Diabetes Care: নীরব ঘাতকের মতো থাবা বসাচ্ছে ডায়াবেটিস (Diabetes)। বিশ্ব জুড়ে বেড়েই চলেছে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। আর খুব বেশি সময় বাকি নেই, যখন এই রোগ মহামারিতে পরিণত হবে। অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাত্রা, শরীরচর্চা একেবারেই না করা, বেশি পরিমাণ কার্বোহাইড্রেট-সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া বাড়িয়ে দিচ্ছে ডায়াবিটিসের ঝুঁকি। ডায়াবিটিসের ক্ষেত্রে এখন আর কোনও বয়স নেই। ৮ থেকে ৮০ সকলেই এখন আক্রান্ত হচ্ছেন ডায়াবিটিসে। যদি ছোটরা বেশির ভাগ টাইপ-১ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়, যেখানে শরীর নিজে থেকে ইনসুলিন উৎপাদন তৈরি করতে পারে না। অন্য দিকে টাইপ-২ ডায়াবেটিসের জন্য দায়ী অস্বাস্থ্যকর জীবনধারা।
ডায়াবিটিস হল এমন একটি অবস্থা যখন অগ্ন্যাশয় থেকে ইনসুলিন উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায় আবার কখনও কম হরমোন তৈরি হয়। এমনও অনেকে আছেন, যাঁদের খুব কম বয়স থেকেই ইনসুলিন নিতে হয়। বেশিরভাগের ক্ষেত্রে খাদ্যাভ্যাসই হল ডায়াবিটিসের নেপথ্য কারণ। অনেকের ক্ষেত্রে দেখা যায় খাবার খাওয়ার পরই রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ করে খুব বেড়ে গিয়েছে। এই অবস্থাকে বলে আফটার মিল হাইপারগ্লাইসেমিয়া। চিন্তার কারণ থাকলেও এই সমস্যাকে আপনি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন। এর জন্য মেনে চলতে হবে বেশ কয়েকটি টিপস।
১) পরিকল্পনা করে খাবার খান: মিষ্টি, ময়দার তৈরি পাউরুটি এবং অন্যান্য খাবার সীমিত পরিমাণে খান। অনেক সময় এই খাবারগুলি রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি করতে পারে। তাই, কী খাবার খাবেন তা আগে থেকে পরিকল্পনা করে রাখলে, রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করতে পারে।
২) অল্প পরিমাণে খাবার খান: একবারে বেশি পরিমাণ খাবার খাওয়ার পরিবর্তে অল্প পরিমাণে খাবার খাওয়া খান। প্রয়োজন কয়েক ঘণ্টা অন্তর অন্তর খাবার খান। এটি আপনাকে আকস্মিক সুগার লেভেল ওঠানামা রোধ করতে সাহায্য করবে। এছাড়াও গবেষণায় দেখা গেছে যে, দিনে তিন বার বড় খাবার খাওয়ার পরিবর্তে, বারে বারে অল্প পরিমাণে খাবার খেলে, রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে।
৩) জীবন থেকে চিনি বাদ দিন: সুক্রোজ এবং হাই-ফ্রুক্টোজ কর্ন সিরাপ শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এগুলি শুধু শরীরে ক্যালোরির পরিমাণ বাড়ায়। শরীর এগুলোকে খুব সহজেই ভেঙে ফেলে, যার ফলে রক্তে শর্করার পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। গবেষণায় দেখা গেছে যে, শর্করা গ্রহণ ইনসুলিন নিঃসরণে বাধা দেয়। ফলে শরীর রক্তে শর্করার মাত্রা ঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয়।
৪) ফাইবার-সমৃদ্ধ খাবার বেশি করে খান: ফাইবার-সমৃদ্ধ খাবার, রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে দুর্দান্ত কার্যকর। বিশেষ করে দ্রবণীয় ফাইবার রক্তে শর্করার স্পাইক নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। এটি জলে দ্রবীভূত হয়ে জেলের মতো পদার্থ তৈরি করে, যা অন্ত্রে কার্বোহাইড্রেট শোষণকে ধীর করতে সহায়তা করে। এর জন্য আপনি ওটমিল, বাদাম, বিভিন্ন শাকসবজি, আপেল, কমলালেবু, ব্লুবেরি ইত্যাদি খেতে পারেন।
৫) বেশি করে জল পান করুন: পর্যাপ্ত জল পান না করলে শরীরে একাধিক সমস্যা দেখা দেয়। এর মধ্যে রয়েছে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যাওয়াও। শরীর ডিহাইড্রেট হলে, শরীরে ভ্যাসোপ্রেসিন নামক একটি হরমোন উৎপাদন হয়। এটি কিডনির তরল ধরে রাখতে এবং প্রস্রাবের মাধ্যমে শরীর থেকে অতিরিক্ত চিনি বের করে দিতে বাধা দেয়। তাছাড়া, লিভারও রক্তে অতিরিক্ত শর্করা সরবরাহ করে। যার ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা অনেকটাই বেড়ে যেতে পারে। তাই পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান করুন এবং সুস্থ থাকুন।
আরও পড়ুন: ডায়াবেটিস আর ব্লাড প্রেসার একসঙ্গে থাবা বসিয়েছে? এই ৩ গাছের পাতার গুণে মিলবে রেহাই