবানুরাও।
যাঁদের টনসিলের সমস্যা রয়েছে, এই শীতে যেমন তাঁরা সমস্যায় পড়েন তেমনই যাঁদের অ্যাজমার সমস্যা রয়েছে তাঁদের জন্যও কিন্তু শীতকাল বেশ ভয়ের। কারণ এই সময় যদি তাঁরা সাবধানে না থাকেন তাহলে সমস্যা আরও জটিল হয়। এছাড়াও কোভিডের প্রকোপ আবারও বাড়তে শুরু করেছে। কোভিডের অন্যতম উপসর্গ হল শ্বাসকষ্ট। আর তাই এই সময় যাঁদের শ্বাসকষ্টের সমস্যা রয়েছে তাঁদের কিন্তু নিয়ম মেনে চলতেই হবে। কোনও ভাবেই যেন বুকে ঠান্ডা না বসে যায় সেদিকে খেয়াল রাখুন।
অ্যাজমার সমস্যা আদতে কী
অ্যাজমা বা হাঁপানি হল এমন একটি অবস্থা যেখানে ফুসফুসে বাতাস সরবরাহকারী শ্বাসনালী সরু হয়ে যায়। সেই সঙ্গে ফুলে যায়। এবার শ্বাস গ্রহণ করলে ধুলোবালি-পরাগ-রোঁয়া সব কিছু সেই শ্বাসনালীতে জমা হয়। এর ফলে শ্বাসনালী গুলো আরও বেশি ফুলে যায়। অতিরিক্ত শ্লেষ্মাও জমে। আর সেই সঙ্গে চারপাশের পেশি শক্ত হয়ে যায়। এর ফলে শ্বাস নিতে অসুবিধে হয়। বুকে টান ধরে। অনেকক্ষেত্রে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে অক্সিজেন সাপোর্ট দিতে হয় রোগীকে।
তবে যাঁদের হাঁপানির সমস্যা রয়েছে তাঁদের সব সময় ইনহেলার ব্যবহারের পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। এতে শ্বাসনালী পরিষ্কার থাকে। শ্বাস নেওয়ার ক্ষেত্রে কোনও অসুবিধা হয় না। নিয়মিত ভেপার নিলেও কিন্তু ভাল কাজ হয়। যাঁদের শ্বাসের কোনও সমস্যা নেই তাঁরাও যদি নিয়মিত ইনহেলার নেন তাহলেও তা শরীরের জন্য ভাল। যাঁদের হাঁপানির সমস্যা রয়েছে তাঁদের কিন্তু ঠান্ডা জল, আইসক্রিম, কোল্ড ড্রিংক, ধূমপান একেবারেই এড়িয়ে চলা উচিত। তবে অ্যামা বা হাঁপানি যদি দীর্ঘস্থায়ী হয়ে যায় তাহলে সেখান থেকে ব্রঙ্কাইটিস, সিওপিডি-এর মত গুরুতর সমস্যা আসে। আর এই কোভিডে যাঁদের ফুসফুসে সমস্যা রয়েছে, হাঁপানি রয়েছে তাঁরাই কিন্তু পরছেন সবচেয়ে বেশি সমস্যায়। সিজন চেঞ্জে বেশি বাড়ে এই অ্যাজমার ( Asthma) সমস্যা।
হাঁপানির লক্ষণ
শ্বাসকষ্ট
হাঁপানির মূল উপসর্গ হল শ্বাসকষ্ট। শ্বাসনালী সংক্রমণ এবং শ্লেষ্মার জেরে সরু হয়ে যায়। এর ফলে ফুসফুসে পর্যাপ্ত অক্সিজেন পৌঁছয় না। আর অকিসিজেন পর্যাপ্ত না গেলেই তখন বুকে টান ধরে। মুখ শুকিয়ে যায়। থাকে মাথা ব্যথাও।
কফ
যাঁদের এই হাঁপানির সমস্যা রয়েছে তাঁদের ক্ষেত্রে কফ বেশি হয়। অল্পেই ঠান্ডা লেগে যাওয়ার সমস্যা থাকে। আর কফ একবার হলে তা চট করে সারতে চারতে চায় না। বুকের মধ্যে বসে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। এছাড়াও কফ গাঢ় হয় এবং কফের রং হয় হলুদ। এর ফলে বুকে ব্যথা থাকে। সেই সঙ্গে পেটের পেশিতেও টান ধরে।
বুকে টান ধরা
শ্বাস নিতে অসুবিধে হলে বুকে টান ধরবেই। কারণ তখন বড় করে শ্বাস নিতে হয়। মুখ খুলে শ্বাস নিতে হয়। আর এর প্রভাব পড়ে বুকে। বুকের পেশির এই এত বেশি সংকোচন-প্রসারণের জন্যই কিন্তু বুকে ব্যথা হয়। ফুসফুসে বাতাস আটকেই এই সমস্যা বেশি হয়।
কাশি
কপের সঙ্গে জোরাল কাশিও থাকে। যাঁদের হাঁপানির সমস্যা রয়েছে তাঁদের কাশিও সহজে সারতে চায় না। প্রায় সারা বছর ধরেই লেগে থাকে। সেই সঙ্গে কাশির একটা অদ্ভুত শব্দ থাকে। আর এই সব কিছু মিলিয়েই বাড়ে সমস্যা। যাঁদের হাঁপানির সমস্যা রয়েছে তাঁদের শরীরে রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা অন্যদের তুলনায় কম অনেকটাই।
আরও পড়ুন: Eye Health: দূষণের প্রভাবে চোখ জ্বালা, জল পড়ছে? মেনে চলতে পারেন এই ছয় সাধারণ নিয়ম, আরাম পাবেন…