পুজো, দিওয়ালি মিটতেই বেড়েছে দূষণ। নিয়মিত ধোঁয়াশা, আবহাওয়া পরিবর্তনই তার উদাহরণ। নিম্নচাপ আর ঘূর্ণবাতের জোড়া ভ্রূকুটিতে শীত এবার এমনিই ব্যাকফুটে। নভেম্বর মাসেও শীত এখনও তেমন ভাবে পড়েনি। তবে সর্দি, কাশি, কফ, চোখ জ্বালা এসবের মত সমস্যা লেগেই রয়েছে। এর অন্যতম কারণ কিন্তু হল দূষণ। কোভিডের পর অফিস- স্কুল ধীরে ধীরে খুলতে শুরু করেছে। অনেকেই এখন প্রতিদিন অফিস যাচ্ছেন। ফলে চুলের যে দফারফা হচ্ছে যা যাঁরা রোজ বেরোচ্ছেন তাঁরা বুঝতেই পারছেন। শীতকালে এমনিই চুল বেশি ঝরে। তার উপর দূষণ তো আছেই। দূষণ বাড়লে মাথাব্যথাও বাড়ে। বায়ু দূষণের অন্যতম উপসর্গ হল চোখ জ্বালা আর চোখে চুলকানি। এছাড়াও চোখে অ্যালার্জি, জ্বালাপোড়া ভাব এসবের নেপথ্যেও রয়েছে কিন্তু বায়ু দূষণ।
ধোঁয়াশার কারণে চোখ ঘোলা হয়ে যাওয়া, চোখ দিয়ে জল পড়া, লাল ভাব এসব খুবই সাধারণ। কিন্তু নিয়মিত এই জ্বালা-চুলকানি থাকলে কিন্তু দৃষ্টিশক্তি ঝাপসা হয়ে যেতে পারে। আর তাই বাইরে বেরোলে প্রত্যেকেরই চশমা ব্যবহার করা উচিত। যাঁদের চশমা নেই তাঁদেরও কিন্তু পাওয়ার লেস চশমা পরা উচিত। যাতে ধুলো-বালি এবং দূষণ থেকে চোখকে বাঁচিয়ে রাখা যায়। চোখ আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। আর তাই মুখ-শরীরের যত্ন নেওয়ার পাশাপাশি কিন্তু চোখেরও যত্ন নিতে হবে। চোখের উপর অতিরিক্ত চাপ পড়লে মাথা ব্যথাও করে। চোখ ভাল রাখতে হলে যে সব নিয়ম অবশ্যই মেনে চলবেন-
স্ক্রিন টাইম কমাতে হবে- কাজের প্রয়োজনে প্রতিদিন অনেককেই ১০ ঘন্টার মতো ল্যাপটপ-কম্পিউটারের সামনে কাটাতে হয়। এতক্ষণ ল্যাপটপের সামনে কাটানো চোখের জন্য কিন্তু মোটেও ভাল নয়। এছাড়াও ল্যাপটপের পাশাপাশি চোখ রাখতে হয় মোবাইলেও। আবার অনেকের রাত জেগে গে্ম খেলার অভ্যাস। কেউ বা মজে থাকে ওয়েব সিরিজে। আর তাই প্রথমেই এই স্ক্রিন টাইম কমাতে হবে। চোখেরও বিশ্রামের প্রয়োজন। অন্তত ৬ থেকে ৮ ঘন্টা চোখকে সম্পূর্ণ বিশ্রাম দিন।
কল খুলে চোখে জলের ছিটে দিন- এই অব্যেসের কথা বরাবরই বলে আসেন বাড়ির বড়রা। চোখে সমস্যা হলে কিংবা চুলকোলে সরাসরি কল খুলে চোখে জলের ছিটে দিন। এতে ধুলো-বালি-ময়লা যেমন বেরিয়ে য়ায়, তেমনই চোখেও আরাম হয়। এছাড়াও যাঁদের অ্যালার্জির সমস্যা রয়েছে কিংবা অনেকক্ষণ টানা বসে ল্যাপটপের সামনে কাজ করছেন তাঁদেরও মাঝে মধ্যে উঠে চোখে জলের ছিটে দিতে পারলে ভাল।
জল খান বেশি করে- শীতকালে শরীর এমনিতেই শুষ্ক থাকে। দূষণের প্রভাবে আরও বেশি শরীর শুকিয়ে যায়। আর তাই নিয়ম করে জল খান অবশ্যই। রোজ দুপুরে একটা করে ডাবের জল খেতে পারলে আরও ভাল। জল বেশি খেলে শরীর থেকে ক্ষতিকর টক্সিন বেরিয়ে যায়।
স্বাস্থ্যকর খাবার খান- জল, স্যুপ, গরম চা- ইত্যাদি কিন্তু শরীরকে ভেতর থেকে পরিষ্কার রাখে। দূষণের কারণে নাক বন্ধ হয়ে গেলে তা পরিষ্কার রাখতেও সাহায্য করে এই ডায়েট। প্রতিদিনের ডায়েটে গাজর, ডিম, কমলালেবু, ক্যাপসিকাম, বিভিন্ন রকমের শাক, ফল অবশ্যই রাখবেন। এই সব কটি খাবারই দূষণের মোকাবিলায় সাহায্য করে।
আই মেকআপ এড়িয়ে চলুন- চোখে কাজল, আই লাইনার পরতে সকলেই ভালবাসেন। কিন্তু সেই মেকআপ সব সময় ঠিক করে তোলাও জরুরি। চোখে কাজল পরে যদি না তা ঠিক করে তুলতে পারেন তাহলে কিন্তু নানা রকম সমস্যা হয়। এছাড়াও অতিরিক্ত আই মেকআপও চোখের জন্য ভাল নয়। যতটা সম্ভব কম আইশ্যাডো, লাইনার, কাজল এসব ব্যবহার করুন।
আরও পড়ুন: Obesity: আতঙ্কের নাম ওবেসিটি, বাড়তে থাকা এই সমস্যাই বাড়িয়ে দিচ্ছে অসুখের ঝুঁকি: সমীক্ষা